০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


বিশ্বকাপ ২০১৮ : ১০ রেকর্ড

বিশ্বকাপ ২০১৮ : ১০ রেকর্ড - ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে রাশিয়া শুরু করেছিল পাঁচটি গোল দিয়ে। তারপর টুর্নামেন্ট যত গড়িয়েছে, একের পর এক অঘটনের সাক্ষী থেকেছে রাশিয়া। আত্মঘাতী গোলে কখন মরক্কোর কাছে পরাস্ত হয়েছে ইরান, তো কখনো গতবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানদের প্রথম ম্যাচেই হারিয়েছে মেক্সিকো।পতনের যন্ত্রণা থেকে উত্থানের আবেগ, সবই ছিল ভরপুর। নেইমার, মেসি, রোনাল্ডোদের বিদায়ের সঙ্গে ক্রমেই এ বিশ্বকাপের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল ‘অঘটন’ শব্দটি। এমনকী ক্রোয়েশিয়ার ফাইনালে পৌঁছানোও তো অঘটনের থেকে কম কিছু নয়। এ বিশ্বকাপে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে, যা আগে কখনও দেখেনি বিশ্ববাসী। টানা একমাস ধরে চলা দ্য গ্রেটেস্ট শোয়ে পর্দা পড়ল আজ। চলুন ফিরে দেখা যাক, এবারের বিশ্বকাপ ফুটবলপ্রেমীদের জন্য কী কী রেখে গেল।

১. ১৯৫৮ বিশ্বকাপের পর এই প্রথম টুর্নামেন্টে ফাইনালের নির্ধারিত সময়ে ছটি গোল হলো।

২. ১৯৯৮ সালে ছ’টি আত্মঘাতী গোল হয়েছিল৷ ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে সংখ্যাটা ছিল পাঁচ৷ কিন্তু এবারের বিশ্বকাপে ১২টি গোলের পাশে লেখা রইল ‘আত্মঘাতী’৷

৩. ১৯৫৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে প্রথম টিনএজার হিসেবে গোল করে নজির গড়েছিলেন কিংবদন্তি পেলে৷ রোববার লুঝনিকিতে ফুটবলের জাদুকরকে ছুঁয়ে ফেললেন ফরাসি কিলিয়ান এমবাপে৷ এদিন ম্যাচের শেষ গোলটি আসে এই তরুণ তুর্কির পা থেকে৷

৪. এবারের বিশ্বকাপ ফাইনালেই প্রথমবার আত্মঘাতী গোল হলো৷ ক্রোট স্ট্রাইকার মান্ডজুকিচের নামের পাশেই লেখা থাকল সেই দুঃস্বপ্নের রেকর্ডটি৷

৫. ২০০৬ বিশ্বকাপে শেষবার বিশ্বকাপের ফাইনালের নির্ধারিত সময়ে পেনাল্টি থেকে গোল হয়েছিল৷ গোলদাতা ছিলেন জিনেদিন জিদান৷ সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটালেন এক ফরাসি তারকাই। জিদানের উত্তরসূরি হিসেবে এদিন পেনাল্টি থেকে গোল করেন অ্যান্তোনিও গ্রিজম্যান৷

৬. ১৯৭০ বিশ্বকাপে ইটালিকে ৪-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ব্রাজিল৷ তারপর এই প্রথম কোনো দল বিশ্বকাপে চারটি গোল করল৷

৭. ২০০২ সালে লাতিন আমেরিকার দেশ হিসেবে বিশ্বজয়ীর শিরোপা উঠেছিল ব্রাজিলের মাথায়৷ তারপর গত ১৬ বছর ধরে ইউরোপেই রয়েছে সোনার পরি৷ ইতালি, স্পেন, জার্মানির পর এবার ফ্রান্সের ঘরে উঠল ট্রফি৷

৮. এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে তরুণ দল ছিল ফ্রান্স৷ দলের আটজনের বয়সই ১৯ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে৷ টুর্নামেন্টের সেরা তরুণ ফুটবলারের শিরোপা পেলেন কিলিয়ান এমবাপে৷ গত বিশ্বকাপেও এক ফরাসি তারকার হাতেই উঠেছিল এই পুরস্কার৷ তিনি পল পোগবা৷

৯. বিশ্বকাপে প্রথমবার ব্যবহৃত হলো ভিএআর৷ ফাইনালে পেনাল্টির সিদ্ধান্তও হলো এই ভিএআর-এর সাহায্য নিয়েই৷

১০. এই প্রথমবার বিশ্বকাপে চারজন পরিবর্ত নামানোর সুযোগ পেলেন কোচেরা৷ নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ম্যাচ এক্সট্রা টাইমে গড়ালে চতুর্থ ফুটবলারের পরিবর্ত নামানোর অনুমতি মিলল৷

আরো পড়ুন :
জিদানের পর পগবা : ফ্রান্সের বিশ্বকাপ জয়ে মুসলিমদের ভূমিকা

রফিকুল হায়দার ফরহাদ, রাশিয়া থেকে

মুসলিম দেশ গুলোর বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালে খেলার সুযোগ কখনো হয়নি। সর্বশেষ ২০০২ জাপান -দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল পর্যন্ত যাওয়া তুরস্ক শেষ পর্যন্ত তৃতীয় হয়েছিল। এটাই মুসলিম দেশগুলোর বিশ্বকাপে সেরা অর্জন। অবশ্য মুসলিম দেশগুলো ফাইনালে না গেলেও ফাইনালে খেলার সুযোগ হয়েছে মুসলমান ফুটবলারদের। এবং এই ফাইনালে গোল আছে একাধিক। এত দিন ফাইনালে গোল করা একমাত্র মুসলমান ফুটবলার ছিলেন ফ্রান্সের জিনেদিন ইয়াজিদ জিদান। রোববার সেই কৃতিত্বে ভাগ বসালেন পল পগবা। জিদানের মতোই তিনি ফরাসি ফুটবলার। একই সাথে মিডফিল্ডারও।

১৯৯৮ সালে ফ্রান্স নিজ মাঠে বিশ্বকাপ জয় করে। ফাইনলে তারা ৩-০-এ কাবু করে ব্রাজিলকে। সেই ম্যাচে জোড়া গোল ছিল জিদানের। ২৭ মিনিটে ও প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে তার দুই গোল। আলজেরিয়ান বংশোদ্ভ’ত জিদান দুই গোলই করেন হেড থেকে। লক্ষণীয় বিয়ষ দুটিরই উৎস ছিল কর্নার। দুই ক্ষেত্রেই ব্যর্থ ব্রাজিলের ডিফেন্ডাররা। মূলত জিদানের ওই জোড়া গোলই ফাইনাল থেকে ছিটকে ফেলে রোনালদোর -বেবেতোর দেশকে। ৯৩ মিনিটে ব্রাজিলের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকেছিলেন ইমানুয়েল পেতিত।

রোববার মস্কোর লুজনিকি স্টেডিয়ামে রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালেও পল পগবার গোল লড়াইয়ের শক্তি শেষ করে দেয় ক্রোয়েটদের। এর আগ পর্যন্ত ২-১ এ এগিয়ে ছিল ফ্রান্স। ৫৬ মিনিটে পল পগবার বক্সের উপর থেকে নেয়া শট এক প্রকার নিশ্চিত করে ফরাসিদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ। এরপর নতুন পেলে খ্যাত ইলিয়ান এম্বাপে চতুর্থ গোল করে ক্রোয়েশিয়ার সব আশাই শেষ করে দেন। যদিও গোল রক্ষক হুগো লরিচের ভুলে ক্রোয়েশিয়ার মানজুকিচ ব্যবধান কমান। ৯০ মিনিট শেষে স্কোর লাইন ৪-২ থাকায় জিদানের মতোই কার্যকরী হয় পল পগবার গোল। চ্যাম্পিয়নশিপের আনন্দ উদযাপন করা হলো তার।

বিশ্বকাপে এটি পল পগবার দ্বিতীয় গোল। ২০১৪ বিশ্বকাপে তার গোল ছিল নাইজেরিয়ার বিপক্ষে। সেই ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচও হন তিনি। সেই আসরের সেরা উদিয়মান ফুটবলার ছিলেন পগবা। রোববার অবশ্য ফাইনাল সেরা হন গ্রিজম্যান। ফ্রান্সের লিড নেয়া আত্মঘাতী গোল গ্রিজম্যানের ফ্রি-কিক থেকেই।তা মানজুকিচের মাথার ছোঁয়া নিয়ে জালে জড়ায়। এরপর পেনাল্টি থেকে গোল গ্রিজম্যানের। কাল তিনি এবং এম্বাপে আদায় করেন এই বিশ্বকাপে চতুথৃ গোল। তারা চারটির বেশি গোলঅ না পাওয়ার ৬ গোল দিয়ে গোল্ডন বুট জয করে নেন ইংল্যান্ডের হ্যারি কেন। ১৯৯৮ সালের ফাইনালে ম্যাস সেরার পুরস্কার গিয়েছিল জিদানের দখলে।

জিদান , পগবা ছাড়াও বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ নেয়া মুসলিম ফুটবলার হলেন জার্মানির মেসুত ওজিল ও সামি খেদিরা। ২০১৪ এর চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য তারা। মেসুত ওজিলের ফাইনাল খেলা হলেও সাইড বেঞ্চে ছিলেন সামি খেদিরা।


আরো সংবাদ



premium cement