০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন দাবিতে উত্তরের ১২ উপজেলায় মানববন্ধন, সমাবেশ

প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি
-


প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত তিস্তা খনন ও মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু এবং তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তিসহ ছয় দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন করেছে তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ। এ সময় দাবি আদায় না হলে হরতালসহ কঠোর কর্মসূচি দেয়ার ঘোষণা দেয় সংগঠনটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার তিস্তা অববাহিকার নীলফামারীর ডিমলা, জলঢাকা, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী, সদর, রংপুরের গংগাচড়া, কাউনিয়া, পীরগাছা, কুড়িগ্রামের উলিপুর, রাজারহাট এবং গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের উপজেলা পরিষদের সামনে একযোগে এই কর্মসূচি পালন করে তারা।

রংপুরের কাউনিয়ায় সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী এবং লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় সাধারণ সম্পাদক শফিয়াট রহমান বক্তব্য রাখেন । বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলা মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ভাঙ্গন, বন্যা, খরায় ক্ষতবিক্ষত তিস্তা অববাহিকার দুই কোটি মানুষের জীবন এখন বিপন্নের পথে। চীন ভারত নয় নিজস্ব অর্থায়নে আসন্ন বাজেটে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানান তারা। অংশগ্রহণকারীরা বলেন, তিস্তা খননের মাধ্যমে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা না হলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে এই অঞ্চলের প্রাণপ্রকৃতি জীবন-জীবিকা ধ্বংস হয়ে যাবে। খনন কাজ শুরু না হলে হরতালসহ কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন বক্তারা। এ সময়ে তিস্তার চরাঞ্চলে খাস জমি বরাদ্দের নামে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন প্রজেক্ট বন্ধ করার দাবিও জানান তারা।
কর্মসূচিতে তিস্তাপাড়ের শত শত মানুষ অংশ নেয়। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জনতা ১২ উপজেলার নির্বাহী অফিসারের হাতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন। এ সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, রাজনীতিকসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।

কাউনিয়া উপজেলার কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানি, কেন্দ্রীয় সদস্য মোস্তাফিজার রহমান, আশিকুর রহমান, গনেশ শর্মা, হাতিবান্ধায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক শফিয়ার রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা ওসমান গনি, অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান, আদিতমারীতে ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা দীলিপ কুমার, অ্যাডভোকেট মঞ্জু, সদরে ছিলেন স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য গেরিলা লিডার শফিকুল ইসলাম কানু, কেন্দ্রীয় নেতা চিত্তরঞ্জন বর্মন, কালিগঞ্জে কেন্দ্রীয় নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম, অধ্যক্ষ ড. মনওয়ারুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম হেলাল, পীরগাছায় স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় নেতা বাবুল আকতার, রফিকুল ইসলাম, গংগাচড়ায় স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ছাদেকুল ইসলাম, মাহমুদ আলম, আশরাফুল ইসলাম, আশরাফুজ্জামান, রাজারহাটে স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য বখতিয়ার হোসেন শিশির, সাজু সরকার, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস ছালাম, মোশারফ হোসেন, জাহিদুল হক, উলিপুরে স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য মশিয়ার রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা মোশাররফ মুন্সি, অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান, নীলফামারীর ডিমলায় স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মোজাফ্ফর হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক নুরমহাম্মদ খান, সোহেল হোসেন, হাফিজার রহমান, গোলাম মোস্তফা, জলঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতা গোলাম পাশা এলিস ও মাইদুল ইসলাম, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে কেন্দ্রীয় নেতা সাজু মুন্সি, হাবিবুর রহমান বক্তব্য রাখেন।

এ সময় বক্তারা তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন, তিস্তা চুক্তি সই ও জলাধার নির্মাণ; তিস্তা নদীর শাখা-প্রশাখা ও উপশাখাগুলোর সাথে তিস্তা নদীর পূর্বেকার সংযোগ স্থাপন, খনন, অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও নৌ চলাচল আবার চালু করা, মহাপরিকল্পনায় তিস্তা চরের ও নদী তীরবর্তী কৃষকের স্বার্থ সুরক্ষায় কৃষি সমবায়, ফুড প্রসেসিংসহ কৃষিভিত্তিক শিল্প কলকারখানা গড়ে তোলা, ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের স্বার্থ সংরক্ষণ, নদী ভাঙনের শিকার ভূমিহীন, গৃহহীন ও মৎস্যজীবীসহ উদ্বাস্তু মানুষের পুনর্বাসন, ভূমিদস্যু ও করপোরেট কোম্পানির হাত থেকে দখলকৃত তিস্তার শাখা ও উপনদী দখলমুক্ত করা, নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আাইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তিস্তা পাড়ের মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার দাবি জানান।


আরো সংবাদ



premium cement