২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


অর্ধশত বছর পরে

-

বিমাতার রোষানলে আঁতুড় ঘরেই ঝলসে গেছে জীবন
মা কোনো দিন কখনও আমার জন্মদিন পালন করেননি
বিদ্যাপীঠে ভর্তির জন্মতারিখ হয়তো অনুমান নির্ভরশীল
অভাবের ঘর-সংসারে ক্রমশ জালিলাউয়ের ডগার মতো
অনাদরে বেড়ে উঠেছি যেনো কোনো এক তুচ্ছতৃণদল।

এক যুগ পেরিয়ে গেলো মা বাবা দু’জনেই প্রস্থানের পথে...
বাবার সেই মোটাফ্রেমের চশমা এখন আমার চোখে বেশ মানায়
অথচ সুদূর শৈশবে এক দিন বাবার চশমাটি চোখে পরে ছিলাম
মা আমাকে খুব করে বকে ছিলেনÑ ‘বলেছিলেন চোখ নষ্ট হয়ে যাবে’।

ধূসর রঙের শাড়িতে সোনামুখী মায়ের মুখখানি ভেসে ওঠে
তসবীর দানায় এখনও বৃদ্ধবাবার স্পর্শটুকু লেগে আছে
ঘরের মেঝেতে অনাদরে পড়ে আছে মায়ের ভাঙাআরশি চিরনী
শোকের দুর্ভেদ্য অন্ধকার অজগরের মতো দ্রুত তেড়ে আসে-
কেবলই গোগ্রাসে গিলে খেতে চায় এ জীবনের আলোটুকু।

কে যেন কোনো নির্জনে বসে বাজায় বিদায়ের বাঁশি
মর্মমূলে ছুঁয়ে আঁতকে ওঠে বেদনাবিধুর সুরের আর্তি
দীর্ঘ রাত দীর্ঘ দিন এই একাকী পড়ে আছি ভালোবাসাহীন
এক... দুই... তিন...
এভাবেই নিভৃতে নীরবে প্রস্তানের পথে যায় হারিয়ে দিন
মা নেই বলেই রন্ধনশালায় থেমে গেছে কড়াই-খুন্তির গান
আগের মতো গোলায় ওঠে না আর নিকোনো উঠোনের ধান।

যাযাবর সময়ের হাত ধরে পাশাপাশি আমিও হাঁটি দীর্ঘপথ
হাঁটি হাঁটি পা পা করে কখন যে পেরিয়ে এসেছি অর্ধশত বছর
বিস্মৃতির প্রথম ধাপে একাকী দাঁড়িয়ে পেছনে ফিরে তাকিয়ে দেখি
দুঃখস্মৃতির ধূলোয় ঢেকে গেছে টেবিল চেয়ার চৌকি চাদর ইত্যাদি।ু

 


আরো সংবাদ



premium cement