২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

২ ঘণ্টায় বিক্রি শেষ ২৫০০ তরমুজ

রাজধানীতে কৃষকের মূল্যে তরমুজ কিনতে মানুষের লম্বা লাইন : নয়া দিগন্ত -


মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে ৬-৭ কেজি ওজনের একটি তরমুজ ৫০০ টাকা বলেছি, দেয়নি। সেখানে না কিনে এখানে (খামারবাড়ি মোড়ে) চলে এসেছি। ৯ কেজির বেশি ওজনের তরমুজ কিনলাম ২০০ টাকায়। এটা বাজারের তুলনায় খুবই সস্তা। বলছিলেন ষাটোর্ধ্ব হোসনে আরা বেগম। তার স্বামী রুস্তম আলী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। থাকেন সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সামনে, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট ভবনে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর খামারবাড়ি বঙ্গবন্ধু চত্বরে বাংলাদেশ এগ্রি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাফা) উদ্যোগে ‘কৃষকের পণ্য, কৃষকের দামে’ এই স্লোগানে ন্যায্যমূল্যে তরমুজ বিক্রি করা হয়। সেখানেই কথা হয় হোসনে আরা বেগমের সাথে। লাইনে দাঁড়িয়ে তরমুজ কিনে ফিরছিলেন আরেক নারী ফারজানা। তারো বয়স ৬০ ছুঁই ছুঁই। তিনি বলেন, প্রথম রোজায় তরমুজ কিনতে বাজারে গেলাম। ৮০ টাকা কেজি। নিলে নেন, না নিলে না নেন। দোকানদারের এমন কথায় বাসায় ফিরতে হয়েছে। ছেলেমেয়েরা তরমুজ খুব পছন্দ করে। সেদিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, দাম কমুক, তারপর কিনে খাবো। আজ নিলাম। ৯ কেজি প্লাস, ২০০ টাকায়। সেখানে কথা হয় আরো কয়েকজনের সাথে। স্বল্পমূল্যে তরমুজ কিনে তারা মহাখুশি। তবে এই কার্যক্রম রোজার শুরু থেকেই নিলে ভালো হতো বলে মন্তব্য অনেকের।

খামারবাড়িসহ রাজধানীর ৫টি স্পটে ন্যায্যমূল্যে তরমুজ বিক্রি কার্যক্রম শুরু হয় গতকাল থেকে। চলবে ২৭ রোজা পর্যন্ত। অন্য ৪টি স্পট হলো-উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের জমজম টাওয়ার, সচিবালয়ের সামনে আব্দুল গণি রোড, মোহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেন এবং পুরান ঢাকার নয়াবাজার। স্বল্পমূল্যে ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে তরমুজ বিক্রি শুরু করেছে বাফা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রথম দিন ৫টি গাড়িতে মোট আড়াই হাজার পিস তরমুজ বিক্রি করা হয়। এতে নিম্নবিত্তের পাশাপাশি মধ্য ও মধ্যনিম্নবিত্ত পরিবারের মানুষ ব্যাপক ভিড় করেন। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে তারা ভ্রাম্যমাণ গাড়ি থেকে তরমুজ কিনেন। দেড় থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে এসব তরমুজ বিক্রি শেষ হয়ে যায়।
প্রচণ্ড রোদ। বেলা ১১টার আগে থেকেই খামারবাড়ি মোড়ে (বঙ্গবন্ধু চত্বর) ন্যায্যমূল্যে তরমুজ কিনতে মানুষের দীর্ঘ লাইন। ১২টার দিকে তরমুজ বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ এগ্রি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাফা) সভাপতি এ কে এম নাজিব উল্লাহ। এ সময় বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো: ইমরান হোসেন, সিনিয়র সহসভাপতি আলী আজম শিবলী, কৃষিমন্ত্রীর মেয়ে ও আওয়ামী লীগ নেত্রী উম্মে ফারজানা ডায়না উপস্থিত ছিলেন।

বাফা সভাপতি এ কে এম নাজিব উল্লাহ বলেন, তরমুজের যে উচ্চমূল্য, এর সুবিধা কৃষক পাচ্ছে না। মধ্যস্বত্বভোগীরা তা খেয়ে ফেলছে। এ জন্য আমরা ‘কৃষকের পণ্য, কৃষকের দামে’ বিক্রি করে দেখাতে চাচ্ছি যে, তরমুজের দামটা অত বেশি না। তিনি জানান, আগামী বছর থেকে রোজার শুরু থেকেই স্বল্পমূল্যে তরমুজ বিক্রির কার্যক্রম হাতে নেয়া হবে।
পরে কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুস শহীদ তরমুজ বিক্রি কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। তিনি বাফার এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।
বাংলাদেশ এগ্রি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন বলছে, কৃষকের দামে পাঁচ কেজির বেশি ওজনের একটি তরমুজ ১০০ টাকা, ৭ কেজির বেশি ওজনের তরমুজ ১৫০ টাকা, ৯ কেজির বেশি ওজনের তরমুজ ২০০ টাকা, ১১ কেজির বেশি ওজনের তরমুজ ২৫০ টাকায় পিস হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement