২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


বিবিএসের জরিপ প্রতিবেদন

নিজের বাড়ি আছে সোয়া ৩ কোটি পরিবারের

সাড়ে ১৮ লাখ (পাঁচ তলার ওপরে) বহুতল ভবন ; ভাড়া থাকেন ৪৬ লাখ ২০ হাজার পরিবার ; ৫৩ লাখ ২০ হাজার বাণিজ্যিক ভবন
-

নিজেদের বাড়ি আছে দেশে এমন পরিবারের সংখ্যা ৩ কোটি ২৪ লাখ ৬৯ হাজার। আর ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছে ৪৬ লাখ ২০ হাজার পরিবার। ভাড়া ছাড়াই বাড়িতে বসবাস করেন সাড়ে ৬ লাখ পরিবার। এমন তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। বলা হয়েছে, দেশে বহুতল ভবনের সংখ্যা ১৮ লাখ ৫০ হাজার (পাঁচ তলার ওপরে)। পাঁচ তলার নিচে ৩৭ লাখ ৯০ হাজার। সেমি-পাকা এক কোটি ১৮ লাখ ৬০ হাজার। কাঁচা বাড়ি ২ কোটি ৯ হাজার এবং ঝুপড়ি ২ লাখ ৫০ হাজার। বসবাসের ঘরের গড় আয়তন ৪২৫ বর্গফুট। দেশে মোট ৫৩ লাখ ২০ হাজার বাণিজ্যিক ভবন রয়েছে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনে গতকাল ‘সার্ভে অন ওকুপেইড রেসিডেন্সিয়াল হাউজেজ অ্যান্ড রিয়েল এস্টেট সারভাইস ২০১৮’ এর প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক ড. কৃষ্ণা গায়েনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বিকাশ কুমার দাস এবং সাইফুল ইসলাম।
জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে মোট বাড়ির মধ্যে ৮৫ দশমিক ৮২ শতাংশ পরিবারের নিজের বাড়ি আছে। ভাড়া বাড়িতে থাকেন ১২ দশমিক ২১ শতাংশ পরিবার ও ভাড়া ছাড়াই বাড়িতে থাকেন ১ দশমিক ৭১ শতাংশ। এ ছাড়া অন্যান্যভাবে বাড়িতে থাকেন এক লাখ পরিবার। সব মিলিয়ে জিডিপিতে আবাসন খাতের অবদান এখন ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আবাসন খাতে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ভাড়া বাবদ আয় ছিল ৮১ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা, যা পরের অর্থবছর বেড়ে দাঁড়ায় ৮৯ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। এক বছরে এক হাতে মূল্য সংযোজন ৭০ হাজার ২০৮ কোটি টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫ হাজার ৯৭২ কোটি টাকা। এই হিসাবে বাজারমূল্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ২১ শতাংশ।
বিবিএস বলছে, আবাসন খাতে ৫ লাখ ৩৯ হাজার ৪১৫ জন কাজে নিয়োজিত আছেন। শ্রমিকদের ৩১৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা বেতন হিসাবে ও ৫৩৪ কোটি টাকা অন্যান্য পাওনা বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে। মোট ৫৩ লাখ ২০ হাজার বাণিজ্যিক ভবনের ৩১ দশমিক ২১ ভাগ মালিক নিজেই ব্যবহার করে থাকেন। পজিশন বিক্রি ২ দশমিক ১২ শতাংশ ভবনে। আর ভাড়া দেয়া হয়ে থাকে ৬৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ ভবন। অনাবাসিক ভবনে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৪৮ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা ভাড়া বাবদ আয় হয়েছে, যা পরের বছর দাঁড়ায় ৫৪ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকা। সংস্কার ব্যয় বাদে এক হাতে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৪৪ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা মূল্য সংযোজন হয়েছে। ১১ দশমিক ২০ শতাংশ বেড়ে পরের অর্থবছরে এর আকার দাঁড়ায় ৪৯ হাজার ৯৮১ কোটি টাকায়।
জরিপ তথ্য বলছে, দেশে নির্মাণ খাতে ৩ হাজার ১৩২ প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার ৩৪ দশমিক ২৯ শতাংশ রিহ্যাব ও ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ বাংলাদেশ ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলডিএ) সদস্য। নির্মাণ খাতে মোট এক লাখ ৭২ হাজার ৩৯২ শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। এক হাতে মোট উৎপাদন ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ছিল ১৬ হাজার ৯৯৪ কোটি টাকা, যা পরের বছর দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা। একই সময়ে মূল্যসংযোজন ১৪ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা থেকে ১০ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৬২৩ কোটি টাকায়।
আবাসিক, বাণিজ্যিক ও নির্মাণ মিলিয়ে ৩ উপখাতে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এক লাখ ৪১ হাজার ৫৭৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা মূল্যসংযোজন হয়েছে। আগের অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল এক লাখ ২৯ হাজার ৩১১ কোটি ১০ লাখ টাকা। এক বছরে এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, রাষ্ট্রের উন্নয়নের অন্যতম অংশীদার পরিসংখ্যান ব্যুরো। সরকারের নীতিনির্ধারণে সঠিক তথ্য এবং উপাত্ত উপস্থাপনার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন বিবিএসের কর্মীরা।
বিকাশ কিশোর দাস বলেন, বাসার আকার যত বড় ভাড়া তুলনামূলক তত কম। এ ছাড়া ছোট বাসার ভাড়া গুনতে হচ্ছে বেশি। সেই সাথে বস্তিতে যারা থাকছেন তাদের আবাসিক সুযোগসুবিধা কম থাকলেও ভাড়া দিতে হচ্ছে বেশি। যে পরিবেশে বাস করুক না কেন মানুষের আয়ের ৫০ ভাগই যাচ্ছে বাড়ি ভাড়া দিতেই। অন্য দিকে যারা বাড়ির মালিক তারা যে পরিমাণ বিনিয়োগ করেন সে পরিমাণ লাভ পাচ্ছেন না।

 


আরো সংবাদ



premium cement