৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ভোটে অনীহা, ভোটারশূন্য কেন্দ্র

নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতা স্পষ্ট

-

বাংলাদেশে নির্বাচনে এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন তার ‘সব প্রস্তুতি’ নিয়ে ভোটের আয়োজন করলেও ভোটাররা কেন্দ্রে আসতে আগ্রহ পাচ্ছেন না। সহযোগী একটি দৈনিক এক প্রতিবেদনে লিখেছে, সদ্য সমাপ্ত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে একটি কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন মাত্র তিনজন। অন্য দু’টি কেন্দ্রে সারা দিনে ভোট পড়েছে পাঁচ-সাতটি। সিটি নির্বাচনের পর প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনেও একই অবস্থা দেখা যাচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছেÑ এসব নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে আসলে কী অর্জন হয়েছে। প্রত্যেকটি নির্বাচনে সরকারের তহবিল থেকে বিপুল অর্থ খরচ হচ্ছে। ভোটারই যদি উপস্থিত না থাকেন, তাহলে এত অর্থ খরচ করার কী প্রয়োজন থাকতে পারে। এমন প্রশ্ন এর মধ্যে উঠেছে।
উপজেলা নির্বাচনে এক অস্বাভাবিক অবস্থা দেখা যাচ্ছে। খবরে জানা যাচ্ছে, চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এ নির্বাচনে ৪৬০টি উপজেলার মধ্যে ২৪ শতাংশ উপজেলায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হচ্ছেন বিনা ভোটে। এমন অবস্থা এর আগে কখনো চিন্তাও করা যায়নি। অবস্থা এমন পর্যায়ে রয়েছে প্রার্থীরাও নিজেদের নির্বাচন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। শুধু উৎসাহ হারিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না, না জোর জবরদস্তির কোনো ব্যাপার রয়েছে সেটিও স্পষ্ট করে বোঝা যাচ্ছে না। কারণ, বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় জবরদস্তির এক ভিন্ন সংস্কৃতি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেখা যাচ্ছে। প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে ১৫ জন চেয়ারম্যানসহ ৩১ প্রার্থী জয় পেয়েছেন ভোট ছাড়া। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপে যথাক্রমে ২৫, ৩০ ও ৪০ জন প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। এ তিন ধাপে প্রায় শতাধিক প্রার্থী ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। কোনো উপজেলায় তিনটি পদের মধ্যে কেবল একটি পদের জন্য নির্বাচন আয়োজন হবে। প্রথম ধাপের নির্বাচনের অভিজ্ঞতা হচ্ছেÑ ভোটাররা কেন্দ্রে আসেননি। বিভিন্ন দৈনিকের সরেজমিন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দিনভর ভোটকেন্দ্রগুলো ছিল ভোটারশূন্য। সহযোগী একটি দৈনিক জয়পুরহাটের একটি ভোটকেন্দ্রের অবস্থা সরেজমিনে তুলে ধরে। সেখানে দেখা যাচ্ছেÑ বিভিন্ন ভোট কক্ষে বসে আছেন নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা ২২ কর্মকর্তা। রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১৪ জন সদস্যও। ভোট নেয়ার জন্য সবাই প্রস্তুত। প্রথম দেড় ঘণ্টায় এলেন তিন ভোটার, আর সারা দিনে ভোট পড়ে ৬৭টি। তাহলে ওই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ২ দশমিক ৫৮ শতাংশ। এটি একটি নারী ভোটকেন্দ্র হলেও অন্যান্য কেন্দ্রেও ভোটার উপস্থিতি একই ধরনের ছিল। যদিও কমিশন বলছেÑ নির্বাচনে অংশগ্রহণের হার ৩১ শতাংশের বেশি।
বোঝা যাচ্ছে, ভোটের যে পরিবেশ সেটি নেই। মানুষের মনে এ ধারণা বদ্ধমূল হয়ে গেছে যে, তার একটি ভোট আর প্রার্থী নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারণ করছে না। অর্থাৎ তিনি মনে করছেন, তার ভোটটির আর মূল্য নেই। এ কারণে তিনি আর ভোটকেন্দ্রমুখী হচ্ছেন না। এ ব্যাপার নির্বাচন কমিশনাররা বিভিন্ন দলকে দায়ী করলেও বাস্তবে কোনোভাবে তারা দায় এড়াতে পারে না। প্রজাতন্ত্রের ভোট গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে নির্বাচন কশিনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সরকার যখন একচেটিয়া প্রভাব খাটিয়েছে তখন অনেকে নির্বাচন কমিশনকে তাদের দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। তখন নির্বাচন কমিশন কোনোভাবে তাদের ডাকে সাড়া দেয়নি। এখন এক-একটি নির্বাচন একেবারে পণ্ড হয়ে যাচ্ছে। এই ধরনের নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রকৃতপক্ষে কোনো কমিশনের দরকার হয় না। সরকার চাইলে এভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠান করে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের জয়ী করিয়ে আনতে পারে। বাস্তবে এভাবে গণতন্ত্র বাঁচতে পারে না।

 


আরো সংবাদ



premium cement
শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে বিএনপি সংকল্পবদ্ধ বায়ুদূষণে শীর্ষে দিল্লি, ঢাকার অবস্থান কত? শৈলকুপায় মামাতো ভাইদের লাঠির আঘাতে ফুফাতো ভাই নিহত আমরা নিজের দেশেই অদৃশ্য : ভারতের মুসলিমরা যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেই গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৩৪ রাজনীতির মাঠে যেভাবে খেলছেন ইউসুফ পাঠান মার্কিন রণতরীতে হাউছিদের হামলা ধরপাকড়ের মধ্যেই ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ অব্যাহত যুক্তরাষ্ট্রে গুলিতে ৩ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা নিহত ফিলিপাইনের তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি, বাড়তে পারে আরো শিখ নেতা পান্নুনকে খুন করতে ‘হিটম্যান’ পাঠিয়েছিলেন ‘র অফিসার’ : ওয়াশিংটন পোস্ট

সকল