বাংলাদেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে শুক্রবার রাতে আরও অন্তত নয় জন নিহত হয়েছে। এ মাসের প্রথম দিকে অভিযান শুরু হবার পর কথিত 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহতের সংখ্যা এখন প্রায় ৭০।
শুক্রবার দিনের বেলায়ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযানের খবর পাওয়া গেছে।
তবে গবেষক ও মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থার অনেকের বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই দৃশ্যমান হচ্ছে না।
তবে পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর বলছে, অভিযোগ পাওয়া মাত্রই তদন্ত করে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে তারা।
দেশের বিভিন্ন স্থানে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী, মাদক নিয়ন্ত্রক সংস্থা কিংবা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনেকের বিরুদ্ধেই মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে যোগসাজশের অভিযোগও পুরনো।
চট্টগ্রামের এক নারী তার সন্তানের পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে চাপ দিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগে একজন ওসিসহ সাত পুলিশ সদস্যের মামলা করেছেন এক নারী - গত মাসের শেষ সপ্তাহে।
এমন পটভূমিতে দেশে কয়েকদিন ধরে যে অভিযান চলছে সেটি পুলিশ বা নিয়ন্ত্রক সংস্থার ঘর থেকে শুরু হলেই তা মাদক নির্মূলে বেশি কার্যকর হতো বলে মনে করেন মানবাধিকার কর্মী নুর খান লিটন।
তিনি বলেন, "এটা সফল হবে না যদি পুলিশ বা মাদকের যারা এর সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলো বা সমর্থন দিয়ে আসছিলো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়া হয়। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে বার্তা দিতে হবে যে সরকার কাউকে প্রশ্রয় দেবেনা"।
এর সাথে একমত প্রকাশ করেন মাদকাসক্তি বিষয়ক গবেষক ও ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এম ইমদাদুল হক।
তিনি বলেন, "মাদকের এমন পরিস্থিতি তৈরির পেছনে পাচারকারীদের যেমন একটা ভূমিকা আছে - তেমনি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও বিভিন্ন রকম প্রশ্ন গণমাধ্যমেও এসেছে। জনমনেও এটি নিয়ে বড় ধরনের সংশয় আছে। তাই একটা শুদ্ধি অভিযান আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যেও প্রয়োজন আছে। যদিও এটা সরকারের নীতিমালার ওপরই নির্ভর করছে।"
তবে পুলিশের মুখপাত্রের দায়িত্বে থাকা সহকারী মহাপরিদর্শক সোহেলী ফেরদৌস বলছেন, বাহিনীর অভ্যন্তরে মাদক বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করে পুলিশ, তাই এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, "বিভাগীয় ব্যবস্থা তো রয়েছেই - পাশাপাশি অভিযোগ প্রমাণিত হলে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হয়।"
কিন্তু চলমান অভিযানে পুলিশের কারও বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না কেন - এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "এবারের অভিযান বাহিনীর ভেতরে ও বাইরে সব জায়গায় মাদক নির্মূলের জন্যই"।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো: জামাল উদ্দীন আহমেদ বলছেন, সংস্থার কেউ মাদকের সাথে জড়িত পাওয়া গেলে কোন ভাবেই ছাড় দেবেন না তারা।
তিনি বলেন, এর আগে একজন কর্মীকে মাদক সংশ্লিষ্টতার কারণে নিজেরাই আদালতে সোপর্দ করেছেন।
তিনি বলেন, নিজস্ব ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে প্রতিনিয়তই সবাইকে নজরদারিতে রাখা হয় - যাতে কেউ এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত হতে না পারে।
তবে পুলিশ বা মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর যা-ই বলুন - মাদক বাজারে সহজলভ্য হওয়ার মূল পথগুলো বন্ধ না করে শুধুমাত্র কিছু মাদকসেবী বা বিক্রেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে তা দীর্ঘমেয়াদে কতটা কাজে আসবে - তা নিয়ে সংশয় রয়েছে গবেষক ও মানবাধিকার কর্মীদের মধ্যে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা