ঢাকার আসন্ন দুই সিটি নির্বাচনে ইলেকট্র্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ৫০ শতাংশ ভোট না পড়লে ব্যালটে পুনরায় ভোট করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন জ্যেষ্ঠ নির্বাচন (ইসি) কমিশনার মাহবুব তালুকদার। বিভিন্ন ভোটের তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, ইভিএম নিয়ে ভোটারদের মনে আছে ভীতি। এ ছাড়া ইভিএমে জাল ভোট প্রদান প্রতিহত করা এক বিরাট সমস্যা। বুথ দখল করে বা গোপন কক্ষে গিয়ে জাল ভোট প্রদানের ঘটনা অবশ্যই প্রতিহত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অন্যান্য নির্বাচন কর্মকর্তার সম্মিলিতভাবে গোপন কক্ষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আবশ্যক। বর্তমান সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার কমিশনের জন্য এক অগ্নিপরীক্ষা।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে গতকাল বুধবার নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সাথে বৈঠকে দেয়া লিখিত বক্তব্যে মাহবুব তালুকদার এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। মাহবুব তালুকদার বলেন, চট্টগ্রাম-৮ আসনের সাম্প্রতিক উপনির্বাচনে সবগুলো কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হয়। এতে ২২ দশমিক ৯৪ শতাংশ ভোট পড়েছে। একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ব্যালট পেপারেযে ২৯৪টি আসনে ভোট হয়েছে, ভোটের হার যেখানে ছিল শতকরা ৮০ ভাগ, সেখানে ইভিএম ব্যবহারে ২৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ কম ভোট পড়েছে। এর কারণ ইভিএম নিয়ে ভোটারদের মনে আছে ভীতি।
ভোটারদের উপস্থিতি বৃদ্ধিও অপরিহার্য উল্লেখ করে মাহবুব তালুকদার বলেন, এ জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য। ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সাফল্যের ওপর নির্ভর করছে এই যন্ত্রটির ভবিষ্যৎ। এই নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার প্রশ্নবিদ্ধ হলে শুধু নির্বাচন নয়, ইভিএম যন্ত্রটির ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত হয়ে যেতে পারে। আমার মতে, যেকোনো নির্বাচনে শতকরা ৫০ ভাগ ভোট না পড়লে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। তিনি বলেন, এ জন্য বিশ্বের অনেক দেশে ৫০ শতাংশের কম ভোট পড়লে পুনরায় ভোট গ্রহণ করা হয়। ইভিএম সম্পর্কে আমার বক্তব্যের বটম লাইন হলো, ইভিএমে যদি ৫০ শতাংশ ভোট না পড়ে, তাহলে ব্যালট পেপারে পুনরায় ভোট গ্রহণ করা উচিত। এ জন্য নির্বাচনী বিধিবিধান পরিবর্তন প্রয়োজন হতে পারে।
ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন নিয়ে তালুকদার বলেন, এই নির্বাচন বর্তমান কমিশনের কার্যকালের সর্বাধিক গুরুত্বসম্পন্ন নির্বাচন। এই নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। একজন প্রার্থী তো সংসদ সদস্যপদ ত্যাগ করে এই নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচন ঘিরে রাজধানীবাসীর উৎসুকতা ও উদ্বেগ অন্তহীন। দেশবাসী ও বিশ্ববাসীর দৃষ্টি এই নির্বাচনের দিকে নিবদ্ধ।
গণতন্ত্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একমাত্র অবলম্বন। সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি ‘গণতন্ত্র ও মানবাধিকার’ অংশে বলা হয়েছেÑ ‘প্রশাসনের সকল পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হইবে’। এ জন্য অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ আইনানুগ নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন এত গুরুত্বপূর্ণ। যারা সত্য মূল্য না দিয়ে অবৈধভাবে নির্বাচিত হন, তাদের দ্বারা প্রশাসনে ‘জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ’ নিশ্চিত হতে পারে না। সংবিধানের প্রতিটি নির্দেশ প্রজাতন্ত্রের সব নাগরিকের পরিপালন বাধ্যতামূলক। তিনি বলেন, আমরা সম্ভবত আত্মসমালোচনাবিমুখ। কেন নির্বাচন নিরপেক্ষ, শুদ্ধ ও স্বচ্ছ হয় না, এ প্রশ্নের উত্তর আত্মজিজ্ঞাসার কারণেই আমাকে খুঁজতে হয়েছে। আমার অভিজ্ঞতা হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন আইনত স্বাধীন; কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে সেই স্বাধীনতা নির্বাচন প্রক্রিয়ার কাছে বন্দী। এই বন্দিত্ব থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কার। তবে সংস্কার কার্যক্রম সার্বিকভাবে নির্বাচন কমিশনের ওপর নির্ভর করে না। অনেকসময় রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের স্বার্থে সংস্কার করতে চায়, জনগণের স্বার্থে নয়। দলীয় স্বার্থে সংস্কার কার্যক্রম কখনো সচল কখনো অচল করে রাখা হয়। এহেন সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া হলেও সংস্কার কার্যক্রম অবারিত হয়ে উঠতে পারে না।
নির্বাচন পরিবেশ নিয়ে তিনি বলেন, আমার জিজ্ঞাসা, ঢাকা মহানগরীজুড়ে এখন নির্বাচনের যে উৎসাহ-উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হচ্ছে, বিগত একাদশ জাতীয় নির্বাচনে তার কিছুই দৃশ্যমান হয়নি কেন? জাতীয় নির্বাচন কি এই স্থানীয় নির্বাচনের চেয়ে কোনো অংশে কম গুরুত্বপূর্ণ ছিল? এই অবস্থা কি নির্বাচন প্রক্রিয়া বা নির্বাচন ব্যবস্থার কোনো সঙ্কট থেকে উদ্ভূত? এ প্রশ্নের জবাব আমাদের খুঁজতে হবে ভবিষ্যতের নির্বাচনকে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করার স্বার্থেই। নির্বাচন ব্যবস্থাপনার নেতিবাচক দিকগুলো পর্যালোচনা করে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে যাতে তার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে বিষয়ে সচেতন থাকা প্রয়োজন।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে মাহবুব তালুকদার বলেন, নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমাদের সবচেয়ে বড় সহায়ক শক্তি। নির্বাচন কমিশন তাদের মাধ্যমেই নির্বাচন করে থাকে। আমি বিশেষভাবে পুলিশবাহিনীর কথা বলি। মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর অবদান সমগ্র জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে। কিন্তু নির্বাচনকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে নির্বাচন কমিশনের অধীন, তা দৃশ্যমান নয়। তিনি বলেন, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট পুলিশ আইনানুগভাবে নির্বাচন কমিশনের কাছে ন্যস্ত, কিন্তু মানসিকভাবেও নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যস্ত না হলে কোনো ফল লাভ হবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যারা নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট থাকবেন, তাদের কাছে প্রত্যাশা, তারা নিজেদের কার্যক্রমে আইন ও শৃঙ্খলা শব্দ দু’টির বিশেষ তাৎপর্য অনুধাবন করবেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতি উৎসাহী কোনো কোনো সদস্যকে আইন ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে কিংবা প্রয়োজনের সময় নিষ্ক্রিয় থাকতে দেখা যায়। ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এ ধরনের ঘটনা থেকে বিরত থাকার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরদারি একান্ত জরুরি। তিনি বলেন, পুলিশ সপ্তাহ ২০২০ এর প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে, ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, পুলিশ হবে জনতার।’ জনতার ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও রক্ষা করে পুলিশবাহিনী এই অঙ্গীকার পালন করতে পারে। আমার পরামর্শ আপনাদের মনে ইতিবাচক সাড়া জাগবে বলে আশা করি।
জ্যেষ্ঠ এই কমিশনার বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ওয়ারেন্ট ছাড়া কিংবা নতুন ওয়ারেন্ট বা আগের ওয়ারেন্ট দিয়ে যেসব গ্রেফতার করা হয়, তা অনেক ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশের বরখেলাপ। জরুরি ক্ষেত্রবিশেষ ব্যতীত গ্রেফতার কার্যক্রম নির্বাচনের পরে হলে অসুবিধা কী? অনেক সময় এসব গ্রেফতারে নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে নির্বাচনের প্রার্থী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে মামলা দিলেও তা যেন ‘গায়েবি মামলা’ হয়ে না যায়। অন্য দিকে গ্রেফতারের বিষয়ে আমার প্রশ্ন, গ্রেফতারকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশগুলো মানা হয় কি? তিনি বলেন, ২০১০ সালে বাংলাদেশ সরকার বনাম রাষ্ট্রের মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট গ্রেফতার ও রিমান্ড সম্পর্কে যে নির্দেশনা দিয়েছেন, তা যথাযোগ্যভাবে অনুসরণ করা হয় বলে আমার জানা নেই। আপিল বিভাগের নির্দেশনাটিতে মানবিক অধিকার ও মানবিক মর্যাদা সমুন্নত রাখার যে অভিব্যক্তি রয়েছে তা যথাযথভাবে পরিপালিত হলে পুলিশের আচরণবিধি লঙ্ঘনের প্রবণতা অনেক কমে যাবে।
ইভিএম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে রাজনৈতিক দলের মধ্যে মতভেদ আছে। ইভিএম ব্যবহারে সব রাজনৈতিক দল ও অংশীজনের মধ্যে ঐকমত্য প্রয়োজন ছিল। কিন্তু আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থায় এ ধরনের সমঝোতার রীতি গড়ে ওঠেনি। ইভিএম নিয়ে পূর্বে আমি ক্রিটিক্যাল থাকলেও দু’টি কারণে আমি এখন ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে। একটি হচ্ছে, এতে ভোটের আগের রাতে ব্যালট পেপারে বাক্স ভর্তি করার সংস্কৃতির অবসান ঘটতে পারে। দ্বিতীয় কারণটি হচ্ছে, নির্বাচনে কোনো কোনো কেন্দ্রে শতকরা একশত ভাগ ভোট পড়ার যে অভিজ্ঞতা আমরা অর্জন করেছি, ইভিএম ব্যবহারে তারও অবসান হবে। একাদশ জাতীয় সংসদের ফলাফল, যা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া গেছে, তাতে দেখা যায়, জাতীয় সংসদের ১০৩টি আসনের ২১৩টি ভোটকেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে। পৃথিবীতে কোনো নির্বাচনেই এ ধরনের ভোটার উপস্থিতির নজির নেই। রাতে ব্যালট পেপারে বাক্স ভর্তি ও কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়ার অপবাদ থেকে আমরা মুক্ত হতে চাই। যাই হোক, ইভিএমের বিরুদ্ধবাদীদের বলতে চাই, বর্তমানের রুঢ় বাস্তবতা হচ্ছে, যেকোনো অবস্থাতেই আসন্ন দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সবগুলো কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহৃত হবে।
এর কোনো অন্যথা হবে না। যারা ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করছেন, তাদের বক্তব্য অনেক সময় তাদের সমর্থক ভোটারদের মনেও বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে। এমতাবস্থায়, তাদের সমর্থক ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ইভিএমে ভোট দিতে আগ্রহী হন, এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ আবশ্যক। আমার পরামর্শ হচ্ছে, ইভিএমের জানাজা না পড়ে বরং এর জন্ম উৎসব পালনের কথা বিরোধীরা ভাবতে পারেন।
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা সবার জন্য সমান সুযোগ প্রতিটি নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার পূর্বশর্ত উল্লেখ করে ইসি মাহবুব তালুকদার বলেন, নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে এই দায়িত্ব সুসম্পন্ন করা সম্ভব নয়। এ জন্য সরকার, সরকারি দল ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা একান্ত অপরিহার্য। নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত না হলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হলে তার দায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর এসে পড়বে। আর আপনারা প্রশ্নবিদ্ধ হলে তার দায় আমাদের ওপর বর্তাবে। আমরা প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন করে কলঙ্কিত হতে চাই না। পুলিশের প্রতি আমার একান্ত প্রত্যাশা, দুই সিটি করপোরেশনের এই নির্বাচনে আপনারা অবশ্যই ভোটার ও প্রার্থীদের নিরাপত্তা বিধান করবেন। তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা যাতে সুশৃঙ্খল থাকে এবং নির্বাচনের পরিবেশ যাতে কেউ বিঘিœত করতে না পারে, সে জন্য আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আপনাদের নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে আরো বলতে চাই, আপনারা নিরপেক্ষ না থাকলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। তিনি বলেন, নির্বাচনকালে নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এক ও অভিন্ন সত্তা। তাই আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এই গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্যভাবে অনুষ্ঠিত করে রাজধানীবাসীর প্রত্যাশা পূরণ করতে চাই। এই প্রসঙ্গে বলা প্রয়োজন, নির্বাচন কমিশনের ওপর রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থার সঙ্কটও কাটাতে হবে। রেফারির ওপর আস্থা না থাকলে খেলার জয়-পরাজয় কোনো দলের কারো জন্যই সুখকর হবে না। এ ক্ষেত্রেও আপনাদের সহযোগিতা আবশ্যক।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা