০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


রোমানিয়ায় শ্রমিক প্রেরণ কাজ শুরুর আগেই নিতে হবে দূতাবাসের সত্যায়ন

-


‘রোমানিয়া বা পূর্ব ইউরোপের দেশে নতুন করে কর্মী প্রেরণের কাজ শুরু করতে গেলে আগেই বাংলাদেশ দূতাবাসের সত্যায়ন নিতে হবে। এটি ছাড়া কাজ শুরু করা যাবে না।’ উদ্দেশ্য হলো একটাই, লোকজন এখানে এসে যেন কাজের নিশ্চয়তা পায়। আমরাও আগের কিছু প্রবলেম সমাধান করে সম্ভাবনাময় শ্রমবাজারকে গতিশীল করার চেষ্টা করছি। আশা করছি শিগগির এই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য উল্লেখ করে একটি সার্কুলার পাঠাতে পারব। গতকাল মঙ্গলবার (বাংলাদেশ সময়) বিকেলে রোমানিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিজের পরিচয় না প্রকাশের শর্তে শ্রমবাজারের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে বলতে গিয়ে নয়া দিগন্তকে এসব কথা বলেন।
বর্তমানে রোমানিয়াগামী সাত-আট হাজার শ্রমিক বাংলাদেশেই ভিসার অপেক্ষায় রয়েছে বলে এজেন্সি মালিকদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদের অনেকেই ঢাকার ফকিরাপুল, মতিঝিলসহ বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সি ও তাদের মধ্যস্বত্তভোগীদের কাছে পাসপোর্ট ও এডভান্স টাকা জমা দিয়ে পূর্ব ইউরোপের দেশে পাড়ি জমানোর সময় গুণছেন। এরই মধ্যে যাদের নামে চাহিদাপত্র এসেছে তাদের অনেকে ভিসার জন্য দিল্লির রোমানিয়া দূতাবাসে উপস্থিত হলে সেখান থেকে নানা কারণ দেখিয়ে ভিসা রিজেক্ট করে দেয়া হচ্ছে। এতে শুধু রিক্রুটিং এজেন্সি নয়, সুদে ধারদেনা করে বিদেশ যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা শত শত কর্মী ও তাদের পরিবারও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
তবে রোমানিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত দাউদ আলীর সাথে শ্রমবাজারের সর্বশেষ অবস্থা জানতে যোগাযোগ করা হলে তিনি নয়া দিগন্তকে আশার বাণী শুনিয়ে বলেন, এই মুহূর্তে শ্রমবাজার পজিটিভ না হলেও নেগেটিভ না। এখানে বাংলাদেশ থেকে লোক এসে থাকছে না-কি অন্য দেশে চলে যাচ্ছে সেগুলো (তারা) রোমানিয়া সরকার অবজারভ করছে। এক প্রশ্নের জবাবে দাউদ আলী নয়া দিগন্তকে বলেন, সত্যায়ন ছাড়া রোমানিয়ায় কর্মী প্রেরণের কাজ করতে পারবে না সেটি এখনই আমার দূতাবাস থেকে বলার সময় আসেনি।

রোমানিয়ার শ্রবাজার কি গতিশীল হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত নয়া দিগন্তকে বলেন, এটা নিয়ে আমাদের মিনিস্ট্রি তথা সরকার কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার যারা আছে, তাদের সাথে এরই মধ্যে আমরা মিটিং করেছি, কিভাবে এই শ্রমবাজারকে আরো গতিশীল করা যায়, যারা পালিয়ে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া যায় বা কি কি পদক্ষেপ নিলে আরো পালানোর সংখ্যা কমানো যায় এগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমরা বলতে শুধু দূতাবাস নয়, আমাদের সরকারকে বোঝাচ্ছি আমি।
এর আগে রোমানিয়ার শ্রমবাজার খুঁজে বের করা এবং খোলার দাবিদার রিক্রুটিং এজেন্সি এশিয়া কন্টিনেন্টাল গ্রুপ (বিডি) লিমিটেডের কর্ণধার লোকমান শাহের সাথে গত সোমবার যোগাযোগ করা হলে তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, রোমানিয়া তথা সার্বিয়া, মন্টনিগ্রো, কাজাখাস্তানসহ পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে প্রচুর শ্রমিকের চাহিদা রয়েছে। এই শ্রমবাজারগুলোকে আমাদের টিকিয়ে রাখতে হবে।
দিল্লির রোমানিয়ার দূতাবাস কর্মীদের ভিসা দিচ্ছে না ঠিকমতো- এমন প্রশ্নের জবাবে লোকমান শাহ বলেন, আগে কড়াকড়ি ছিল। তবে আগের থেকে কর্মীদের ভিসা দেয়ার ক্ষেত্রে এখন কিছুটা পজিটিভ হয়েছে তারা। তিনি বলেন, শ্রমবাজারে স্বচ্ছতা আনাসব বেশ কিছুু বিষয় নিয়ে দিল্লিতে বেসরকারিভাবে আগামী সপ্তাহে মিটিং হওয়ার কথা রয়েছে। ওই মিটিংয়ে আমারও থাকার কথা রয়েছে যোগ করেন তিনি।
এর আগে গত রাতে রোমানিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে গোলাম রাব্বী ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান হাজী মো: আকতার হোসেন নয়া দিগন্তকে বলেন, রোমানিয়ার শ্রমবাজার তো ভালো। খারাপ তো করি আমরা। এখন আমাদের দূতাবাস যদি সঠিকওয়েতে তথ্য তালাশ করে তাইলে ভিসা এনে সঠিকভাবে লোক পাঠামু। যারা গরিব শ্রমিক আছে তারা যাইব, কাজ করব, টাকা আনব। আমি কিন্তু এটার পক্ষে। জুলুমের পক্ষে আমি না।


আরো সংবাদ



premium cement