২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন না দুর্গতরা

বন্যা ব্যবস্থায় পরিবর্তন দরকার

-

অব্যাহত ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে দেশের প্রধান প্রধান নদীর পানি ফের বাড়তে শুরু করায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী, আগামী দুই-তিন দিন দেশের বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হবে। বাংলাদেশের উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৩০০ মিলিমিটারের উপরে ও শিলংয়ে ২০০ মিলিমিটারের উপরে বৃষ্টি হয়েছে। ওই পানি আগামী এক থেকে দুই দিনের মধ্যে বাংলাদেশের দিকে আসবে। আবহাওয়া অধিদফতরের হিসাবে, দেশের ভেতরে পঞ্চগড়েও ১১৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আজ দেশের বেশির ভাগ এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হতে পারে। এই ভারী বৃষ্টি ও ঢলে এক সপ্তাহে সিলেট, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও দেশের উত্তরাঞ্চলের বেশির ভাগ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হবে। এক সপ্তাহের মধ্যে কমপক্ষে ২৫টি জেলায় বন্যার পানি প্রবেশ করতে পারে। এতে বন্যায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়তে পারে। ফের পানিবন্দী হওয়ার আশঙ্কায় মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, উঁচু জায়গা এবং আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিচ্ছে। তবে আশ্রয়কেন্দ্রে দুর্গতরা তেমন যাচ্ছেন না বলে গণমাধ্যমের খবরে প্রকাশ। জাতিসঙ্ঘের হিসাবে, ২০১৮ সালের বন্যায় প্রায় ৭৬ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত ও পানিবন্দী হয়ে পড়েছিল। মানুষ মারা গিয়েছিল ১০০ জনের উপরে। বাড়িঘর, ফসল ও গবাদিপশুরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। এবারের বন্যায়ও ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সরকারি তথ্যমতে, বন্যায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫ লাখ মানুষ পানিবন্দী ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সারা দেশে ৭২৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হলেও সেখানে ৯ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। দৈনিক দুর্যোগ পরিস্থিতি প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ১৫টি জেলায় বন্যায় ১২ লাখ ২৪ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত এবং দুই লাখ ২২ হাজার মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় আছে, যার অর্ধেকের বেশি সুনামগঞ্জে। বন্যাকবলিত জেলাগুলোতে সামগ্রিকভাবে আশ্রয়কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত মানুষের আশ্রয় নেয়ার পরিমাণ কম। সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে কম যাওয়ায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে সমস্যা হচ্ছে। কারণ, বন্যার্ত মানুষেরা বিচ্ছিন্নভাবে সড়কে ও বাঁধে আশ্রয় নেয়ায় তাদের কাছে ত্রাণ পৌঁছানো যাচ্ছে না। তবে অনেক স্থানে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে কি না, তা বন্যার্ত মানুষ জানে না বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে সড়কে ও বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে তারা। এতে এক দিকে বন্যার্ত মানুষের কষ্ট যেমন বাড়ছে, অন্য দিকে সড়ক-বাঁধগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে একটি প্রবণতা লক্ষণীয়, বন্যার সময় মানুষ সাধারণত নিজেদের বাড়ির আশপাশে কোনো উঁচু স্থান বা বাড়ি পেলে সেখানে গিয়ে আশ্রয় নেয়। বাড়িতে থাকা সম্পদ ও গবাদিপশু রেখে তারা দূরে কোথাও যেতে চায় না। এ জন্য দেশের বর্তমান বন্য ব্যস্থাপনা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই দরকার আমাদের প্রথাগত আশ্রয়কেন্দ্রের ধারণা থেকে সরে এসে প্রতিটি এলাকায় যাতে কিছু বাড়ি উঁচু ও পাকা করা যায়, সেই ব্যবস্থা করা। এ ছাড়া উন্নত দেশগুলোতে দুর্যোগের সময় কমিউনিটি সেন্টারগুলো দুর্গতদের আশ্রয়ের জন্য খুলে দেয়া হয়। তাই দেশের প্রতিটি এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনাকে যাতে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে কাজে লাগানো যায়, সেই পরিকল্পনা করতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
দিনাজপুরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষ, চালক-হেলপার নিহত মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ সখীপুরে বৃষ্টির জন্য অঝোরে কাঁদলেন মুসল্লিরা দক্ষিণ ভারতে কেন কাজ করেনি বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নতুন আংশিক কমিটি বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসায় বিনিয়োগ সম্ভাবনা অন্বেষণে থাইল্যান্ডের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান ট্রাম্পের বিচার নিয়ে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট চুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত, ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত আমদানি ব্যয় কমাতে দক্ষিণাঞ্চলের সূর্যমুখী তেলের আবাদ পাকুন্দিয়ায় গানের আসরে মারামারি, কলেজছাত্র নিহত আবারো হার পাকিস্তানের, শেষ সিরিজ জয়ের স্বপ্ন

সকল