২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বসন্ত উৎসব

-

“বসন্ত এলো এলো এলো রে / পঞ্চম স্বরে কোকিল কুহরে/ মুহু মুহু কুহু কুহু তানে ” জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই চরণে ফুটে উঠেছে বসন্তের আগমনী বার্তা।
বসন্ত! চারদিকে রক্তকাঞ্চন, শিমুল, পলাশ, ক্যামেলিয়ার মতো হাজারো ফুলের সুবাসে ভরে উঠেছে প্রকৃতিপণা মানুষের মন। বসন্ত সবসময় রঙিন, চিত্তাকর্ষক। মনের কলুষতা তাড়িয়ে মন রাঙানো, খোঁপায় ফুল সাজানো, শীত রুক্ষতা কাটিয়ে রঙিন স্বপ্ন দেখা কিংবা শিমুলের নান্দিনকতায় নান্দনিক হবার সময় এই বসন্ত।
বসন্তের মধ্যে রয়েছে তারুণ্য ও যৌবনের চঞ্চলতা। শীত যখন প্রকৃতির সমস্ত রস নিজের মধ্যে শুষে প্রকৃতিকে রিক্ত করে দেয়, ঠিক তখনই বসন্ত এসে তার দক্ষিণ খোলা জানালা আমাদের সামনে উন্মুক্ত করে দেয়।
শৈল্পিকতার সাথে নান্দনিকতার সংস্পর্শ বরাবরই মানব হৃদয়স্পর্শী। করোনার জরাজীর্ণতা আমাদের থেকে অনেকটা সময় কেড়ে নিয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অডিটোরিয়াম হোক কিংবা টিএসসি মুক্তমনা মানুষের মুক্তচর্চায় শীত রুক্ষতার রেশ কাটেনি অনেক দিন ধরে। ১২০০ একর বাকৃবি ক্যাম্পাসে আবার মেতে উঠেছে বসন্তের আনন্দ উৎসবে। দৈনন্দিন ব্যস্ত সময় পার করে বসন্তের উৎসবে শৈল্পিকতা ফিরে পেয়েছে। বাঙালিয়ানায় মেতে উঠেছে পুরো বাকৃবি ক্যাম্পাস। মানুষের আনাগোনায় এই বসন্ত উৎসব প্রাণবন্ত হয়েছে।
‘যাপন নয়, উদযাপন’ টিম উৎসবের এই স্লোগানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বসন্ত উৎসব উদযাপিত হয়েছে।
বাঙালির শৈশবকে স্মরণ করিয়ে দিতে ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করা হয়। টিম উৎসবের এই আয়োজনে নাগরদোলার আসর বসে। নাগরদোলায় দোলনার মতো বেশ কিছু আসন থাকে। আরোহীরা বসার পর বিনোদনের জন্য এটি ঘোরানো হয়।
বসন্ত উপলক্ষে দেয়ালিকা, ফটোগ্রাফি এবং পেইন্টিং প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়। বাকৃবির সেরা ফটোগ্রাফারদের ছবি এখানে সংযুক্ত করা হয়। দেয়ালিকায় জুড়ে ছিল ছোটগল্প, প্রবন্ধ, টাইপোগ্রাফি, কবিতা।
অনুষ্ঠানের একটি অংশে বাউল গানের আসরে দর্শকরা আনন্দে মেতে উঠেছিল। এই অংশের উদ্দেশ্য ছিল বাঙালির হারানো ইতিহাস মানুষের মনে জাগ্রত করা। দর্শকরা বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করে। বসন্ত উৎসবে কাঠি নৃত্য, ঘুড়ি উৎসব এবং সব ধরনের কাল্পনিক চরিত্র পরিবেশন করা হয়। সব চরিত্র কাল্পনিক চরিত্রে অংশগ্রহণকারীরা তাদের নিজের পছন্দের চলচ্চিত্রের চরিত্র বা উপন্যাসের চরিত্র উপস্থাপন করে।
টিম উৎসবের দ্বিতীয় বর্ষের রাকিব রনি বলেন, ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা ক্লাস, প্রাক্টিক্যাল ও পরীক্ষার চাপে সব সময় ব্যস্ততার মধ্য থাকে। এই কারণে ক্যাম্পাসে বড় উৎসবগুলো ভালোভাবে উদযাপিত হয় না। বাঙালির অনেক ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। এই হারানো ইতিহাস ফিরিয়ে আনতে ক্যাম্পাসে আমরা বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করব।

 


আরো সংবাদ



premium cement