১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলকদ ১৪৪৫
`


সাভারে চাকরিচ্যুত ট্যানারি শ্রমিকদের বিক্ষোভ

সাভারে চাকরিচ্যুত ট্যানারি শ্রমিকদের বিক্ষোভ। - ছবি : নয়া দিগন্ত

সাভারে চামড়া শিল্প নগরীর বে ট্যানারির চাকরিচ্যুত শ্রমিকেরা চাকরিতে পুনর্বহাল ও কারখানায় প্রবেশের দাবিতে কারখানার মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি করেছে।

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) কারখানাটির বিভিন্ন ইউনিটে চাকরিচ্যুত ৮০ জন শ্রমিক বে ট্যানারি ইউনিট-২ লিমিটেড কারখানার সামনে কর্মসূচি পালন করে।

শ্রমিকরা জানা, তারা গত দু’বছর যাবত বে ট্যানারিতে কাজ করে আসছে। এখানে তাদেরকে সাপ্তাহিক ছুটি কিংবা সরকার ঘোষিত কোনো ছুটি দেয়া হয় না। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে ট্রেড ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় সোমবার সকালে কর্মরত শ্রমিকদের কারখানার মূল ফটকে আটকে দেয়া হয়।

বে ট্যানারির ফিনিশিং শাখার শ্রমিক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে কারখানাটিতে নানা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। কিছুদিন হলো আমরা ট্রেড ইউনিয়নের আওতাভুক্ত হয়েছি। এ ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদের অন্যায়ভাবে চাকুরিচ্যুত করে নতুন কন্ট্রাক্টরের মাধ্যমে শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর পায়তারা করছে।’

ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের আইনবিষয়ক সম্পাদক ও সামিয়া ট্যানারি শ্রমিক প্রতিনিধি মো: মামুন বলেন, ‘বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে বিভিন্ন কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদেরকে অত্যাচার ও নির্যাতন করে। আজ বে ট্যানারি কর্তৃপক্ষ কোনো নোটিশ ছাড়াই অন্যায়ভাবে ৮০ শ্রমিককে ছাটাই করেছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ভুক্তভোগী শ্রমিকদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছি। দাবি আদায়ে আমরা প্রয়োজনে সকল শ্রমিকদের সাথে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলব।’

বে ট্যানারির হিসাব ও অর্থ শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক মো: মাহাবুব আলম খান বলেন, ‘লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ (এলডব্লিউজি) সনদের জন্য আমাদের কারখানাটিতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার (সিইটিপি) নির্মাণের কাজ চলছে। এতে কাঁচা চামড়া ব্যবস্থাপনা শাখাটি আগামী ছয় মাসের জন্য বন্ধ থাকবে, তবে কারখানাটির ফিনিশিং শাখা চালু রয়েছে। ফিনিশিং শাখার ৩২ জন শ্রমিককে কাজ করতে বলা হয়েছে ও ৩৫ জন শ্রমকিকে আলোচনার মাধ্যমে তাদের পাওনাদি বুঝিয়ে দেয়া হবে। বিষয়টি শ্রমিকদের জানানো হলে তারা কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। আমরা তো শ্রমিকদের বসিয়ে রেখে বেতন দিতে পারব না। এমনিতেই করোনা ও বিশ্ব অর্থনীতির মন্দার কারণে আমাদের অবস্থা ভালো না।’

সাভার মডেল থানা ও ট্যানারি ফাঁড়ির এসআই আব্দুল জলিল জানান, বে ট্যানারিতে ৮০ জন শ্রমিক দুই/তিন বছর ধরে দৈনিক শ্রমিক হিসেবে কাজ করে আসছে। তাদের কোনো নিয়োগপত্র বা আইডি কার্ড কারখানার পক্ষ থেকে দেয়া হয়নি। পরে তাদের ওই সেকশন এক মাস আগে এক মাসের বেতন দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ। রোববার একই ঘোষণা দেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ। সোমবার সকালে ওই ৮০ জন শ্রমিক কারখানায় প্রবেশ করতে গেলে, তাদেরকে কারখানা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ রয়েছে জানিয়ে কারখানায় প্রবেশ করতে বাঁধা দেয় কর্তৃপক্ষ। এরপর শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ ও শ্রমিক নেতারা ঘটনাস্থলে আসে। বে ট্যানারি কর্তৃপক্ষ অন্য একটি সেকশন খুলে ৪০ জনকে নিয়োগ দেয়া ও বাকিদের পর্যায়ক্রমে নিয়োগ দেয়া কথা এবং এক মাসের অতিরিক্ত বেতন দেয়ার সমঝোতা করলে শ্রমিকরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল