৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ক্ষুদ্র শিল্পের নারীশ্রমিকের ব্যাপক বঞ্চনা

প্রতিকারে আর নয় বিলম্ব

-

বাংলাদেশের ক্ষুদ্র শিল্প কর্মসংস্থান ও জনগণের চাহিদা পূরণসহ জাতীয় অর্থনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই শিল্পে অসংখ্য শ্রমজীবী নিয়োজিত রয়েছেন, যাদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশই নারী। তবে খোদ রাজধানীতেও তাদের প্রতি বৈষম্য প্রকট। পুরুষ কর্মীদের বেতন নারীর তুলনায় তিন গুণ। এ শিল্পে নারীদের অবস্থান নেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর্যায়ে। কর্মস্থলেও যৌন হয়রানি করা হয় তাদের। ফলে অনেকে এই শিল্পে কাজ করা বন্ধ করে দিয়ে বেকার হয়ে পড়তে হয়। একটি সহযোগী দৈনিক পুরান ঢাকার সরেজমিন অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নারী শ্রমিকদের মানবেতর বঞ্চনা-দুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরেছে।
এই প্রতিবেদনে আরো জানানো হয়, নারীদের কারখানায় অতিরিক্ত খাটালেও নেই ওভারটাইম ভাতা। ছুটির দিন ছাড়া অন্য সময় জরুরি প্রয়োজনে অনুপস্থিত থাকলেও বেতন কেটে রাখা হয়। যেমনÑ একজন নারীশ্রমিক জ্বরে অসুস্থ থাকায় কাজে আসতে পারেননি চার দিন, কিন্তু এ সময়ের মজুরি তিনি পাননি। তাদের নেই মাতৃকালীন ছুটি। ক্ষুদ্র শিল্পে কর্মরত মহিলারা অভিযোগ করেন, তারা কখনো মালিক, কখনো সহকর্মীর নিপীড়নের শিকার। কর্মস্থলে যৌন হয়রানি এড়াতে কেউ কেউ ভিন্ন এলাকার একটি কারখানায় কাজ নিতে বাধ্য হয়েছেন। এমন এক নারীর নতুন কর্মস্থলে বেতন সপ্তাহে ৪০০ টাকা কম তো বটেই, ধুলো-ময়লা আর গরমও বেশি। ‘যতই কাম পারুক, নারীগো প্রমোশন অয় না। অগো আজীবন কাম কইরা যাইতে অয় ধুলা-ময়লার মইদ্যে।’ যিনি এ কথা বলেছেন, সেই নারী শ্রমিকের কোনো পদোন্নতি হয়নি সাত বছরেও। একই সময়ে একই কাজে যোগ দিয়ে পুরুষ সহকর্মী প্রমোশন পেয়ে এখন আয় করেন মাসে ১৬ হাজার টাকা। আর এ নারীর বেতন মাত্র এক হাজার ৬০০ টাকা। জুতা ও পলিথিন-প্লাস্টিক কারখানায় নারীশ্রমিক বেশি। তারা কাজ করেন একটানা ১২ ঘণ্টা। এর বিনিময়ে তাদের দেয়া হয় মাত্র এক হাজার থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা। নারীদের কাজের সুযোগ কম বাইরে। এ দিকে গঞ্জনা সইতে হয় ঘরে। তদুপরি স্ত্রী কাজ পেলে বেশির ভাগ স্বামীই কাজ করা ছেড়ে দেয়ায় পরিবারকে সে নারীর সীমিত আয়ের ওপর নির্ভর করতে হয়। অস্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশে নারীরা চর্মরোগ, শ্বাসকষ্ট, কাশি, প্রস্রাবের সমস্যা প্রভৃতি রোগে বেশি ভোগেন।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিআইএলএস) একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘নারীর প্রতি মজুরিবৈষম্য সমাজব্যবস্থা ও মালিকের মানসিকতার ফল। কর্মসংস্থানের সুযোগ কম বলে নারীরা ন্যায়সঙ্গত পারিশ্রমিক জোর দিয়ে দাবি করতে পারেন না।’ একজন বিশেষজ্ঞের অভিমত, ‘নারীরা আয় করলেও তাদের ক্ষমতায়ন হয়নি। অপর দিকে নারী কাজে নিয়মিত হলে পরিবারের পুরুষেরা হয়ে পড়েন অনিয়মিত।’
নারীর অবস্থার সামগ্রিকভাবে উন্নতি হয়েছে অনেক দিক দিয়ে। শিল্প ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়েছে। তবে ক্ষুদ্র শিল্পে নারীশ্রমিকের অবস্থা ও অবস্থান আজো সন্তোষজনক নয়। তাদের প্রতি অবহেলা ও বৈষম্য বজায় রেখে উৎপাদনশীলতা যেমন বাড়ানো সম্ভব নয়, তেমনি সামাজিক নানা সমস্যায় জাতিকে ভুগতে হবে। আশা করি শ্রম আইন প্রয়োগ এবং আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধনের মাধ্যমে সরকার সদিচ্ছার পরিচয় দিলে নারী শ্রমজীবীদের দুর্গতি অনেকটাই কমে আসবে।


আরো সংবাদ



premium cement
মানিকগঞ্জে আ’ লীগের ২ চেয়ারম্যান প্রার্থীর পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন গুচ্ছের ‘এ’ ইউনিটের ফল প্রকাশ হবিগঞ্জে হারুন হত্যা মামলা : ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১০ জনের যাবজ্জীবন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালগুলোতে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিক্ষোভে পুলিশের বাঁধা, আরাফাতের সমালোচনা বগুড়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নির্মাণ শ্রমিক নিহত পাঁচবিবিতে গাছের ডাল পড়ে পথচারীর মৃত্যু ঈশ্বরদীতে লোডশেডিংয়ে নাকাল জনজীবন গাজা যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪,৫৩৫ জনে পাঁচবিবিতে অপহরণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপহৃত উদ্ধার, আটক ৩ নারায়ণগঞ্জে তাপদাহে বিপর্যস্ত পশুপাখির পাশে টিম খোরশেদ দাগনভুঞায় হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি

সকল