২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
মৌলভীবাজারে প্রতœতত্ত্ব অনুসন্ধান

খোঁজ পায়নি চন্দ্রপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্তিত্ব

-

তিন দিন অনুসন্ধানের পর মৌলভীবাজারের প্রাচীন চন্দ্রপুর বিশ^বিদ্যালয়ের স্থান অনুসন্ধানের কার্যক্রম শেষ হয়েছে। বিশ^বিদ্যালয়ের স্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি তারা। তবে গতকাল সোমবার রাজনগরে উদ্ধারকৃত পশ্চিমভাগ তাম্রলিপি উদঘাটন স্থলের সন্ধান পেয়েছে প্রতœতত্ত্ব প্রতিনিধি দল।
অনুসন্ধানের শেষ দিনে রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের পশ্চিমভাগ গ্রামের পরেশ পালের বাড়ি থেকে তাম্রলিপিটি উদ্ধারের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে প্রতিনিধি দল। এ দিকে সদর ইউনিয়নের কমলা রানীর দীঘির হাজার বছরের পুরনো ঘাটের সন্ধান ও ইট উদ্ধার এবং বেশ কিছু সমাধির সন্ধান পেয়েছে তারা।
জানা যায়, মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার উত্তর সাগরনাল গ্রামে প্রাচীন চন্দ্রপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান রয়েছে। বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়ায় এ ধরনের সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের চিঠির ভিত্তিতে প্রতœতত্ত্ব অধিদফতরের চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের প্রতিনিধি দল গত ২৫ জুলাই জেলার ভাটেরাটিলা, জুড়ীর সাগরনাল এবং রাজনগরের পশ্চিমভাগ গ্রামে অনুসন্ধান ও সার্ভে করে। অনুসন্ধানী টিম প্রাচীন চন্দ্রপুর বিশ^বিদ্যালয়ের অবস্থান সাগরনাল কিংবা জেলার অন্য কোথাও নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে কুলাউড়ার কলিমাবাদ গ্রামের ভাটেরা টিলা ও রাজনগর উপজেলার পশ্চিমভাগ গ্রামে আদি ঐতিহাসিক নির্দশন রয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে নিশ্চিত হয়েছেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। এ সময় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ভাটেরাটিলা এবং পশ্চিমভাগ গ্রাম থেকে মাটির পাতিলের কিছু পুরনো ভাঙা অংশ সংগ্রহ করেছেন। কুলাউড়ার ভাটেরাটিলা এবং রাজনগরের খনন কার্যক্রম পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক নির্দশন পাওয়া যেতে পারে বলে প্রতিনিধি দলের প্রধান ড. আতাউর রহমান আশা প্রকাশ করেছেন। তিনি আরো আশা প্রকাশ করেন আগামী শুষ্ক মৌসুমে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে এ দু’টি স্থানে খনন কার্যক্রম চালানো হবে। রাজনগরের পশ্চিমভাগ গ্রামের বৃদ্ধ পরেশ পাল অস্পষ্ট কণ্ঠে জানান ’৬০-এর দশকের প্রথম দিকে পুকুর খননের সময় সংস্কৃত ভাষায় লেখা পশ্চিমভাগ শিলালিপিটি উদ্ধার করা হয়। পরে সিলেট থেকে প্রকাশিত যুগভেরী পত্রিকার সম্পাদক আমিনূর রশীদ চৌধুরী (বর্তমানে মরহুম) শিলালিপিটি সেখান থেকে সংগ্রহ করে তৎকালীন জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এরপর শিলালিপিটি জাতীয় জাদুঘরে রাখা হয়।
এ দিকে রাজনগর সদর ইউনিয়নের গড়গাঁও গ্রামে শাহ কুতুব (রহ:) এর মাজারের পাশে রাজা সুবিদ নারায়ণ চৌধুরীর খনন করা কমলা রানীর দীঘির পুরনো ঘাটের কিছু অংশ ইটের সন্ধান পেয়েছে। অন্য দিকে ওই দীঘির পশ্চিম ও দক্ষিণপাড়ে একাধিক কবর রয়েছে। তার মধ্যে বিশেষ শৌকর্যপূর্ণ দু’টি কবরের সন্ধান পেয়েছেন অনুসন্ধানী দলের সদস্যরা। এ কবর দু’টি রাজ পরিবারের কিছু সদস্যের সমাধিস্থল হতে পারে বলে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ধারণা করছেন। কমলা রানীর দীঘিটি দেড়শতাধিক বিঘা ভূমির ওপর প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। এই দীঘির আদি নিদর্শন আবিষ্কার করে একটি পর্যটন স্পট এবং রাজপরিবারের অতীত ঐতিহ্য সংরক্ষণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement