দূরপাল্লার বাস চলার অনুমতি না দিলে ঈদের দিন অবস্থান ধর্মঘট

ঈদের আগেই দূরপাল্লার বাস চলাচলের অনুমতি না দিলে ঈদের দিন রাজপথে অবস্থান কর্মসূূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন অধিভুক্ত বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনগুলো এই ঘোষণা দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান। তিনি বলেন, গত ৬ মে থেকে লকডাউন শিথিল রেখে মহানগর ও জেলার অভ্যন্তরে গণপরিবহন পরিচালনার সিদ্ধান্ত দিয়েছে সরকার। কিন্তু দূরপাল্লার গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। এতে মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অথচ বাস-মিনিবাস, সিএনজি চালিত অটোরিকশায় গাদাগাদি করে মানুষ যাতায়াত করছে। এতে করোনা আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে দূরপাল্লার গণ এবং পণ্য পরিবহন চালু করে দিতে হবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শাজাহান খান বলেন, ‘লকডাউন-সম্পর্কিত বিশেষজ্ঞরা মাঠের সেন্টিমেন্ট বোঝেন না। শ্রমিকের সেন্টিমেন্ট বোঝেন না। এ জন্যই ফেরিতে মানুষ গাদাগাদি করে যাচ্ছে। শ্রমিকেরা না খেয়ে থাকছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ। সরকার যেসব বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়েছে, তাদের নয় বরং আমাদের পরামর্শ নেয়া উচিত।’ সংবাদ সম্মেলনে শাজাহান খান পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হচ্ছে- ১. স্বাস্থ্যবিধি মেনে মোট আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে দূরপাল্লার গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহনের সুযোগ, ২. (ক) লকডাউনের কারণে কর্মহীন পরিবহন শ্রমিকদের ঈদের আগে আর্থিক অনুদান ও খাদ্য সহায়তা প্রদান এবং (খ) যানবাহন মেরামত, পরিবহনশ্রমিকদের বেতন, ভাতা ও ঈদ বোনাস দেয়ার জন্য পরিবহন মালিকদের নামমাত্র সুদে ও সহজ শর্তে পাঁচ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দেয়া; ৩. সারা দেশে বাস ও ট্রাক টার্মিনালগুলোয় পরিবহন শ্রমিকদের জন্য ঈদের আগে ও পরে ১০ টাকায় খোলাবাজারে চাল বিক্রির ব্যবস্থা; ৪. পরিবহন খাতে বিনিয়োগকারীদের ঋণের সুদ মওকুফসহ কিস্তি ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যস্ত স্থগিত এবং শতকরা ২ ভাগ ডাউন পেমেন্ট নিয়ে ‘ক্ল্যাসিফায়েড’ ঋণ ‘আনক্ল্যাসিফায়েড’ করা; ৫. লকডাউনে কারণে গাড়ির ট্যাক্স-টোকেন, রুট পারমিট ফি, আয়কর, ড্রাইভিং লাইসেন্স ফিসহ সব ধরনের ফি, কর ও জরিমানা মওকুফ করে কাগজপত্র হালনাগাদ করার সুযোগ ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত রাখা।
শাজাহান খান জানান, দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে ঈদের নামাজ শেষে সারা দেশের মালিক ও শ্রমিকরা নিজ নিজ এলাকায় বাস ও ট্রাক টার্মিনালে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে। এছাড়া, ঈদের পর পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা, মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।