২৬৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তানকে ভালো সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার রহমাত শাহ ও গুলবাদিন নায়েব। ১০.৫ ওভারে দুজনে তোলেন ৪৯ রান। ইনিংসরে ১১তম ও নিজের প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে রহমত শাহকে ২৪ রানে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রো এনে দেন সাকিব আল হাসান। ওয়ানডাউনে ব্যাট করতে নামা হাসমাতউল্লাহকে দলীয় ৭৯ রানের মাথায় স্টাম্পিং করে টাইগারদের ম্যাচে ফেরান মুশফিক। এরপর ১০৪ রানের মাথায় গুলবাদিন নায়েবকে (৪৭) ও মোহাম্মদ নবীকে শূন্য রানে নিজের পঞ্ম ওভারে পর পর ফিরিয়ে আফগানিস্তানকে চাপে ফেলে দেন সাকিব । ১০৪ রানে চার উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে অনেকটা দূরে সরে যায় আফগানিস্তান। ষষ্ঠ ওভার করতে এসে প্রথম বলেই আসগর আফগানকে (২০) রানে ফিরিয়ে সামিব তুলে নেন নিজের চতুর্থ উইকেট। ১১৭ রানের মাথায় আফগান আসগ আউট হলে সাত নাম্বারে ব্যাট করতে নামেন ইকরাম আলি খিল। কিন্তু দলীয় ১৩২ রানের মাথায় ইকরাম ১১ রান করে লিটন দাসের থ্রোতে রান আউটের শিকার হন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আফগানদের সংগ্রহ ৩৯ ওভারে ৬ উইকেটে ২৬০ রান।
বিশ্বকাপের ৩১তম ম্যাচে আফগানিস্তানকে ২৬৩ রানের লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৬২ রান সংগ্রহ করে টাইগররা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ (৮৩) রান করেন মুশফিকুর রহিম। সাকিব আল হাসানের ব্যাট থেকে আসে (৫১) রান।
ভাগ্যের উপর নির্ভর করছে বাংলদেশের সেমিফাইনালে ওঠা। তবুও শেষ পর্যন্ত কতদূর যায়, এ আশায় আফগানাদর বিপক্ষে জয়ের মিশনে মাঠে নামে বাংলাদেশে।
এদিকে বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত জয়হীন তকমা সেঁটে আছে আফগানদের গায়ে। এই বিস্ময়কর তকমা নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে চায় না নবী-রশিদরাও। তারাও চায় জয়ের ক্ষুধা মেটাতে।
এমন জয়ের নেশায় সাউদম্পটনের দ্য রোজ বোলে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ-আফগানিস্তান। বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় ম্যাচটি শুরু হয়। টস জিতে আফগান অধিনায়ক গুলবাদিন নায়েব আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় বাংলাদেশকে।
এই ম্যাচে বাংলাদেশ দল এনেছে দুটি পরিবর্তন। রুবেল হোসেনকে বাদ দিয়ে দলে ফেরানো হয়েছে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। সাব্বির রহমানের জায়গায় ফিরলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ওপেনিংয়ে নিয়মিত ওপেনার সৌম্য সরকারের জায়গায় ব্যাট করতে নামেন লিটন দাস।
এবারের বিশ্বকাপে এটি তৃতীয় ম্যাচ লিটন দাসের। আগের দুই ম্যাচে তিনি খেলেছেন মিডল অর্ডারে। ব্যাট করতে নেমেছেন ৫ নম্বরে। তবে আজ কী কারণে তাকে ওপেনিংয়ে নামানো হয়েছে তার কোন ব্যাখা টিম ম্যানেমেন্টের কাছ থেকে না পাওয়া গেলেও ধারণা করা হচ্ছে আফগান বোলিং অ্যাটাকের বৈচিত্রতার কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল।
আফগানিস্তানের হয়ে বোলিং ওপেন করেন তরুণ ডানহাতি অফ স্পিনার মুজিব উর রহমান। আর বামহাতি ব্যাটসম্যানদের জন্য ডানহাতি অফ স্পিনারদের খেলা কঠিন। আফগানদের আরেক ডানহাতি অফ স্পিনার মোহাম্মাদ নবীও বোলিং করেন শুরুর দিকে। বাংলাদেশ তাই একজন বামহাতি ওপেনারকে বদলে ডান হাতি লিটন দাসকে নামিয়েছে ওপেন করতে।
আবার মিডল অর্ডারে লেগ স্পিনার রশিদ খানকে মোকাবেলা করা ডানহাতি ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন। বামহাতি ব্যাটসম্যনাদের জন্য কিছুটা সহজ। তাই সৌম্য সরকার সেখানে নামলে কিছুটা সমস্যায় পরবেন রশিদ খান। এই দুই বোলারকে টার্গেট করেই হয়তো ব্যাটিং অর্ডারে এমন পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ।
এমন কৌশলি অবলম্বন করেও যে মুজিবকে টার্গেট করে লিটনকে ওপেনিংয়ে নামানো হয়েছে তার বলেই আউট হয়ে ফেরেন তিনি। ইনিংসের পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে শর্ট কাভার অঞ্চলে ক্যাট দেন লিটন দাস। দলীয় ২৩ এবং ব্যক্গিত ১৬ রান করে আউট হন লিটন। সৌম্য সরকারকে ৩ রানে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে চাপে ফেলে দিলেন আফগান লেগ স্পিনার মুজিবুর রহমান। ওয়ানডাউনে ব্যাট করতে নামেন সাকিব আল হাসান। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তামিম-সাকিব দেখে-শুনে খেলে দলকে এগিয়ে নিতে চাইলেও দলীয় স্কোর ৮২ রান হলে তামিম ইকবাল বোল্ডে হয়ে যান মোহাম্মদ নবীর বলে। ৫৩ বলে ৩৬ রান করেন তামিম। চারে ব্যাট করতে নামে মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে ফের দলকে টেনে নিয়ে যেতে থাকেন সাকিব। এই জুটি থেকে আসে ৬১ রান। এই ম্যাচে ৬৯ বলে ৫১ রান করে বাংলাদেশের হয়ে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে এক হাজার রান পূর্ণ করেন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। দেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও সাকিব। তার পিছনেই এ তালিকায় রয়েছেন দুই সতীর্থ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিম। এক হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করে, ২০১৯ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায়ও শীর্ষে উঠে এলেন বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার। শীর্ষন্থানে উঠা-নামার প্রতিযোগিতায় অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারকে পিছনে ফেলে শীর্ষে ওঠেন তিনি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে সাকিবরে সংগ্রহ ছিলো ৪২৫ রান। কিন্তু আফগানাদের বিপক্ষে ৫১ রান করায় এই অলরাউন্ডারের ঝুলিতে জমা হয় ৪৭৬ রান। যা তার নিকটতম প্রতিযোগীর চেয়ে ২৫ রান বেশি। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ওয়ার্নারের সংগ্রহ ৪৪৭ রান। ৫১ রান করে দলীয় ১৪৩ রানের মাথায় মুজিবের এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে ফেরেন সাকিব। মাঠে নেমে সৌম্য সরকার ৩ রান করে ফেরেন মুজিবের তৃতীয় শিকার হয়ে। ১৫১ রানে চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে ছয় নাম্বারে ব্যাট করতে নামা মাহমুদুল্লাকে নিয়ে চাপ সামলিয়ে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা কারেন মুশফিক। কিন্তু আফগান বোলারদের ভালো বোলিংয়ের কাছে দ্রত রান উঠাতে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানরা। ৩৮ বলে ২৭ রান করে গুলবাদিন নায়েবের বলে মোহাম্মদ নবীর তালুবন্দী হয়ে ফেরেন মাহমুদুল্লাহ। মাহমুদুল্লাহর পর ২৫১ রানের মাথায় দৌলত জাদরানের শিকার হয়ে ফেরেন মুশফিক। ৮৭ বলে ৪ চার ও এক ছয়ে ৮৩ রান করেন মুশফিক। শেষ দিকে মোসাদ্দেকের ২৪ বলে ৩৫ রানের কল্যাণে ৫০ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে ২৬২ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।
আফগান বোলারদের মধ্যে মুজিবুর রহমান ৩টি, গুলবাদিন নায়েব ২টি, দৌলত জাদরান ও মোহাম্মদ নবী একটি করে উইকেট শিকার করেন।
এএলএমটি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা