২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসে নবজাতকের ঝুঁকি

-

জন্মের পরই যেকোনো ডায়াবেটিক মায়ের নিবিড় পরিচর্যা করা উচিত। কিন্তু আমাদের দেশে সবার ক্ষেত্রে এটি সম্ভব না হলেও একটু নির্দিষ্ট সময়ে সময়ে রক্তের গ্লুকোজ পরিমাপে কোনোভাবেই ভুল হওয়া উচিত নয়

গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের ডায়াবেটিস থাকলে এটি যেমন তার নিজের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ, একইভাবে তার গর্ভের সন্তানেরও নানা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। ঠিকমতো গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখতে ব্যর্থ হলে মায়ের গর্ভের সন্তান নষ্ট হওয়া, গর্ভাশয়ে অতিরিক্ত পানি আসা, প্রাক-এক্লাম্পসিয়া, কিডনিতে পুঁজ জমা, উচ্চ রক্তচাপ প্রভৃতি সমস্যা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে গর্ভের শিশুর মৃত্যু আশঙ্কা বেড়ে যায় কয়েক গুণ, কিংবা জন্মগ্রহণ করতে পারে বিভিন্ন বিকলাঙ্গতা নিয়ে।

আবার আমরা যারা শিশু চিকিৎসক, একটু বড় কিংবা বেশি ওজনের সদ্যভূমিষ্ঠ শিশু দেখলেই মায়ের ডায়াবেটিস আছে কি না সন্দেহ করি। যদিও কোনো শিশুর ওজন কম বা বেশি বলার আগে নির্দিষ্ট কিছু মাত্রা অনুসরণ করা লাগে। অবশ্য স্বাভাবিক বা কম ওজন নিয়েও এসব শিশু জন্মগ্রহণ করতে পারে। এদের মুখ একটু ফোলা ধরনের, আর চামড়া একটু পুরু থাকতে পারে। কোনো কোনো শিশু খুব কম্পমান, অস্থির কিংবা ছটফটে হয়, আবার নেতানো, দুর্বল শিশুও হতে পারে।

প্রথম দুয়েকদিন ডায়াবেটিক মায়ের শিশুরা শ্বাসকষ্ট নিয়েও আসতে পারে। রক্তের গ্লুকোজ, ক্যালসিয়াম কমে যাওয়া, সারা শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া, রক্তের কোষাধিক্য, হার্ট ফেইলিওর, মস্তিষ্কে পানি জমা এসবও থাকতে পারে। আমরা সাধারণত একটি কথা বলে থাকি, ডায়াবেটিক মায়ের শিশুর মাথা থেকে পা পর্যন্ত যেকোনো অঙ্গে ত্রুটি থাকতে পারে। মাথা বড় থাকার জন্য জন্মের সময় আঘাতজনিত সমস্যাও এর সাথে যুক্ত হয়। হৃৎপিণ্ডে সমস্যার মধ্যে ছিদ্র, ভাল্বে¦ ত্রুটি কিংবা ভেতরের পর্দা পুরু কিংবা স্থানান্তর হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা পাওয়া যায়। এই শিশুদের জন্ডিসের মাত্রা আশঙ্কাজনক মাত্রায় বেড়ে যায়।
কিডনির রক্তের নালী সঙ্কুুচিত হয় এবং মূত্রের সাথে রক্তও দেখা যায়। কিডনিতে পানিও জমতে পারে। এমনকি কিডনি নাও থাকতে পারে। এ ছাড়া মেরুদণ্ডে অপূর্ণ বৃদ্ধি হয়ে প্রচণ্ড সমস্যা হতে পারে। একটি স্নায়ুনালী আমাদের মস্তিষ্কের বৃদ্ধি এবং পরিপূর্ণতায় ভূমিকা রাখে। এই শিশুদের স্নায়ুনালী বিকাশে প্রচণ্ড বিচ্যুতি ঘটে, যার পরিণতিতে স্নায়ুতন্ত্রে জীবনঘাতী সমস্যার সৃষ্টি হয়। পরিপাকতন্ত্রে সমস্যার মধ্যে অন্ত্রের বিভিন্ন অংশে অপূর্ণ গঠন, বিলম্বিত গঠন কিংবা আদৌ অনুপস্থিতিও থাকতে পারে।

গর্ভবতী কোনো মায়ের ডায়াবেটিস হলে কিংবা আশঙ্কা থাকলেও তাদের নিয়মিত চেকআপ, গ্লুকোজ নির্দিষ্ট মাত্রায় রাখতে একটু বেশি যতœ নেয়া, বিশেষ কিছু পরীক্ষা করে মা এবং গর্ভের সন্তান দু’জনের পর্যবেক্ষণ খুবই জরুরি। ডায়াবেটিস জনিত জটিলতায় তাদের চোখের রেটিনা, কিডনি এবং হৃৎপিণ্ডের সুস্থতার দিকে নজর দিতে হবে।
জন্মের পরই যেকোনো ডায়াবেটিক মায়ের নিবিড় পরিচর্যা করা উচিত। কিন্তু আমাদের দেশে সবার ক্ষেত্রে এটি সম্ভব না হলেও একটু নির্দিষ্ট সময়ে সময়ে রক্তের গ্লুকোজ পরিমাপে কোনোভাবেই ভুল হওয়া উচিত নয়।
পরবর্তী জীবনে এই শিশুগুলোর ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ ছাড়া স্থূলতাও একটি সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়। তাই কোনোভাবেই গর্ভবতী মায়ের ডায়াবেটিস নিয়ে অবহেলার সুযোগ নেই।
লেখক : শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ, আইসিএমএইচ, মাতুয়াইল, ঢাকা


আরো সংবাদ



premium cement
মঙ্গলবারও বাড়বে তাপমাত্রা, অসহনীয় হবে গরম ইতিহাসের উষ্ণতম এপ্রিল দেখল মিয়ানমার আইসিসির সম্ভাব্য গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে উদ্বিগ্ন ইসরাইলি কর্মকর্তারা নোয়াখালীতে হিট স্ট্রোকে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রের মৃত্যু ভূমি সেক্টরে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর ক্ষেত্র চিহ্নিত করতে ভূমিমন্ত্রীর নির্দেশ বাইপাস সার্জারির জন্য কৃত্রিম রক্তনালী তৈরির চেষ্টা হামাসকে যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরাইলি প্রস্তাব বিবেচনার আহ্বান যুক্তরাজ্যের প্রথমবারের মতো সিরি-এ ম্যাচে ছিলেন সব নারী রেফারি ফেনীতে তাপদাহে তৃষ্ণা মেটাতে শিবিরের পানি-স্যালাইন বিতরণ ২৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বাংলাদেশে যাদের ইলমে দীন অর্জনের সৌভাগ্য হয়েছে, তারাই প্রকৃত ধনী

সকল