২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ভোজ্যতেলের সরবরাহ কমাল উৎপাদনকারীরা

জ্বালানি তেলের প্রভাব বাজারে
-

ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়ে সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে উৎপাদনকারীরা। পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, তারা অর্ডার দিয়েও চাহিদামতো তেলের সরবরাহ পাচ্ছেন না।
গতকাল বুধবার রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ দোকানেই পর্যাপ্ত সয়াবিন তেল নেই। এক লিটার ও দুই লিটারের বোতল কিছু থাকলেও পাঁচ লিটারের কোনো সয়াবিন নেই। বাজারজাতকারী কোম্পানিগুলো চাহিদামতো সরবরাহ না করায় সয়াবিন তেলের এই সঙ্কট তৈরি হয়েছে বলে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা জানান।
রাজধানীর বাসাবো বাজারের মুদি দোকানি শরিফুল ইসলাম বলেন, এক সপ্তাহ ধরে তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো চাহিদামতো তেল দিচ্ছে না। ছোট বোতলের তেল সামান্য কিছু পেলেও পাঁচ লিটার তেলের সরবরাহ বন্ধ। কয়েকটি ব্র্যান্ডের ডিস্ট্রিবিউটররা তাদের অন্য পণ্যের (চিনিগুঁড়া চাল, সরিষার তেল) অর্ডার নিলেও সয়াবিন তেলের অর্ডার নিচ্ছেন না।
কদমতলা স্টোরের মালিক হুমায়ুন কবির বলেন, বাজারে তেল নেই বললেই চলে। আমরা বারবার তেল চেয়েও পাচ্ছি না। ডিস্ট্রিবিউটররা আমাদের বলছেন তেলের দাম বাড়বে বলে সরবরাহ কম।
সয়াবিন তেলের দাম লিটার-প্রতি ২০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে মিলমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। দাম বাড়ানোর এ প্রস্তাব ৩ আগস্ট বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে (বিটিটিসি) দিয়েছে সংগঠনটি। এতে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৮০ টাকা, এক লিটারের বোতল ২০৫ টাকা এবং পাঁচ লিটারের বোতল ৯৬০ টাকা করার কথা বলা হয়েছে। দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের সাথে অ্যাসোসিয়েশন ব্যয়ের একটি বিবরণও তুলে ধরেছে।
এ বছর বোতলজাত সয়াবিন তেল সর্বোচ্চ প্রতি লিটার ২০৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল, যা সম্প্রতি দুই দফায় ২০ টাকা কমিয়েছে তেল কোম্পানিগুলো। এর মধ্যে সর্বশেষ গত ২১ জুলাই লিটার-প্রতি দর ১৪ টাকা কমানো হয়। অবশ্য অ্যাসোসিয়েশন এখন বলছে, টাকার বিপরীতে ডলারের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় ভোজ্যতেলের আমদানিমূল্য বেড়েছে। এ কারণে দাম সমন্বয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
ভোজ্যতেলের পাশাপাশি জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রভাবও পড়েছে কাঁচাবাজারে। সবধরনের সবজির দামই কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, কম দামে কিনলে আমরাও কম দামে বিক্রি করতে পারি। ক্রেতাদের সাথে দামদর করতে হয় কম; কিন্তু দাম বাড়ায় অনেক বেশি দামদর করতে হচ্ছে।
বাসাবো বাজারে আসা ক্রেতা সুমন আলী বলেন, কাঁচকলার হালি কিনেছি আট টাকায়, এখন কিনছি ১২ টাকায়। বাংলাদেশে কোনো কিছুর দাম এক টাকা বাড়লে আমরা দেড় টাকা বাড়িয়ে দিই; কিন্তু এক টাকা কমলে আর কমাই না।
বেসরকারি চাকরীজীবি হাবিবুর রহমান বলেন, বাজারে সবজির দাম বাড়তি। এটা আমাদের ক্রয়ের পরিমাণে প্রভাব ফেলেছে। আগে বাজারে এলে সবধরনের সবজি এক কেজি করে দিতে বলতাম। এখন বাছাই করে তিন বা চারটি আইটেম নিতে হচ্ছে।
সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে কাঁচামরিচের। ভালো মানের এক কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ৩০০ টাকা। একটু নিম্নমানের কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা কেজিতে। এক দিন আগেও এই মানের কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকায়।

 


আরো সংবাদ



premium cement