জাতীয় ঐকমত্যের সময় এটা
- ০৬ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০
জাতীয় অর্থনীতির ওপর করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব কাটিয়ে উঠতে ৬৭ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে শুধু তৈরী পোশাক খাতের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন তিনি। নতুন চারটিসহ মোট পাঁচটি প্যাকেজে আর্থিক সহায়তার পরিমাণ ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা, যা দেশের জিডিপির প্রায় ২ দশমিক ৫২ শতাংশ। গতকাল রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রী তার এই কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ৭০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য দিয়ে আটজনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছেন। বলেছেন, মৃতদের প্রত্যেকেরই বয়স ৭০ বছরের উপরে। সরকারিভাবে যেসব মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হচ্ছে তার বাইরেও করোনাভাইরাসে সংক্রমণের লক্ষণ নিয়ে অনেকে মারা যাচ্ছেন। বলা হচ্ছে, তারা ব্রেন স্ট্রোক বা হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। এক ব্যক্তির মৃত্যুর সনদে এবং মেডিক্যাল রিপোর্টে ভিন্ন দুই কারণ দেখানো হয়েছেÑ এমন খবরও গণমাধ্যমে এসেছে। ফলে করোনায় মৃত্যুর সঠিক তথ্য জাতি জানতে পারছে কি না, সে বিষয়ে সংশয়ের কারণ আছে। অনুমান করা যায়, পরিস্থিতি মোটেই ভালো নয়। বাংলাদেশে এমনকি, লাখ লাখ মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক কোনো কোনো সংস্থা। সে হিসাব হতে পারে অতিরঞ্জিত। কিন্তু আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে সর্বাত্মক। সে ক্ষেত্রে দৃশ্যমান ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। যত লোককে করোনার পরীক্ষা করা দরকার, তার ধারেকাছেও নেই আমাদের পরীক্ষা ব্যবস্থা। লাখো মানুষ পরীক্ষার জন্য টেলিফোন করে অপেক্ষায় আছেন। অনেককে মৃত্যুর পর পরীক্ষা করা হচ্ছে। এসব অসঙ্গতি যত দ্রুত সম্ভব কাটিয়ে ওঠা জরুরি। কারণ, পরিস্থিতি একবার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে সামাল দেয়ার সুযোগ থাকবে না।
এই প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় অর্থনীতিতে করোনার প্রভাব মোকাবেলায় যে প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন তা সময়োচিত পদক্ষেপ। পাঁচটি পৃথক প্যাকেজের আওতায় তিনি যে প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে গার্মেন্টসহ শিল্প খাত উপকৃত হবে। তখন করোনার ধকল সামলে নিতে পারবে।
শিল্প খাত ছাড়াও সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের কথাও সরকারকে ভাবতে হবে এবং তা এখনি। মানুষ এখন বেরুচ্ছে না। হাট-বাজার, দোকানপাট, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, গণপরিবহন সবই বন্ধ রয়েছে। ফলে তৃণমূলের প্রান্তিক মানুষ যারা রিকশা চালিয়ে, কায়িক শ্রম দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে তাদের চরম সঙ্কট মোকাবেলা করতে হচ্ছে। সরকার ১০ টাকা দরের চাল এবং ন্যায্যমূল্যে পণ্যসামগ্রী বিক্রির কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সেটি কেবল শহর পর্যায়ে সীমিত রয়েছে। এই কার্যক্রম সারা দেশে চালু করা দরকার।
সাধারণ নি¤œবিত্ত মানুষের সবচেয়ে বেশি দরকার খাদ্য। রাজধানীতে বহু মানুষ নিজেদের উদ্যোগে নি¤œবিত্তদের মধ্যে খাবার ও অন্যান্য নিত্যদ্রব্য বিলাতে শুরু করেছে। মানুষের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে অনেক স্বেচ্ছাসেবী ও সামাজিক সংগঠন। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলেও অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান বিপুল অর্থ সাহায্য দিচ্ছে। পরিস্থিতি যত প্রতিকূলই হোক না কেন, তার মোকাবেলা করতেই হবে। আর এটি জাতীয় পর্যায়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে করা সমীচীন। ভারতে মোদি সরকার সব দলের লোকদের নিয়ে সভা ডেকেছে। তারা জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে করোনাভাইরাস মোকাবেলা করার উদ্যোগ নিয়েছে। আমাদের দেশেও একই রকম উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন । বিএনপি এরই মধ্যে সরকারকে সহায়তা করার ইচ্ছার কথা জানিয়েছে। অর্থনীতির সম্ভাব্য মহাদুর্যোগ মোকাবেলায় ৮৭ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের প্যাকেজ প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। জাতীয় দুর্যোগের সময় জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয়া হবে, এমনটাই জাতির কাম্য।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা