০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`


জানাজায় লাখো মানুষের ঢল

নূর হোসাইন কাসেমীর দাফন সম্পন্ন

বায়তুল মোকাররমে নূর হোসেন কাসেমীর নামাজে জানাজা। ইনসেটে কাসেমী : নয়া দিগন্ত -

হেফাজতে ইসলাম ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল সকালে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে নামাজে জানাজা শেষে তুরাগ জামিয়া সুবহানিয়া মাদরাসা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
গত রোববার বেলা ১২টা ৫৫ মিনিটে ইন্তেকাল করেন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী। রাতে তার প্রতিষ্ঠিত বারিধারা মাদরাসায় ফ্রিজবাহী অ্যাম্বুলেন্সে লাশ রাখা হয়। গতকাল সকাল ৯টায় বায়তুল মোকাররমে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় অংশ নিতে ফজরের নামাজের পর থেকেই ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ও আশপাশের জেলা থেকে হেফাজতের নেতাকর্মী ও কয়েক লাখ ভক্ত অনুরাগী বায়তুল মোকাররমে ছুটে আসেন। সকাল ৯টা বাজার আগেই বায়তুল মোকাররমের আশপাশের এলাকা কানায় কানায় ভর্তি হয়ে যায়। মসজিদ ও মসজিদ আঙ্গিনায় লোক সঙ্কুলান না হওয়ায় বায়তুল মোকাররমের উত্তর দিকে পুরানা পল্টন, পূর্ব দিকে ফকিরাপুল হয়ে মতিঝিল শাপলা চত্বর পর্যন্ত, দক্ষিণ দিকে গুলিস্তান পর্যন্ত মুসল্লিরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু পূর্ব দিকে যাওয়ার রাস্তাগুলো লোকে লোকারণ্য হয়ে ব্লক হয়ে যাওয়ায় মসজিদের পশ্চিম দিকে জিরো পয়েন্ট ও পল্টন মোড় পর্যন্ত লোকজন দাঁড়িয়ে থাকে। এ সময় এসব সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
জানাজার আগে আল্লামা কাসেমীর স্মৃতিচারণ করে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বক্তৃতা করেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শায়খুল হাদিস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সভাপতি ও হাইয়াতুল উলইয়ার চেয়ারম্যান শায়খুল হাদিস মাওলানা মাহমুদুল হাসান, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা আল্লামা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল্লামা শায়খ জিয়া উদ্দীন, দারুল উলুম দেওবন্দের মজলিসে শূরার সদস্য মুফতি শফিকুল ইসলাম কাসেমী, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার ভারপ্রাপ্ত মুহতামিম হাফেজ মাওলানা নাজমুল হাসান, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর ছোটভাই মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস ও বড় ছেলে মাওলানা জোবায়ের।
বক্তৃতায় আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর সাথে আমার হৃদয়ের সম্পর্ক ছিল। তাকে হারিয়ে আমরা কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হলাম তা বলে বোঝানো যাবে না। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, আল্লামা কাসেমী দেশের সবচেয়ে বড় অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব ছিলেন। তিনি বাতিলের সাথে আপস করেননি। কোনো হুমকি-ধমকিতে ভয় করেননি। আমরা তার কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করব ইনশাআল্লাহ। কাসেমীর ছোট ভাই মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস তার বড় ভাইয়ের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়ে বলেন, জাতি আজ তার এক সুসন্তানকে হারিয়েছে। আপনারা সবাই তার রূহের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করবেন। পরে জানাজার নামাজ পড়ান আল্লামা কাসেমীর ছোট ছেলে মুফতি জাবের কাসেমী।
জানাজায় বিশিষ্টজনদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতের সিনিয়র সহসভাপতি আল্লামা নুরুল ইসলাম জিহাদী, সাবেক মন্ত্রী আল্লামা মুফতি মোহাম্মদ ওয়াক্কাস, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মজিবুর রহমান, নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মো: সেলিম উদ্দিন, সাবেক এমপি মুফতি শহিদুল ইসলাম, প্রবীণ আলেমে দ্বীন মাওলানা আবুল কালাম, নারায়ণগঞ্জের মাওলানা আব্দুল আউয়াল, বেফাকের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, সহ-সভাপতি হাফেজ মাওলানা মুসলেহ উদ্দীন রাজু, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমির ড. মাওলানা মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মোস্তফা তারেকুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মো: আবু বকর সিদ্দিক, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, মুসলিম লীগের মহাসচিব অ্যাডভোকেট কাজী আবুল খায়ের, স্থায়ী কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন আবুড়ী, মসজিদ মিশনের সেক্রেটারি ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, লেবার পাটির চেয়ারম্যান ডা: মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একাংশের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, হেফাজতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা আব্দুল হামিদ পীর সাহ্বে মধুপুর, মাওলানা জোনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা এখলাছুর রহমান, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা আবদুল বছীর, অ্যাডভোকেট মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, মাওলানা তাফাজ্জুল হক আজীজ, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, মুফতি মুনির হোছাইন কাসেমী, খিদমাহ ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশেনের চেয়ারম্যান মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজী প্রমুখ। জানাজা শেষে তার লাশ তুরাগ জামিয়া সুবহানিয়া মাদরাসা কবরস্থানে নেয়া হয়। সেখানে বেলা ১১ টার দিকে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement