০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ঢাকা নর্দান সিটি কলেজে ভাঙচুর লুটের অভিযোগ

-

রাজধানীর উত্তরায় ঢাকা নর্দান সিটি কলেজে হামলা চালিয়ে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর এবং ভবনের মালামাল লুটপাটে জড়িতদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। দুই যুগের বেশি সময় ধরে সাফল্যের সাথে চলমান এ কলেজটি স্বার্থান্বেষী মহলের হাত থেকে বাঁচাতে তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। আকস্মিক তান্ডবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে অচলাবস্থা তৈরি হওয়ায় এখন দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানা জিডি গ্রহণ করলেও মামলা গ্রহণ করেননি। তাই আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা।
গতকাল রোববার সকালে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোটার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঢাকা নর্দান সিটি কলেজের প্রভাষক ইসফাত জাহান। এ সময় লুবনা আহমেদ স্বপ্না, হাওয়া নূর বেগম, মোস্তাফিজুর রহমান, নাসির উদ্দিন চৌধুরী, শহীদুল ইসলাম, মাহবুবা সুলতানা, মাহমুদা আশরাফী, সাইফুল ইসলামসহ অন্য শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
কলেজের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রভাষক ইসফাত জাহান বলেন, উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের ৫ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাড়ির ভাড়া করা ভবনে তাদের কলেজটি পরিচালিত হচ্ছে। ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত কলেজটি ২০০২ সালে এমপিওভুক্ত হয়। গত ১০ জানুয়ারি বন্ধের দিন কলেজ ভবনে হঠাৎ হামলা চালায় একটি স্বার্থান্বেষী মহলের সন্ত্রাসীরা। কলেজের নিশানা মুছে দিতে বেঞ্চ, চেয়ার, টেবিল, ডায়াস, কম্পিউটার, ফ্যান, লাইট, আলমারি ও এতে রক্ষিত দুই লক্ষাধিক টাকা লুট করা হয়ে। ভাঙচুর করা হয় বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি। এ ছাড়া দাফতরিক নথি ও অন্যান্য রেকর্ড লুট করা হয়েছে। সাইন্স ও কম্পিউটার ল্যাব, প্রচারের লিফলেট ফাইল, ব্যনার, সাইনবোর্ড ইত্যাদি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ঘটনার পরদিন ১১ জানুয়ারি কলেজ ক্যাম্পাসে মুজিব বর্ষের আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে জড়ো হওয়া শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এ ধ্বংসযজ্ঞ দেখে হতবিহ্বল হয়ে পড়েন। এর প্রতিবাদে ১৩ জানুয়ারি উত্তরায় ছাত্র-শিক্ষকদের সমন্বয়ে এক মানববন্ধনে তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, অধ্যক্ষ ফেরদৌসী নাজনীন, ভবন মালিক ও ডেভেলপার কোম্পানির ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হচ্ছে কলেজটিকে। এর আগে কলেজ পরিচালনায় অধ্যক্ষের অদক্ষতা, অব্যবস্থাপনা, নানা আর্থিক দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রকাশিত হওয়ার ভয়ে তিনি বারবার কলেজ এবং ছাত্র ভর্তি বন্ধকরণে শিক্ষাবোর্ড বরাবর আবেদন করেন। এতে ব্যর্থ হয়ে তিনি এই অনৈতিক পথ বেছে নেন। এর আগে থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও ভবন মালিকের সাথে ভাড়াটিয়া ও উচ্ছেদ মামলা চলমান। আদালতে ২০ জানুয়ারি ওই মামলার শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। এর আগেই আদালতের কোনো নির্দেশ বা নোটিশ ও পুলিশের উপস্থিতি ছাড়াই শতাধিক ব্যক্তি নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় কলেজটিতে হামলা চালায়। শিক্ষকদের অভিযোগ, কলেজ অধ্যক্ষ নিজের অপকর্ম ঢাকতে কলেজটাকেই বন্ধ করে দিতে চাইছে। এতে অনিশ্চয়তায় পড়েছে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন। কলেজের ও শিক্ষার্থীদের সব নথিপত্র তারা গায়েব করে ফেলছে। এমতাবস্থায় কলেজটিকে রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি, উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ সংশ্লিষ্ট সবার হস্তক্ষেপ কামনা করেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।


আরো সংবাদ



premium cement