২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


স্বর্ণের দোকানের কর্মচারী থেকে জাতীয় বীর

মেহেদী হাসান - ছবি : সংগ্রহ

পেশায় বাসের কন্ট্রাক্টর মিজানুর রহমান মিন্টুর অভাবের সংসার। স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে সংসার তার। ফলে সংসারের খরচ জোগাতে বাবাকে সাহায্য করতে স্বর্ণের দোকানের কর্মচারীর কাজ নেন তার বড় ছেলে মেহেদী হাসান। কে জানতো এই আংটি মেকারের কাজ থেকে ঘুরে যাবে মেহেদীর জীবনের চাকা।

২০১৫ সালে মামার স্বর্ণের দোকানে আংটি মেকারের কাজ নেয় মেহেদী। তখন যশোরের বেনাপোলে আয়োজিত ফুটবল টুর্নামেন্টে বাজার কমিটির জার্সি গায়ে মাঠে নামে ছেলেটি। তখনই সে নজরে আসে ঢাকা প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের সাবেক ফুটবলার সাব্বির আহমেদ পলাশের। এরপরই এই দোকান কর্মচারী হয়ে গেলে ফুটবলার। পাল্টে গেল তার জীবন। সে ছেলেটি এখন জাতীয় বীর।

বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে মেহেদী এখন সাফের হিরো। অনূর্ধ্ব-১৫ পুরুষ সাফে দক্ষিণ এশিয়ার টাইব্রেকার স্পেশালিস্ট। স্রেফ তার একক নেতৃত্বে এবারের অনূর্ধ্ব-১৫ সাফে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। সেমিতে ভারতের দুইটি এবং ফাইনালে পাকিস্তানের তিনটি টাইব্রেকার শট রুখে দেয় মেহেদী। অথচ বাফুফের কোচরা তাকে প্রথমে বাদ দিয়েছিলেন ট্রায়াল না দেখেই। পরে মেহেদী পুণরায় তার ট্রায়াল নিতে অনুরোধ জানায়। এরপর টিকে যায় সে। আার এখন দেশের ফুটবলে আরেকটি সাফল্যের রুপকার সেই মেহেদী।

বেনাপোলের নুর ইসলাম অ্যাকাডেমির ফুটবলার মেহেদী। ২০১৫ সালেই ফুটবলে আসে  দীর্ঘকায় মেহেদী। যদিও তার ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু হয় স্ট্রাইকার হিসেবে। পরে হয়ে যায় পোস্টের নীচের অতন্দ্র প্রহরী। এই পজিশন বদলের কাহিনী ব্যাখ্যা করে মেহেদী বলে, ‘আমাদের এলাকায় কোনো ভালো গোলরক্ষক ছিল না। তাই আমি গোলরক্ষক পজিশনে খেলার সিদ্ধান্ত নিলাম।’ তাকে বাকী ঘষামাজার কাজটি করছেন জাতীয় দলের গোলরক্ষক কোচ মিজানুর রহমান মিনার। তার ছোঁয়াতেই মেহেদী হাসান এখন টাইব্রেকার ঠোকাতে সিদ্ধহস্ত।

বাবার উৎসাহেই ফুটবলার হওয়া মেহেদীর। সাফে দারুণ অর্জনের পর বাবার সাথে কথা বলেছে। ছেলের অসামান্য নৈপূণ্যে বাবাও দারুণ খুশি। স্বর্ণের দোকানের কমচারী জীবনের প্রসঙ্গ তার মুখে। জানায়, আমি তিন মাস কাজ করেছি মামার স্বর্ণের দোকানে। আংটি তৈরীর কাজ শিখছিলাম এই সময়ে আমার সাপ্তাহকি বেতন ছিল এক হাজার টাকা। পুরো টাকাই তুলে দিতাম বাবার হাতে। এরপর ফুটবল খেলা শুরু করলে ছেড়ে দেই কাজ।

বাংলাদেশ অনূর্ধ-১৫ দলে ডাক পাওয়ার আগে মেহেদী খেলেছেন যশোর লিগে। সেখানেও আছে পেনাল্টি ঠেকানোর রেকর্ড । মোহামেডানের হয়ে প্রতিপক্ষের পেনাল্টি শট রুখে দেন তিনি। এই তথ্য তারই দেয়া। সেই অভিজ্ঞতাই এবার নেপালের মাঠে টাইব্রেকার ঠেকাতে আত্মবিশ্বাস যোগায় এই কিপারের। সাথে যোগ হয় কোচ মিনারের টিপস। মেহেদী জানায়, ‘কোচ আমাকে শিখিয়েছে কিভাবে টাইব্রেকার ঠেকাতে হয়। শেখানো হয়ছিল শট নেয়ার সময় বিপক্ষ ফুটবলারের পায়ের দিকে নজর রাখতে হবে। সে কৌশলেই আমি টাইব্রেকার ঠেকিয়েছি এবারের সাফে।’

আজেন্টিনার গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরো তার আদর্শ। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডস এর বিপক্ষে রোমেরোর টাইব্রেকার ঠেকানোর দৃশ্য এখনও তার স্মৃতিতে ভেসে আছে। বাংলাদেশে তার প্রিয় গোলরক্ষক আমিনুল হক। মেহেদী জানে ২০০৩ এর সাফে এই আমিনুল ফাইনালে মালদ্বীপের একটি টাইব্রেকার ঠেকিয়ে বাংলাদেশকে চ্যাম্পিয়ন করিয়েছেন।

এখন মেহেদীর লক্ষ্য সিনিয়র জাতীয় দলে খেলা। পাশাপাশি পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়া এই ফুটবলার আবার ব্যস্ত হতে চান খাতা কলম নিয়েও।


আরো সংবাদ



premium cement
ফিলিপাইনে মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রচণ্ড গরম থাকবে তীব্র তাপদাহে পথের ধারে সৌন্দর্য বিলাচ্ছে কৃষ্ণচূড়া তজুমদ্দিনে আগুনে পুড়ে ১৩ দোকান ছাই গাজা নিয়ে আলোচনার লক্ষ্যে সৌদি আরব যাচ্ছেন ব্লিংকেন ধামরাইয়ে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ, কাঁদলেন মুসুল্লিরা বান্দরবানে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে ২ কেএনএফ সদস্য নিহত এসএসসি পরীক্ষার ফল ৯ থেকে ১১ মে’র মধ্যে প্রকাশ কলাপাড়ায় বালুর জাহাজ থেকে ছিটকে পড়ে শ্রমিক নিখোঁজ যেসব কারণে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যেতে পারে আপনার ফেসবুক আইডি ও পেজ কুয়াকাটাসহ উপকূল পুড়ছে তাপপ্রবাহে, স্বস্তি নেই জনজীবনে আজ দুপুরে দেশের উদ্দেশে আল হামরিয়া বন্দর ছাড়বে এমভি আব্দুল্লাহ

সকল