বাংলাদেশসহ ১৩টি দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে অধ্যাদেশ জারি করেছে ইতালি। বিগত ১৪ দিনে এসব দেশে কেউ অবস্থান করলে বা দেশের অভ্যন্তর দিয়ে গেলে তারা ইতালিতে প্রবেশ বা ট্রানজিট সুবিধা পাবে না। এই অধ্যাদেশে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে কেবল বাংলাদেশই নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে। এর আগে রোমে যাওয়া বাংলাদেশী নাগরিকদের কোয়ারেন্টিনের নিয়মভঙ্গ, করোনা নেগেটিভের ভুয়া সনদপত্র নিয়ে দেশটিতে প্রবেশের চেষ্টা করলে ক্ষুব্ধ হয় ইতালি সরকার। রোমে অবস্থানরত বাংলাদেশী নাগরিকদের মধ্যে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া এবং বাংলাদেশ থেকে আসা যাত্রীদের শারীরিক পরীক্ষায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক করোনা পজিটিভ হওয়ায় বিচলিত হয় দেশটি। এ কারণে গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ থেকে আসা সব ধরনের ফ্লাইট এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে ইতালি। পরে কাতার এয়ারওয়েজে আসা বাংলাদেশী যাত্রীদের বিমানবন্দর থেকেই ফেরত পাঠানো হয়। আরো বিস্তৃত পরিসরে স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয় ৫ অক্টোবর পর্যন্ত। এরপর বাংলাদেশসহ ১৩টি দেশের ওপর ইতালি প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে অধ্যাদেশ জারি করা হলো।
করোনাভাইরাস মহামারী পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকায় বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার বেশির ভাগ দেশকে শেনজেন ভিসাসুবিধার বাইরে রেখেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
নতুন জারি করা অধ্যাদেশে বাংলাদেশ ছাড়াও আরমেনিয়া, বাহরাইন, ব্রাজিল, বসনিয়া হারজেগোভিনা, চিলি, কুয়েত, নর্থ মেসিডোনিয়া, মালদোভা, ওমান, পানামা, পেরু ও ডোমিনিকান রিপাবলিককে নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনেছে ইতালি। এসব দেশের সাথে ইতালির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সব ধরনের ফ্লাইট যাওয়া-আসা বন্ধ থাকবে। ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে পরামর্শ করে এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশে সই করেছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
অধ্যাদেশের ব্যাপারে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারী তীব্র পর্যায়ে রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এই মহামারীর কারণে ইতালির মানুষের আত্মত্যাগ আমরা বৃথা যেতে দিতে পারি না। সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে নিষেধাজ্ঞার এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ দিকে নতুন করে করোনাভাইরাস বিস্তারের কারণে জরুরি অবস্থার মেয়াদ ৩১ জুলাইয়ের পর আবারো বাড়াতে পারে ইতালি। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী গুইসেপ কন্তে এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ বিস্তার নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইতালি প্রস্তুত রয়েছে।
সর্বপ্রথম দু’জন চীনা পর্যটকের করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর জানুয়ারির শেষ দিকে ইতালিতে ছয় মাসের জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। এখন পর্যন্ত দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখ ৪২ হাজার ৩৬৩ এবং মৃতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ৯২৬ জন। সংক্রমণ কমতে থাকায় মে থেকে বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছে।
অবৈধভাবে সাগরপথে যাত্রা : অবৈধপথে সাগর পাড়ি দিয়ে গত দুই দিনে ইতালি গেছেন পাঁচ শতাধিক অভিবাসনপ্রত্যাশী। এদের মধ্যে ৩৬২ জন বাংলাদেশের নাগরিক। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, লিবিয়া থেকে ইতালির উপকূলে আসা একটি নৌকায় ৯৫ জন এবং অপর নৌকার ২৬৭ জন, মোট ৩৬২ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী বাংলাদেশের নাগরিক রয়েছেন।
এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বলেছেন, ইতালিতে যত বাংলাদেশী রয়েছে, তাদের সবাইকে করোনা পরীক্ষার আওতায় আনা হবে। এখন পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে বাংলাদেশী দেখলেই ইতালিয়ানরা অপছন্দ করে। বাংলাদেশীদের জন্য ইতালি বন্ধ হয়েছে। পরে সারা ইউরোপ বন্ধ হয় কি না কে জানে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা