০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫
`


তফসিল ঘোষণার পরও ধরপাকড়

নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখা কঠিন হবে

-

একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রথম শর্ত হচ্ছেÑ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে সমান সুযোগ নিশ্চিত করা। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর যাতে সব প্রার্থী সমানভাবে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। এ কারণে নির্বাচন কমিশনকে প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রয়োগের অনেক সুযোগ দেয়া হয়েছে। প্রশাসন যাতে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করে এবং কোনো প্রার্থীর পক্ষে বা কারো বিপক্ষে অবস্থান নিতে না পারে, তা দেখার দায়িত্বও নির্বাচন কমিশনের। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন কতটা স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে তা নিয়ে ইতোমধ্যে বিভন্ন মহল থেকে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরও সারা দেশে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। তাদের নামে নতুন করে মামলা দেয়া হচ্ছে। আগে থেকেই বিরোধী দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ৯৩ হাজারের বেশি মামলা রয়েছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। এ ধরনের একটি মামলার তালিকা সংলাপের সময় প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব। এসব রাজনৈতিক মামলার আসামিরা আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি নাÑ এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। এখন নতুন করে যেভাবে ধরপাকড় শুরু হয়েছে তাতে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা ভয় পাচ্ছেন। সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগেও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে বা গ্রেফতার করে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার কৌশল নেয়া হয়েছিল।
নির্বাচন কমিশন ও ক্ষমতাসীন দল যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে আগ্রহী না হয়, তাহলে এ নির্বাচন অর্থহীন হয়ে পড়বে। প্রধানমন্ত্রী নিজে সংলাপে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিরোধী দলের দাবিগুলো নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে তার ওপর আস্থা রাখতে বলেছেন। এখন সেই আস্থার পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। এখন নির্বাচন কমিশন যদি সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে না পারে এবং এভাবে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার বন্ধে কার্যকর কোনো ভূমিকা গ্রহণ না করে, তাহলে শুরু থেকেই এ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। আমরা আশা করব, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করবে; সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করবে।


আরো সংবাদ



premium cement