২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
এসএমই ফাউন্ডেশনের বাজেট প্রস্তাব

আয়করের কালো আইন বাতিলের দাবি

আয়করের কালো আইন বাতিলের দাবি - ছবি : সংগৃহীত

প্রান্তিক কৃষক হতে বিভিন্ন প্রকার কৃষিজ পণ্য, ধান, ডাল, বাদাম, আলু, টম্যাটো, তরল দুধ, ডিম, মাছ, মাংশ, পেয়াজ, মরিচ, সরিষা ইত্যাদি উপকরণ ক্রয়ের বিপরীতে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে উৎসস্থলে কর কর্তন অব্যাহতি প্রদানের দাবি জানিয়েছে এসএমই ফাউন্ডেশন। বর্তমানে যেখানে ২ শতাংশ হারে উৎসে কর কর্তন করা হচ্ছে। পাশাপাশি সংস্থাটি আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ধারা ২(৩৪)(বি) এবং ধারা ৩০ (এএ)তে বর্ণিত কালো আইন বাতিলের প্রস্তাব করেছে।

আসন্ন ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটকে সামনে রেখে গতকাল সেগুনবাগিচাস্থ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) এই বাজেট প্রস্তাবনা দাখিল করেন এসএমই ফাউন্ডেশনের পক্ষে তাদের উপদেষ্টা লুৎফর রহমান। আগামী বাজেটের জন্য আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক খাতে মোট ৬২টি প্রস্তাব তারা দিয়েছে। আর চলতি অর্থবছর পর্যন্ত বাজেটে ফাউন্ডেশনের দেয়া প্রস্তাবনার মধ্যে ৫৭টি গৃহীত হয়েছে বলে এসএমই ফাউন্ডেশন জানায়।

এসএমই ফাউন্ডেশনের প্রস্তাবনা থেকে জানা গেছে, এবার তারা ঠিকাদারের বিল পরিশোধকালে একটি নিদিষ্ট হারে (২% হারে) উৎসে কর কর্তনের বিধান প্রবর্তন করার সুপারিশ করেছে। এছাড়া আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ধারা ২(৩৪)(বি) এবং ধারা ৩০ (এএ)তে বর্ণিত কালো আইন বাতিল করে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তন করা না হলে কর্তনকারী কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে সরল সুদসহ উৎস কর আদায়ের বিধান প্রণয়ন করা হোক। ধারা ২(৩৪)(বি) মোতাবেক উৎসে কর কর্তনের আওতায় রয়েছে এরূপ যেকোন পরিমাণ অর্থ আয় হিসেবে গণ্য করা এবং ধারা ৩০(এএ) মোতাবেক উৎসে কর কর্তন প্রযোজ্য কিন্তু যথারীতি কর কর্তন বা আদায় করা হয়নি এরূপ কোন খরচ শতভাগ বাতিল করে আয় হিসেবে যোগ করতঃ সরাসরি কর্পোরেট করহারে আয়কর ধার্য্য করার বিধান রয়েছে।

আলোচ্য দু’টি ধারার বিধান মোতাবেক প্রযোজ্য ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তন বা আদায় করা না হলে কর্তনকারী কর্তৃপক্ষের এরূপ খরচ শতভাগ বাতিল করে আয় হিসেবে যোগ করতঃ সরাসরি কর্পোরেট করহারে আয়কর ধার্য্য করা হয়। এ ধরণের আইন আমাদের প্রতিবেশী দেশ সমূহের আয়কর আইনেও নেই।

পোল্ট্রি ফিড, ফিশ ফিড, দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদকারী ইত্যাদি শিল্প প্রতিষ্ঠানে যে হারে কর্পোরেট ট্যাক্স ধার্য্য করা আছে, সে হারে এগ্রো-প্রসেসিং খাতে কর্পোরেট ট্যাক্স ধার্য্য করার প্রস্তাব করা হলো। আর এসএমই রফতানীকারকদের লোকসান বা আপদকালীন বা অবসরকালীন কর সমন্বয় বা অবকাশ বা রিবেট বা ফেরৎ প্রদানের বিষয়টি কর নীতিমালায় অন্তর্ভূক্ত ও বাস্তবায়ন করা অথবা অবসরকালীন জীবনে কর আর্থিক সহায়তা বা কর পেনশন প্রদান করার প্রস্তাব করা হলো। এচাড়া ১০ (দশ) বছর কর অবকাশ যুক্ত করার প্রস্তাবও তারা দিয়েছে।

প্রস্তাবনায় ভ্যাট খাতে এস আর ও নং ১২১-আইন/২০২০ এর আওতাধীন সকল এইচ এস কোডের পণ্য অর্থাৎ যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ মুলধনী যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ হিসেবে চিহ্নিত করে আমদানী পর্যায়ের মতো উৎপাদন পর্যায়েও মূসক অব্যাহতির প্রস্তাব করা হয়েছে। আর আমদানীকৃত পণ্য মালিকানা পরিবর্তন করা হলে সকল প্রকার শুল্ক ও কর হতে অব্যাহতির প্রস্তাব তাদের। বাকীতে উপকরণ ক্রয়ের বিপরীতে রেয়াত গ্রহণ পদ্ধতি সহজীকরণের লক্ষ্যে সুস্পষ্ট আইন ও বিধি প্রণয়ন করা যেতে পারে।

এসএমই ফাউন্ডেশন বাজেট প্রস্তাবনায় বলছে, সরকারী সেবা গ্রহণে মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য এবং অন্যান্য নমুনার জীবাণু ও রাসায়নিক পরীক্ষা, স্বাস্থ্যকরত্ব সনদ, ইসি সনদ ও অতিরিক্ত সনদ এবং লাইসেন্স গ্রহণে মুল্য সংযোজিত কর (ভ্যাট) আদায় হতে অব্যাহতি দানের দাবি করেছে। এছাড়াও অন্যান্য লাইসেন্সও সনদপত্রের উপর বিভিন্নহারে ধার্যকৃত অগ্রীম আয়কর প্রত্যাহার করার প্রস্তাব করেছে। বিগত জুন ২০১৪ হতে বর্ণিত সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত জমাকৃত ফি’র উপর ১৫শতাংশ বকেয়া/বকেয়াতব্য ভ্যাট আদায় হতে অব্যাহতি দান করা প্রয়োজন। এসএমই কর্তৃক কয়ার ফাইবার আমদানীর উপর প্রযোজ্য ১৫শতাংশ ভ্যাট কর্তন রহিতকরন প্রস্তাব করেছে। এছাড়া কৃষি যন্ত্রপাতির উপর বিক্রয়সহ সকল পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি প্রদান করা প্রয়োজন। আর সেগুলোর মধ্যে রয়েছে (১) উইডার (নিড়ানী) ও ২) উইনোয়ার (ঝাড়াইকল)।

 


আরো সংবাদ



premium cement