স্বস্তিতে নেই বাংলাদেশ

২১১ রানের লিড নিয়ে সিলেট টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে শ্রীলঙ্কা। বোলাররা শেষ সেশনে লঙ্কানদের পাঁচ উইকেট তুলে নিলেও লিড ২০০ ছাড়িয়ে যাওয়ায় স্বস্তিতে নেই বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫ উইকেট হাতে নিয়ে ২১১ রানে এগিয়ে সফরকারীরা। ৯২ রানে এগিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে দিন শেষে ৫ উইকেটে ১১৯ রান করেছে লঙ্কানরা। প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কার ২৮০ রানের জবাবে ১৮৮ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।
৩২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করেছিল বাংলাদেশ। আগের দিনের ব্যাটিং দুর্দশা পেছনে রেখে নতুন দিনে ভালো কিছুর প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু সে আশায় পানি ঢেলে দিয়েছে লঙ্কান বোলাররা। প্রথম দিনের বেহাল ব্যাটিং দ্বিতীয় দিনেও অব্যাহত ছিল।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিনই শ্রীলঙ্কাকে অলআউট করে দেয় বাংলাদেশ। জবাবে দিন শেষে ৩ উইকেটে ৩২ রান করেছিলো টাইগাররা। মাহমুদুল হাসান জয় ৯ ও তাইজুল ইসলাম শূন্য হাতে অপরাজিত ছিলেন। গককাল দ্বিতীয় দিন প্রথম ব্যাটার হিসেবে আউট হন জয়। লাহিরু কুমারার বলে তৃতীয় সিøপে ক্যাচ দিয়ে ১২ রানে আউট হন। বেশি দূর যেতে পারেননি শাহাদাত হোসেন দিপু। কুমারার দ্বিতীয় শিকার হয়ে ১৮ রানে থামেন। ক্রিজে এসে ৪টি চারে বড় ইনিংসের আভাস দিয়েছিলেন উইকেটরক্ষক লিটন দাস। কিন্তু কুমারার হালকা ইন-সুইংয়ের ডেলিভারি সামলাতে না পেরে বোল্ড হন ২৫ রান করে।
দলীয় ১২৪ রানে লিটন ফিরলেও, টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির পথে ছিলেন তাইজুল। কিন্তু ৩ রান দূরে থাকতে কাসুন রাজিথার শিকার হন। ৮০ বল খেলে ৬টি চারে ক্যারিয়ার সেরা ৪৭ রান করেন তাইজুল। এর পর মেহেদী হাসান মিরাজকেও ১১ রানে থামান রাজিথা। নবম উইকেটে শ্রীলঙ্কার বোলারদের উপর চড়াও হন দুই টেল-এন্ডার শরিফুল ইসলাম ও খালেদ আহমেদ। স্পিনার প্রবাথ জয়সুরিয়ার করা ৪৭তম ওভারে শরিফুল ২টি ও খালেদ ১টি ছক্কায় ১৯ রান তুলেন। শরিফুল-খালেদের জমে যাওয়া জুটিতে ২শর পথে এগিয়ে যেতে থাকে বাংলাদেশ। কিন্তু শরিফুল ও খালেদকে আউট করে ১৮৮ রানেই বাংলাদেশ ইনিংসের সমাপ্তি টানেন আগের দিন ২ উইকেট নেয়া বিশ^ ফার্নান্দো। শরিফুল ১৫ ও খালেদ ২২ রান করেন। তিন পেসার ফার্নান্দো ৪টি, কুমারা-রাজিথা ৩টি করে উইকেট নেন।

৯২ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে প্রথম বলেই উইকেট হারাতে পারতো শ্রীলঙ্কা। কিন্তু রান আউটের সহজ সুযোগ হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। ইনিংসের প্রথম ২১ বলের মধ্যে দুই রিভিউ শেষ করে ফেললেও ষষ্ঠ ওভারে প্রথম উইকেটের দেখা পায় টাইগাররা। অভিষিক্ত পেসার নাহিদ রানার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ১০ রান করা নিশান মাদুশঙ্কা। তিন নম্বরে নামা কুশল মেন্ডিসকে (৩) বাউন্সারে কুপোকাত করে দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পান রানা। ৩২ রানে ২ উইকেট পতনের পর আরেক ওপেনার দিমুথ করুনারতœকে নিয়ে দলের রান ৫০ পার করেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। ১৮তম ওভারে প্রথম আক্রমনে এসে বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন স্পিনার তাইজুল। কাট করতে গিয়ে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দেন ২২ রান করা ম্যাথুজ। মিরাজ প্রথম ডেলিভারিতে চান্ডিমালের বিপক্ষে লেগ বিফোর আবেদন করলেও, সাড়া দেননি আম্পায়ার। রিভিউ নিয়ে চান্ডিমালকে খালি হাতে বিদায় করে বাংলাদেশ।
৬৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে শ্রীলঙ্কা। এ অবস্থায় ৪৮ রানের জুটি গড়ে দলকে চাপমুক্ত করেন করুনারতেœ ও অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের ৩৬তম অর্ধশতক পূর্ন করেন করুনারতেœ। হাফ-সেঞ্চুরির দুই বল পরই শরিফুলের বাউন্সারে পুল করে ডিপ ফাইন লেগে রানাকে ক্যাচ দেন ৫২ রান করা করুনারতেœ। এর পর ফার্নান্দোকে নিয়ে দিনের খেলার শেষ করেন ধনাঞ্জয়া। ফার্নান্দো ২ ও ধনাঞ্জয়া ২৩ রানে অপরাজিত আছেন। বাংলাদেশের রানা ২টি, শরিফুল-তাইজুল ও মিরাজ ১টি করে উইকেট নেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :
শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস : ২৮০/১০।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৫১.৩ ওভারে ১৮৮ (জয় ১২, জাকির ৯, শান্ত ৫, মোমিনুল ৫, তাইজুল ৪৭, শাহাদাত ১৮, লিটন দাস ২৫, মিরাজ ১১, শরিফুল ১৫, খালেদ ২২, নাহিদ রানা ০*, বিশ^ ফার্নান্দো ৪/৪৮, রাজিথা ৩/৫৬, কুমারা ৩/৩১)।
শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ইনিংস : ৩৬ ওভার ১১৯/৫ (মাদুশকা ১০, করুনারত্নে ৫২, কুশল ৩, ম্যাথুজ ২২, চান্দিমাল ০, ধনাঞ্জয়া ২৩*, বিশ^ ফার্নান্দো ২*, শরিফুল ১/২৭, রানা ২/৪২, তাইজুল ১/১২, মিরাজ ১/৫)।