২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বঙ্গবন্ধু রেলসেতু নির্মাণ শুরু

ব্যয় ও মেয়াদ বেড়েছে আঁতুড়ঘরেই

-

যমুনা নদীর ওপর তৈরি হচ্ছে আরেকটি রেলসেতু। বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে নির্মিতব্য ডাবল লেনের এই সেতুর দৈর্ঘ্য হবে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার। স্বল্পমূল্যে পণ্য ও জনপরিবহন নিশ্চিত করতে শক্তিশালী যোগাযোগ নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে সরকার এই রেলসেতু তৈরি করছে। এটি হবে দেশের সবচেয়ে বড় রেলসেতু। গত রোববার সেতুর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘ভবিষ্যতে ট্রান্সএশিয়ান রেলওয়ের সাথে যখন আমরা সংযুক্ত হবো, তখন এই সেতু আমাদের জন্য বিরাট কাজ দেবে।’
মূলত চীন থেকে শুরু করে বাংলাদেশ হয়ে ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান হয়ে ইউরোপের সাথে যুক্ত হবে ট্রান্সএশিয়ান রেলওয়ে। ওই প্রকল্পের সাথে যুক্ত হওয়া বিশ্বায়নের এই যুগে আমাদের জন্য জরুরি। আর সে জন্য প্রাথমিক অবকাঠামো নির্মাণের প্রয়োজন আছে। বঙ্গবন্ধু রেলসেতু তেমনই একটি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো হবে তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু বর্তমান সরকারের সময়ে একেকটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে যে দীর্ঘসূত্রতা এবং দফায় দফায় ব্যয় বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা যায়, এই প্রকল্পও তার থেকে ব্যতিক্রম হবে বলে মনে হচ্ছে না। প্রকল্পটি পাস হয়েছিল ২০১৬ সালে। আর কাজ শুরু হতে সময় লাগল ঠিক চার বছর। প্রাথমিকভাবে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। আঁতুড়ঘরে থাকতেই সেই ব্যয় এক লাফে বেড়ে হয়ে গেছে ১৬ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭২ শতাংশ জাপান এবং বাকিটা বাংলাদেশ সরকার দেবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জাইকা। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০২৩ সাল পর্যন্ত। সেই মেয়াদও কাজ শুরুর আগেই বাড়ানো হয়েছে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর কাজ শুরু হলে কত দফায় ব্যয় ও মেয়াদ বাড়তে থাকবে তা অনুমান করার সাধ্য কারো নেই।
তবে প্রকল্পের যৌক্তিকতা প্রমাণে যেসব বক্তব্য সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে সেগুলো যথার্থ। বলা হয়েছেÑ এখন বঙ্গবন্ধু সড়ক সেতুতে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করতে পারে। একমুখী যাতায়াত এবং ধীরগতির কারণে বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে দিনে মাত্র ৪৪টি ট্রেন চলাচল করে। নতুন সেতুতে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলতে পারবে। এর ওপর দিয়ে যেকোনো ওজনের মালবাহী ও যাত্রীবাহী ট্রেন চলতে পারবে। এই সেতুর ওপর দিয়ে একাধিক লোকোমোটিভ বা ইঞ্জিন দিয়ে ট্রেন চালানো যাবে। সাধারণত মালবাহী ট্রেনগুলোকে প্রায়ই দু’টি ইঞ্জিন দিয়ে টানতে হয়। বর্তমান সেতুতে সে সুযোগ নেই। ইঞ্জিন মেরামত করার জন্য সেটিকে অন্য আরেকটি ইঞ্জিন দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থাও বঙ্গবন্ধু সেতুতে নেই। যে কারণে পার্বতীপুরের কারখানায় মেরামতের জন্য ইঞ্জিন নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। এই সেতুতে সেটি সম্ভব হবে।
নতুন রেলসেতুর বৈশিষ্ট্যও হবে অনন্য। এটি ওয়েদারিং স্টিল দিয়ে তৈরি হবে। এখনকার সেতুগুলো দুই-তিন বছর পরপর রঙ করতে হয়। নতুন সেতুটি কখনো রঙ করতে হবে না। এই সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ খরচ হবে প্রায় শূন্য। সেতুর ফাউন্ডেশনে জাপানের একটি প্রযুক্তি ব্যবহার হবে, যে প্রযুক্তি জাপানের বাইরে খুব কম ব্যবহৃত হয়। রেললাইনগুলো চাকার ঘর্ষণে ক্ষয়ে যাওয়া কমাতে বিশেষ উপকরণ ব্যবহার করা হবে। তাই লাইনগুলো কম পরিবর্তন হবে। সেতুর সংযোগস্থলে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে তাতে এর নিজের ওজন কম হবে।
সেতুর নির্মাণকাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন জানিয়েছেন, সরকার ভারতের সাথে বাংলাদেশের ট্রেন পরিচালনার কথা ভাবছে। এ জন্য চিলাহাটি-হলদিবাড়ি সাত কিলোমিটার রেললাইন সংযোগ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ১৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে ভার্চুয়াল বৈঠকে এই রেল সংযোগ উদ্বোধন করবেন বলেও মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন। এটি চালু হলে ঢাকা থেকে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি পর্যন্ত ট্রেন চালু হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
ট্রাম্পের বিচার হবে কি না তা নিয়ে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট চুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত, ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত আমদানি ব্যয় কমাতে দক্ষিণাঞ্চলের সূর্যমুখী তেলের আবাদ পাকুন্দিয়ায় গানের আসরে মারামারি, কলেজছাত্র নিহত আবারো হার পাকিস্তানের, শেষ সিরিজ জয়ের স্বপ্ন পাটকেলঘাটায় অগ্নিকাণ্ডে ৩ দোকান পুড়ে ছাই ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শুরু দোয়ারাবাজারে পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা : স্বামীর আমৃত্যু কারাদণ্ড গাজীপুরে ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার ভারতে দ্বিতীয় পর্বে ৮৮ আসনে ভোট খালেদা জিয়ার সাথে মির্জা ফখরুলের ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক

সকল