০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


আজ উড়িষ্যা-অন্ধ্র উপকূলের স্থলে উঠছে ঘূর্ণিঝড় গুলাব

-

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টি আজ রোববার ভারতের অন্ধ্র ও উড়িষ্যা উপকূল দিয়ে উঠে যাবে স্থলভাগে। ঝড়টি উপকূল অতিক্রম করার সময় বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা কিছুটা উত্তাল থাকবে। এছাড়া দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন স্থানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়া অফিস দেশের চারটি সমুদ্র বন্দরের জন্য ১ নম্বর দুরবর্তী সতর্ক সঙ্কেত জারি করেছে।
সৃষ্ট এ ঘূর্ণিঝড়টির নাম দেয়া হয়েছে গুলাব। এটি একটি পাকিস্তানি নাম যার অর্থ গোলাপ। চলতি বছর গুলাব ছাড়াও আরো দুইটি ঘূর্ণিঝড় হয়ে গেছে বঙ্গোপসাগরে। এর একটির নাম ছিল তৌকতি এবং অন্যটি ছিল ইয়াস। তৌকতি ভারতে আঘাত হেনেছিল, বাংলাদেশে এর কোনো প্রভাব ছিল না। অন্যদিকে ইয়াস প্রধানত ভারতে আঘাত হানলেও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে এর প্রভাব পড়েছিল।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় গোলাব বঙ্গোপসাগরে খুব দ্রুততার সাথে অতি স্বল্প সময়ে সৃষ্টি হয়েছে। গত শুক্রবার লঘুচাপ থেকে দ্রুততার সাথে সুস্পষ্ট লঘুচাপ হয় এটি এবং গতকাল শনিবার সুস্পষ্ট লঘুচাপ থেকে নি¤œচাপ এবং গভীর নি¤œচাপ অবস্থার সৃষ্টি করে। পরে গতকাল রাতের মধ্যেই এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় এবং আজ রোববার তা স্থলভাগে উঠে যাচ্ছে। এত দ্রুততার সাথে এর আগে খুব কম ঝড়ই সৃষ্টি হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে খুব বেশি ঘূর্ণিঝড় হয় না। গরম আবহাওয়ার পর সাধারণত অক্টোবর মাসে একটি ঝড় হয়ে থাকে। অন্যদিকে নভেম্বর মাসে একটি শক্তিশালী ঝড় হয়ে থাকে। এটা প্রতি বছরই ঘটে। কোনো কোনো সময় বাংলাদেশে নভেম্বরের ঝড়টি আঘাত হানে কিন্তু বেশির ভাগ ভারতের উড়িষ্যা থেকে অন্ধ্র উপকূলে আঘাত হানে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নি¤œচাপটি গতকাল শনিবার সকাল ৯টায় গভীর নি¤œচাপে পরিণত হয়। তখন চট্টগ্রাম বন্দর থেকে গভীর নি¤œচাপটির দূরত্ব ছিল ৪৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার বন্দর থেকে ৪১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। অপর দিকে মংলা বন্দর থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা বন্দর থেকে ৪০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। গভীর নি¤œচাপটির ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার যা দমকা ও ঝড়োহাওয়া আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এটা একটি দুর্বল প্রকৃতির ঘূর্ণিঝড়। উপকূলে উঠে আসার সময় সর্বোচ্চ ৭০ কিলোমিটার বেগে এটা আঘাত হানতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থাকতে বলা হয়েছে এবং সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সাথে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে তাদের বলা হয়েছে।
সাধারণত সেপ্টেম্বর মাসে ঝড় হয় না। তবু ১৯৯১ থেকে ২০২১ পর্যন্ত সংঘটিত ঘূর্ণিঝড়ের ইতিহাস থেকে দেখা গেছে, এ সময়ের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে সেপ্টেম্বর মাসে ১৪টি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে। ১৯৯১ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ১১টি ঝড় হয় এবং ২০১১ থেকে ২০২১ পর্যন্ত সেপ্টেম্বর মাসে ৩টি ঘূর্ণিঝড় হয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement