১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলকদ ১৪৪৫
`


তথ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ নয়

জানতে দিলে স্বচ্ছতা বাড়বে

-

মানুষের মৌলিক চাহিদার মধ্যে তথ্য অধিকার এখনো স্থান পায়নি। তবে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে যেভাবে দাবি উঠছে এটিও অদূর ভবিষ্যতে মানুষের মৌলিক অধিকারের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে বলে আশা করা যায়। মানুষকে তথ্য জানা থেকে বঞ্চিত করে দেশে দেশে ক্ষমতাসীনরা যেভাবে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করছে সেটি আশঙ্কাজনক। এভাবে সত্য গোপন রেখে কিন্তু কারো জন্যই ভালো কিছু হচ্ছে না। বরং অনেকসময় সেটি সবারই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) করোনা মহামারী মোকাবেলায় সরকারি ব্যবস্থাপনা নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, এ বিষয়ক অনেক তথ্য প্রকাশ হতে দিতে চাইছে না সরকার। এর ফলে দায়িত্ব পালনে সরকার দক্ষতার পরিচয় দিতে পারছে এমন লক্ষণ নেই। বরং ফল হচ্ছে উল্টো। দুর্নীতি, ত্রুটি-বিচ্যুতি ঘটছে বেশি।
টিআইবির গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল টিকা সংগ্রহ, টিকাদান কর্মসূচি, পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন কার্যক্রম পর্যালোচনা করা। গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত সময়ে আট বিভাগের ৪৩ জেলার এক হাজার ৩৮৭ জনের ওপর গবেষণা পরিচালনা করে তারা। লক্ষ্য ছিল সুশাসনে ঘাটতির দিকটি তুলে ধরা। টিকা সংগ্রহের প্রথম দিকে সরকার কেবল একটি উৎসের ওপর নির্ভর করেছে। এ জন্য তারা তৃতীয় একটি পক্ষকে নিযুক্ত করে। এ ব্যাপারে সরকারের মধ্যে স্বচ্ছতা ছিল না। প্রকৃতপক্ষে কোন প্রক্রিয়ায় বিদেশী একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি হচ্ছে সেটি জনসমক্ষে প্রকাশ হয়নি। সরকার ও দেশীয় কোম্পানিটির কার্যক্রম নিয়ে সবাই প্রায় একধরনের অন্ধকারে ছিলেন। কারণ এসব তথ্য জানার ব্যাপারে সাংবাদিকদের কোনো সুযোগ ছিল না। শেষ পর্যন্ত ব্যাপারটি যে ক্ষতিকর হয়েছে সেটি এখন বুঝতে আর কারো বাকি নেই। চুক্তিতে কোনো গ্যারান্টি ক্লজ ছিল না। অন্য দিকে ভিন্ন উৎস থেকে টিকা সংগ্রহ করার পথও রুদ্ধ করা ছিল। এ কারণে দেশের টিকাদান কর্মসূচি শেষ পর্যন্ত মুখ থুবড়ে পড়েছে।
টিআইবি তথ্যপ্রবাহ মুক্ত করার গুরুত্ব তুলে ধরেছে। তারা বলেছে, স্বাস্থ্য বিভাগের অনিয়ম-দুর্নীতি প্রকাশ হয়ে পড়ার পর সরকার মনোযোগ দিয়েছে তথ্য নিয়ন্ত্রণে। অথচ সরকারের উচিত ছিল দুর্নীতি রোধে মনোযোগী হওয়া। আর যেসব সাংবাদিক দুর্নীতির খবর জনসম্মুখে নিয়ে আসছিলেন তাদের কাজ আরো সহজ করে দেয়া। স্বাস্থ্য বিভাগের অনিয়ম-দুর্নীতি প্রকাশকারী একজন সাংবাদিকের ওপর সরকারের খড়গ নেমে এলো। সাংবাদিকদের তথ্য সরবরাহের সুযোগ করে দেয়ার ওপর গুরুত্ব দিতে চাই আমরা। এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে তথ্য জানার ব্যাপারে বিচার বিভাগের নির্দেশনা উল্লেখ করা যেতে পারে। গত শনিবার দেশটির বিচার বিভাগ এক বিবৃতিতে সেটি প্রকাশ করেছে। তাদের নতুন নির্দেশনায় সাংবাদিকের তথ্য জানার অধিকার আরো সুরক্ষিত হয়েছে। এখন থেকে তথ্য ফাঁসের জন্য তথ্যদাতার নাম জানাতে সাংবাদিককে আইনি বাধ্যবাধকতায় ফেলা যাবে না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশনা অনুযায়ী এতদিন সাংবাদিকদের ওপর তথ্যদাতার নাম জানানোর আইনি বাধ্যবাধকতা ছিল।
আমাদের দেশে তথ্য অধিকার আইন আছে; কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, সে আইন চর্চার সুযোগ সীমিত। এ আইন হওয়ার আগে সাংবাদিক কিংবা সাধারণ নাগরিকদের সরকারি কর্মকাণ্ড বিষয়ে যতটা তথ্য পাওয়ার সুযোগ ছিল এখন সেটুকুও নেই। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছে সাধারণ কোনো তথ্য জানাও কষ্টসাধ্য। প্রশাসনের যেসব কর্মকর্তা অনিয়ম-দুর্নীতি করতে চান তারা তথ্য গোপন করতে চান। এতেই তাদের লাভ। টিআইবি করোনা ব্যবস্থাপনা বিষয় গবেষণা করতে গিয়ে তথ্য নিয়ন্ত্রণের যে ধারণা পেয়েছে তা সরকারের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রযোজ্য। তথ্য সংগ্রহে সাংবাদিকদের সুযোগ অবারিত হওয়াই সবার জন্য কল্যাণকর। এতে যেকোনো বিষয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যায়। সুতরাং দেশের স্বার্থে তথ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করুন।


আরো সংবাদ



premium cement
জেলেনস্কিকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে উত্তাল ইউক্রেন ‘শয়তানের নিঃশ্বাস‘ নামের যে ড্রাগ প্রতারণায় ব্যবহার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে মার্কিন বিমানবাহিনীর সদস্য নিহত পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে বিএনপির সমাবেশ শুরু টঙ্গীতে ৩ তলার ছাদ থেকে পড়ে বিএনপি নেতার ছেলের মৃত্যু মালদ্বীপ থেকে সব সৈন্য প্রত্যাহার করেছে ভারত জামিন পেলেন কেজরিওয়াল, তবে ভোটগণনার দিন থাকতে হবে জেলেই পরকীয়া প্রেমিক যুগলের গলায় জুতার মালা : চেয়ারম্যান বরখাস্ত সমাবেশে যোগ দিতে নয়াপল্টনে জড়ো হচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা রংপুরে রেয়াত পদ্ধতি চালুসহ ৪ দফা দাবিতে মানববন্ধন নতুন কোচের সন্ধানে বিসিসিআই, তাহলে কি দ্রাবিড়ের বিদায়!

সকল