পাকিস্তানে সার্ক শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের উদ্যোগ আবারো ভণ্ডুল করে দিলো ভারত। গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে ইসলামাবাদে দীর্ঘ দিন ধরে স্থগিত থাকা সার্ক শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের ইস্যুটি ছিল; কিন্তু ভারতসহ কয়েকটি দেশের বিরোধিতার কারণে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া যায়নি। সার্কের সিদ্ধান্তগুলো সর্বসম্মতিতে নিতে হয়।
এতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, ভারত পরস্পরের সাথে সংযুক্ত, সম্পৃক্ত ও উন্নত দক্ষিণ এশিয়া গড়তে চায়। তবে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদ, পারস্পরিক যোগাযোগ স্থাপনে অনীহা ও বাণিজ্য সম্প্রসারণে বাধাÑ এই তিনটি চ্যালেঞ্জ সার্ককে অতিক্রম করতে হবে।
অন্য দিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি পরোক্ষভাবে জম্মু-কাশ্মিরের ইস্যুটি তুলে বলেন, এ অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও দারিদ্র্যবিমোচনের জন্য অনিষ্পন্ন বিরোধগুলোর শান্তিপূর্ণ সমাধান হওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, আঞ্চলিক সহযেগিতার ক্ষেত্রে সার্ককে কার্যকর করতে হলে ইসলামাবাদ শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের পথে বাধাগুলো দূর করতে হবে।
২০১৬ সালে নভেম্বরে ইসলামাবাদে ১৯তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল; কিন্তু ওই বছরের জানুয়ারিতে পাঞ্জাবের পাঠানকোটে ভারতীয় বিমানবাহিনীর ঘাঁটি এবং সেপ্টেম্বরে কাশ্মিরের উরিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ব্রিগেড সদর দফতরে হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত এ সম্মেলনে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানায়। নেপাল ছাড়া সার্কের অন্য দেশগুলোকে ভারত এই সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে তাদের পক্ষে টানতে সক্ষম হয়। তাই প্রায় চার বছর ধরে সার্কভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের নিয়ে শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন সম্ভব হচ্ছে না। পাকিস্তান ঘোষণা দিয়েছে, পরবর্তী সার্ক শীর্ষ সম্মেলন যদি হতেই হয়, তবে তা ইসলামাবাদেই হবে।
ভার্চুয়াল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ কুমার গিওয়ালি। তিনি সংস্থার কর্মকাণ্ডে গতি আনতে ১৯তম শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের সম্ভাব্য সব পথ বিবেচনায় নিতে সার্ক পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের প্রতি আহ্বান জানান।
বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন করোনা মহামারীজনিত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সার্ক দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, সার্কে নবশক্তি সঞ্চারণকল্পে সংস্থার কর্মপরিকল্পনা (প্ল্যান অব অ্যাকশন) পর্যালোচনা ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে। করোনা মহামারী সহযোগিতার নতুন নতুন ক্ষেত্র এবং সুযোগ যেমন তৈরি করবে, তেমনি চলমান অনেক খাতকে আংশিকভাবে বা পুরোপুরি অপ্রাসঙ্গিক বানিয়ে ফেলবে।
ড. মোমেন বলেন, করোনা-পরবর্তী সময়ে খাদ্য ও কৃষি, জনস্বাস্থ্য, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগে জোর দিতে হবে। এ ছাড়া সার্কের অঙ্গসংস্থাগুলোর জমে থাকা সুপারিশগুলো আলোচনার ভিত্তিতে সমাধান করতে সংস্থার পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্র সচিবসহ অন্যান্য কার্যকরী কমিটির বৈঠকগুলো অনুষ্ঠিত হতে হবে।
করোনা-পরবর্তী সঙ্কট উত্তরণে সার্কভুক্ত দেশগুলোর নিবিড় সহযোগিতার আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ভবিষ্যতে সার্ক একটি গতিশীল ও কার্যকর আঞ্চলিক সংস্থা হিসেবে শক্ত অবস্থান করে নিতে পারবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা