ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য, উচ্চকক্ষ সংসদ গঠনসহ ৩৫ দফার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
গতকাল রাজধানীর মতিঝিলে হোটেল পূর্বাণীতে এক সংবাদ সম্মেলনে ফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন এই ইশতেহার ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, আজ আমরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করছি। এটা জনগণের ইশতেহার। জনগণের কল্যাণ, জনমতের ভিত্তিতে এটা তৈরি করা হয়েছে এবং সাধারণ মানুষের মতামত গ্রহণের ধারা অব্যাহত থাকবে। আমরা বিশ্বাস করি ভোটের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে দেশে জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করা।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের লিখিত ইশতেহার পাঠ করেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
তিনি বলেন, আসন্ন নির্বাচনে জিতে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পেলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট রাষ্ট্রের সব নাগরিকের কল্যাণে সরকার পরিচালনা করবে। এই পরিচালনার মূলনীতি হবে ঐকমত্য, সরকারের অন্তর্ভুক্তি এবং যেকোনো রকমে প্রতিহিংসা থেকে মুক্ত রাখা। প্রজাতন্ত্রের সব ক্ষমতার মালিকানা জনগণ সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বর্ণিত এই নীতির ভিত্তিতে শুধু নির্বাচনে জেতা আমাদের লক্ষ্য নয়। এই মালিকানা থাকবে নির্বাচনে পরাজিত নেতা, কর্মী ও সমর্থকদেরও। এই রাষ্ট্র পরিচালিত হবে নির্বাচনে পরাজিতদের মতামত ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে।
৩৫ দফা প্রতিশ্রুতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য দিকগুলো : প্রতিহিংসা বা জিঘাংসা নয়, জাতীয় ঐক্যই লক্ষ্য : মিথ্যা মামলা, গুম, খুন, মামলার ঘুষ বাণিজ্য ও বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনাগুলো সমাধানে ‘সর্বদলীয় সত্যানুসন্ধান ও বিভেদ নিরসন কমিশন’ গঠন করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের অতীতের হয়রানি মামলা সুরাহার লক্ষ্যে খোলা মনে আলোচনা করে ক্ষমা ও ক্ষতিপূরণের মাধ্যমে সমাধান করা হবে।
ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা, নির্বাচন কমিশন : সব অংশীজনের সাথে আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন সরকারের বিধান তৈরি করা হবে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতা দেয়া হবে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় তার কাজে সরকারের প্রভাবমুক্ত থাকবে এবং তার স্বাধীন বাজেট থাকবে। কালো টাকা এবং গণমাধ্যমের অপব্যবহার রোধ করার জন্য সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেয়া হবে।
ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল : ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল করা হবে। মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে মানুষ পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে। গণমাধ্যমের ওপর কোনো রকম প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সরকারি নিয়ন্ত্রণ থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য আনয়ন : সংবিধানের ১১৫ এবং ১১৬ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে নি¤œ আদালতকে পুরোপুরি সুপ্রিম কোর্টের অধীনে দেয়া হবে। সবার সাথে আলোচনার মাধ্যমে শুধু অনাস্থা ভোট এবং অর্থবিল ছাড়া অন্য যেকোনো ক্ষেত্রে দলীয় সংসদ সদস্য দলের বিরুদ্ধে ভোট দিলেও তাদের সংসদ সদস্যপদ শূন্য হবে না এমন সংশোধনী ৭০ অনুচ্ছেদে আনা হবে। সংসদের উচ্চকক্ষ সৃষ্টি করা হবে। প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য আনা হবে। মন্ত্রিসভাসহ প্রধানমন্ত্রীকে সংসদের কাছে দায়বদ্ধ থাকার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করা হবে। পর পর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকা যাবে না। সংসদের ডেপুটি স্পিকার বিরোধীদলীয় সদস্যদের মধ্য থেকে নির্বাচন করা হবে।
জেলা পরিষদ জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবে : বাজেটে প্রতিটা জেলার জন্য জেলা বাজেট এবং সেটা পর্যায়ক্রমে নিচের দিকে স্থানীয় সরকারের মধ্যে বণ্টন করা হবে। জেলা পরিষদ জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবে। স্থানীয় সরকারের দলীয় প্রতীকের ভিত্তিতে নির্বাচনের প্রথা বাতিল করা হবে।
চাকরিতে প্রবেশের কোনো বয়সসীমা থাকবে না : পুলিশ এবং সামরিক বাহিনী ছাড়া সরকারি চাকরিতে প্রবেশের জন্য কোনো বয়সসীমা থাকবে না। সরকারি চাকরিতে শুধু অনগ্রসর জনগোষ্ঠী এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা ছাড়া আর কোনো কোটা থাকবে না। ত্রিশোর্ধ্ব শিক্ষিত বেকারের জন্য বেকার ভাতা চালু করার উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রীয় সক্ষমতা পরীক্ষা করে বাস্তবায়ন করার জন্য একটি কমিশন গঠন করা হবে।
পিএসসি এবং জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করা হবে : সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য আসন সংরক্ষণ করা হবে। প্রথম বছরেই ডাকসুসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত করা হবে। পিএসসি এবং জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করা হবে। প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য নতুন ক্যাডার সার্ভিস চালু করা হবে। মাদরাসার শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষা দিয়ে বিদেশে কর্মসংস্থান করা হবে।
সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ বাতিল করা হবে : দায়িত্ব পাওয়ার সাথে সাথে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে বর্তমান সরকারের সব দুর্নীতির তদন্ত করে তার সাথে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে। দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা গ্রেফতারে সরকারের অনুমতির বিধান (সরকারি চাকরি আইন - ২০১৮) বাতিল করা হবে।
সব জেলায় ৫০০ শয্যার হাসপাতাল : সব জেলায় একটি করে মেডিক্যাল কলেজ স্থাপনপূর্বক ৫০০ শয্যার হাসপাতাল গড়ে তোলা হবে। তিন মাসের মধ্যে ঔষধ এবং ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার খরচ নির্ধারণ করে সেটা প্রয়োগের মাধ্যমে এসব খরচ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমানো হবে। ন্যূনতম প্রিমিয়ামের ভিত্তিতে সব কৃষক-শ্রমিকের জন্য স্বাস্থ্যবীমা নিশ্চিত করা হবে। সিগারেট এবং সব তামাকজাত পণ্যের ওপর উচ্চহারে শুল্ক ধার্য করা হবে।
বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং গুম বন্ধ করা হবে : বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং গুম পুরোপুরি বন্ধ করা হবে। রিমান্ডের নামে পুলিশি হেফাজতে কোনো রকমের শারীরিক নির্যাতন করা যাবে না। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে পুরোপুরি স্বাধীন করা হবে। ৩৩ শতাংশ এসপি নিযুক্ত হবেন সাব-ইন্সপেক্টর হিসেবে চাকরি শুরু করা অফিসারদের মধ্য থেকে। পুলিশ বাহিনীর ঝুঁকিভাতা বৃদ্ধি করা হবে। জাতিসঙ্ঘ বাহিনীতে পুলিশের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
হাইকোর্ট জামিন দিলে অ্যাটর্নি জেনারেল আপিল করে সময় অপব্যয় করবেন না : বিভাগীয় সদরে স্থায়ী হাইকোর্ট বেঞ্চ থাকবে। হাইকোর্ট কাউকে জামিন দিলে অ্যাটর্নি জেনারেল আপিল করে কোর্টের সময় অপব্যয় করবেন না। সরকার উচ্চ আদালতে বিরোধিতা করতে চাইলে ন্যূনতম ২০ হাজার টাকার কোর্ট ফি দিয়ে আপিল করবেন। উচ্চ আদালতের বার্ষিক ছুটি ছয় সপ্তাহে সীমিত হবে।
ভূমিহীনদের মধ্যে সরকারের খাসজমি বণ্টন করা হবে : সরকারি ব্যাংক থেকে খুব সামান্য সুদে কৃষকদেরকে ঋণ দেয়া হবে। ভূমিহীনদের মধ্যে সরকারের খাসজমি বণ্টন করা হবে।
গার্মেন্টসে কোটা বৃদ্ধি করা হবে : আলোচনার মাধ্যমে ইউরোপ-আমেরিকায় গার্মেন্টসে কোটা বৃদ্ধি করা হবে। দেশে-বিদেশে পাটপণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধিতে ব্যবস্থা নিয়ে আরো পাটশিল্প স্থাপন করা হবে।
গার্মেন্টসশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার টাকা : দু’বছরের মধ্যেই গার্মেন্টসশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার টাকা করা হবে। সব ক্ষেত্রে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার নিশ্চিত করা হবে। স্বাস্থ্যবীমার মাধ্যমে শ্রমিকেরা মাসে ২৫০ টাকার প্রিমিয়ামের মাধ্যমে সব চিকিৎসাসুবিধা পাবেন
ঋণ আদায় করা হবে : খেলাপি ঋণ আদায়কে অগ্রাধিকার দিয়ে ঋণ আদায় করা হবে। নি¤œ আয়ের মানুষকে সুরক্ষা দেয়ার প্রয়োজনে জাতীয় বাজেটে পরোক্ষ করের (ভ্যাট, সম্পূরক কর) হিস্যার পরিমাণ কমানো হবে। আগামী ৫ বছরের মধ্যে বাজেটে আয়করের হিস্যা ৫০ শতাংশে নিয়ে যাওয়া হবে। করযোগ্য ন্যূনতম আয়ের সীমা বাড়ানো হবে।
১০০ ইউনিট ব্যবহারকারীদের বিদ্যুতের মূল্য বাড়বে না : সস্তা দামে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করার আগে বিদ্যমান অবস্থায় প্রথম বছরে সব গ্রাহকের জন্য বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের দাম বাড়বে না। সর্বোচ্চ ১০০ ইউনিট ব্যবহারকারীদের বিদ্যুতের মূল্য আগামী পাঁচ বছরে বাড়বে না।
অতি দরিদ্র এবং দুস্থদের জন্য বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ : এই খাতে জিডিপির অনুপাতে বাজেট আগামী ৫ বছরে ধাপে ধাপে বর্তমানের তিন গুণ করা হবে। অতি দরিদ্র এবং দুস্থদের জন্য বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ করা হবে। বয়স্কভাতা, দুস্থ মহিলা ভাতা বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তদের ভাতার পরিমাণ এবং আওতা বাড়ানো হবে। পুনর্বাসন ছাড়া শহরের বস্তিবাসী ও হকারদের উচ্ছেদ করা হবে না। শারীরিকভাবে সক্ষম ভিক্ষুকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা করা হবে। আগামী ৫ বছরের মধ্যে পর্যায়ক্রমে ভিক্ষাবৃত্তিমুক্ত বাংলাদেশ গড়া হবে।
৬৫ বয়োবৃদ্ধদের যানবাহনের ভ্রমণের সুবিধা : ৬৫ সব বয়োবৃদ্ধ অর্ধেক দামে সব যানবাহনে ভ্রমণের সুবিধা পাবেন। সব বয়োবৃদ্ধ মাসিক ২০০ টাকায় জাতীয় স্বাস্থ্যবীমার আওতায় শুধু ওষুধ ছাড়া অন্য সব চিকিৎসা ও পরিষেবা বিনা খরচে পাবেন। তারা ওষুধ পাবেন অর্ধেক দামে। বেসরকারি চাকরিজীবীদের অবসর ভাতা দেয়া হবে।
নারীর বিয়ের বয়স ১৮তে পুনর্নির্ধারণ : সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসন ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হবে। কোনো বিশেষ ব্যবস্থা ছাড়াই বিয়ের ক্ষেত্রে নারীর বয়স ১৮তে পুনর্নির্ধারণ করা হবে।
নিরাপদ সড়ক, যাতায়াত এবং পরিবহন : নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিশু-কিশোররা যে স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন গড়ে তুলেছিল তার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করে তাদের দাবিকৃত ৯ দফা দাবির আলোকে সড়ক আইন সংশোধন করা হবে।
প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হবে : প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হবে। প্রবাসী কর্মীরা দেশে ফিরে আসার পর তাদেরকে বিমানবন্দরে সর্বোচ্চ সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। মধ্যপ্রাচ্যে প্রবাসীকর্মীর মৃত্যুর ক্ষেত্রে লাশ সম্পূর্ণ সরকারি ব্যবস্থাপনায় দেশে আনা হবে।
সাংবাদিকদের মজুরি বোর্ড নিয়মিত করা হবে : একটি স্বাধীন প্রেস কাউন্সিলের অধীনে সব ধরনের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে। সাংবাদিকদের মজুরি বোর্ড নিয়মিত করা হবে। সংবাদপত্রকে শিল্প ঘোষণা করা হবে। সাগর-রুনিসহ সব সাংবাদিক হত্যার বিচার করা হবে।
মোবাইলের কলরেট কমানো হবে : মোবাইলের কলরেইট কমানো হবে। ইন্টারনেটের খরচ কমানো হবে। সারা দেশের ভূমি রেকর্ড পুরোপুরি ডিজিটাল করা হবে।
সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ : সন্ত্রাসবাদ এবং জঙ্গিবাদের প্রতি জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর হস্তে তা দমন করবে।
ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী : সংখ্যালঘুদের মানবিক মর্যাদা অধিকার নিরাপত্তা এবং সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে। সংখ্যালঘুদের ওপর যেকোনো রকম হামলার বিচার হবে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে।
ক্রীড়া ও সংস্কৃতি : দেশের ক্রীড়া সংস্থাগুলোকে রাজনীতির বাইরে পেশাগতভাবে গড়ে তোলা হবে। ভিন দেশীয় ক্ষতিকর সাংস্কৃতিক আগ্রাসন থেকে নাগরিকদের রক্ষা করায় দৃঢ়ব্যবস্থা নেয়া হবে। নিজস্ব সংস্কৃতি রক্ষা এবং প্রসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বর্তমান সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ হবে না : বর্তমানে চলমান কোনো উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ করা হবে না, তবে বর্তমান সরকারের শেষ দুই বছরে তড়িঘড়ি করে নেয়া প্রকল্পগুলো পুনর্বিবেচনা করার জন্য কমিটি গঠন করা হবে।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকার্যক্রম চলমান থাকবে : যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকার্যক্রম চলমান থাকবে। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে স্বাধীনতাযুদ্ধে শহীদদের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে।
প্রতিরক্ষা : রাজনৈতিক নেতৃত্বের অধীনে একটি জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠন করা হবে।
সব বিতর্ক এবং রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রেখে সশস্ত্র বাহিনীকে একটি দক্ষ এবং পেশাদার বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার কাজ অব্যাহত থাকবে। প্রতিরক্ষা বাহিনীর জন্য প্রয়োজনীয় যুদ্ধাস্ত্র এবং অন্যান্য সব সরঞ্জাম অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কেনা হবে। জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী সশস্ত্রবাহিনীর অংশগ্রহণের পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো হবে।
পররাষ্ট্রনীতি : সবার সাথে বন্ধুত্ব ও কারো সাথে বৈরিতা নয় নীতিতে পররাষ্ট্রনীতি পরিচালিত হবে। সমতার ভিত্তিতে ভারতের সাথে সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরো শক্তিশালী করায় পদক্ষেপ নেয়া হবে। সব ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো জোরদার করা হবে। চীনের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’-এর যেসব প্রকল্পে দেশের জন্য লাভজনক বিবেচিত হবে সেগুলোতে বাংলাদেশ যুক্ত হবে। মুসলিম দেশগুলোসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের দেশগুলোর সাথে আলাদা আলাদা নীতির ভিত্তিতে সম্পর্ক উন্নয়ন করা হবে। তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, রোহিঙ্গা সমস্যাসহ অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান করা হবে।
হোটেল পূর্বাণীতে ইশতেহার প্রকাশের মূলমঞ্চে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জেএসডির আ স ম আবদুর রব, শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মহসিন মন্টু, রেজা কিবরিয়া, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য সংস্থার ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
ইশতেহার ঘোষণার এই অনুষ্ঠানে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক মোস্তাহিদুর রহমান, মোস্তফা জামান আব্বাসী, অধ্যাপক সদরুল আমিন, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ, কবি আবদুল হাই শিকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির সিনিয়র নেতা রফিকুল ইসলাম মিয়া, আবদুল আউয়াল মিন্টু, অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক সাহিদা রফিক, অধ্যাপক তাজমেরী এ ইসলাম, অধ্যাপক সুকোমাল বড়ুয়া, রুহুল আলম চৌধুরী, শাহজাদা মিয়া, এনামুল হক চৌধুরী, গণফোরামের জগলুল হায়দার আফ্রিক, আওম শফিক উল্লাহ, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, জাহেদ উর রহমান, গণদলের গোলাম মওলা চৌধুরীসহ পেশাজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা