০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


সঙ্কট থেকে উত্তরণে মাঠে নামতে হবে

স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি সেমিনারে বক্তারা
-

‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি : প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, ক্ষমতাসীনরা অনৈতিক চরিত্রের হলে সমাজ বেশি খারাপ হয়। বিপর্যয় নেমে আসে। এ জন্য রাষ্ট্রের ক্ষমতা সত্যবাদী লোকদের হাতে থাকতে হবে। দেশের নেতা দেশেরই হতে হবে। তার রিমোট কন্ট্রোল বিদেশে থাকলে চলবে না। বক্তারা বলেন, দেশের বর্তমান সঙ্কট থেকে উত্তরণে আকাশ থেকে কেউ নেমে আসবে না, নিজেদেরই ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামতে হবে।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘সম্ভাবনার বাংলাদেশ’ আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। নয়া দিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের প্রফেসর আবদুল লতিফ মাসুম। বাংলাদেশ ইসলামী ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ড. আবদুল মান্নানের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেনÑ ঢাকা বার অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম কামাল উদ্দিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা: আতিয়ার রহমান, সমাজসেবক ইঞ্জিনিয়ার শেখ আল আমিন, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সহসভাপতি ড. গোলাম রহমান, সমাজ উন্নয়ন কর্মী অ্যাডভোকেট ড. মো: হেলাল উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো: পারভেজ হোসেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক মো: শহিদুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ গাযী আনোয়ারুল হক প্রমুখ।
সৈয়দ মোহাম্মদ ইররাহিম বলেন, বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের সংজ্ঞার যে চিত্রায়ন করছে তা আংশিকভাবে বিতর্কিত ও অগ্রহণযোগ্য। তিনি বলেন, আমরা ইউটিউব, বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল, তাবলিগের মাধ্যমে বক্তাদের মানুষকে ভালো পথে আসার কথা বলতে শুনি। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছরেও সে পরিবর্তন দেখছি না কেন? কারণ সঠিক জায়গা থেকে আহ্বান জানানো হচ্ছে না। সৈয়দ ইবরাহিম বলেন, মানুষ মূলত যার কাছে ক্ষমতা থাকে তার কথা শোনে। এ জন্য যারা ক্ষমতায় থাকেন তারা যদি নিজেরা সৎ হন এবং জনগণকে সৎ হওয়ার আহ্বান করেন তখন মানুষ সৎ হতে বাধ্য হবে। এ জন্য ক্ষমতাসীনদের দুর্নীতিমুক্ত করতে পারলে অথবা ভালো রাজনীতিবিদদের দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিতে পারলেই কেবল নাগরিকদের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের যে স্বপ্ন ছিল তা বাস্তবে রূপ পাবে।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের প্রকৃত শাসনব্যবস্থা নির্মিত হয়। দেশের বর্তমান শাসকগোষ্ঠী যখন বুঝতে পেরেছে জনগণের রায়ের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকার কোনো সম্ভাবনা নেই তখনই তারা নির্বাচন প্রকৌশলের মাধ্যমে নির্বাচনব্যবস্থাকে তামাশায় পরিণত করেছে। এভাবে ভোটারবিহীন নির্বাচন নিশীথ রাতের নির্বাচন গোটা জাতি প্রত্যক্ষ করেছে। গ্রাম-গঞ্জে স্থানীয় সরকার নির্বাচনও দলীয় মোড়কে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, আমি জীবনে দু’বার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। একবার ২০০৮ সালে দিনের বেলায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনে। আরেকবার ২০১৮ সালে রাতের বেলার নির্বাচনে। জেনারেল ইবরাহিম বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা আজ ম্লান হয়ে পড়েছে। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য আকাশ থেকে কেউ নেমে আসবে না। দেশের জনগণকেই ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নেমে এসে তাদের দাবি প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে আলমগীর মহিউদ্দিন বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে আমাদের অনেক কিছুই অর্জন করার সুযোগ ছিল; কিন্তু অসৎ ও দুর্নীতিবাজ লোকেরা আমাদের সে সম্ভাবনা ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এসব ফাঁকফোকর দূর করতে পারলে দেশ এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলেই আজ আমরা কথা বলতে পারছি। চলমান সময়ে শোষণমুক্ত সমৃদ্ধ জনগণের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত। সেই সাথে দেশ-জাতি-রাষ্ট্রের জন্য অন্য যারা একই লক্ষ্যে কাজ করছেন তাদের সবাইকে নিয়ে সমবেত চেষ্টা তথা ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। জাতীয় ঐক্য ছাড়া পথ নেই। সে লক্ষ্যে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
চৌধুরী মাহমুদ হাসান বলেন, শক্তিমানদের সাথে সত্যের সংমিশ্রণ না হলে সমাজে দুর্নীতিসহ সব অনাচার চেপে বসে। সব অশান্তি দূর করতে হলে শক্তিমানদের সাথে সত্যের মিলন করাতে হবে। আর ক্ষমতা থাকতে হবে ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তিদের হাতে। তাহলেই সমাজে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় থাকবে। তিনি আরো বলেন, জ্ঞানী লোকেরা অনৈতিক হলে সমাজ বেশি খারাপ হয়। এ জন্য তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে পরকালীন হিসাবের ভয় তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
মূল প্রবন্ধে প্রফেসর আবদুল লতিফ মাসুম বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে মধ্যম আয়ের উন্নয়নশীল দেশ হলেও সে মাত্রায় রাজনৈতিক উন্নয়ন হয়নি; বরং অবনতি ঘটেছে। রাজনৈতিক বিরোধ বিবাদে পরিণত হয়েছে। নির্বাচনব্যবস্থাও অকার্যকর হয়ে পড়েছে। জনগণের মৌলিক অধিকার ব্যাহত হয়েছে। দুর্নীতিতে দেশ সয়লাব হয়ে গেছে। সুশাসন পরিত্যক্ত হয়েছে। সংসদীয় গণতন্ত্রের অনিবার্য বিরোধী দল কাক্সিক্ষত ভূমিকা পালন করতে পারেনি। তিনি আরো বলেন, এ ব্যর্থতার দায় কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দলের নয়, এ ব্যর্থতা গোটা জাতির। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য গোটা জাতিকেই উদ্যোগী হতে হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
ভুক্তভোগী নারী ও তার পাশে দাঁড়ানো ব্যক্তিদের হয়রানির প্রতিবাদ বাড্ডায় নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার কথিত স্বামী পলাতক গ্রেফতারকৃতদের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করবে খতমে নবুওয়ত ঝিনাইদহ-১ আসনে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নায়েব আলী জাতীয় গ্রিডে ত্রু‌টি, সিলেট বিভাগে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য ঢাবিতে নিয়মিত ২০ আসন বরাদ্দ রেকর্ড গড়ে সাদিক খান আবারো লন্ডনের মেয়র আগামী ২ মাসের মধ্যে ভাঙ্গা-খুলনা-যশোর পর্যন্ত ট্রেন চালু হবে : জিল্লুল হাকিম ফতুল্লায় ব্যবসায়ী অপহরণ, গ্রেফতার ৭ তাপদাহের কারণে গোসল করতে গিয়ে কলেজছাত্রের মৃত্যু সুন্দরবনে আগুন নেভেনি, রাতে আরো ছড়িয়ে পড়তে পারে

সকল