করোনাভাইরাসের কারণে দুই বছর ধরে ছেলের সাথে সাক্ষাত করতে পারছিলেন না অভিনেত্রী ববিতা। যদিও সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও কলের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি যোগাযোগ হতো নিয়মিতই। ছেলে থাকেন কানাডায়। বেশ কয়েকবার প্রস্তুতি নিয়েও নানা কোয়ারেন্টিনের নানা নিয়ম মেনে শেষ পর্যন্ত আর যাওয়া হয়নি তার। অবশেষে সেই সুযোগটি পেয়ে গেলেন তিনি। গত সপ্তাহে তিনি ছেলেকে দেখতে কানাডায় গেছেন।
এদিকে আগামীকাল ৩০ জুলাই কিংবদন্তী এই অভিনেত্রীর জন্মদিন। দিবসটি নিয়ে তার পরিকল্পনা জানতে ফোন করা হলে তিনি বলেন, প্রায় দুই বছর হলো অনিকের কাছে আসতে পারছিনা। ভেতরে ভেতরে খুব কষ্ট হতো আমার।
ঢাকার একাকী জীবন খুব এক ঘেয়ে হয়ে উঠেছিলো। আমার ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে গিয়ে ছিলো। পরবর্তীতে ভিসার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে একজন মা হিসেবে ছেলের কাছে যাওয়ার জন্য আবেদন করলাম। তারা আমার আবেদন গ্রহণ করে সেখানে যাবার অনুমতি দিলেন। ছেলের কাছে এসে কী যে ভালোলাগছে তা আসলে ভাষায় প্রকাশের নয়। তবে সত্যি বলতে কী জন্মদিন নিয়ে কোনো উচ্ছাস নেই।
গত বুধবারই আমার মেজো চাচা ইন্তেকাল করেছেন। পরিচিত অনেকেই মারা যাচ্ছেন। নিজ দেশের মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই অনেকেই মারা যাচ্ছেন। এমতাবস্থায় মনটাও ভীষণ খারাপ। সবমিলিয়ে আসলে জন্মদিন উদযাপনের মতো মানসিকতা নেই। তবে এমন দিনে ছেলের পাশে আছি, আমার পাশে আমার অনিক আছে-এটাই শান্তির, ভালোলাগার। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন, আমরা যেন ভালো থাকতে পারি।’
কততম জন্মদিন এ প্রসঙ্গে ববিতা বলেন, ‘থাকনা অজানা আমার এই বয়সের কথা। সত্যি বলতে কী মেয়েরা কখনোই নিজের বয়সের কথা বলতে চান না। আমিও চাইনা আমার বয়সটা কেউ জানুক। তবে বুঝতে পারি দিনে দিনে বয়স বেশ ভালোই বেড়ে গিয়েছে।’
সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’ ছবিতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে ‘অনঙ্গ’ বউ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় এই নায়িকা। এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুবাদে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ববিতার এক বিশাল পরিচিত এবং গ্রহণযোগ্যতা গড়ে উঠে।
ববিতা অভিনীত এই চলচ্চিত্র ১৯৭৩ সালে বার্লিন ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফ্যাস্টিভ্যালে এবং ১৯৭৪ সালে শিকাগো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফ্যাস্টিভ্যালে ‘বেস্ট ফিল্ম’ হিসেবে পুরস্কৃত হয়। ১৯৭৪ সালে কলকাতায় ন্যাশনাল এ্যাওয়ার্ডে তিনটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার লাভ করে। নারায়ণ ঘোষ মিতার ‘আলোর মিছিল’ সিনেমাতে অভিনয়ের জন্য ১৯৭৫ সালে ববিতা প্রথমবারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। পরপর তিনি মোহসীনের বাদী থেকে বেগম এবং আমজাদ হোসেনের নয়ন মনি সিনেমাতে অভিনয়ের জন্যও একই সম্মাননায় ভূষিত হন। টানা তিনবছর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করে তিনি হ্যাট্রিক করেন।
গুণী অভিনেত্রী ববিতা পরবর্তী সময়ে ‘পোকা মাকড়ের ঘর বসতি’, ‘রামের সুমতি’ এবং ‘ম্যাডাম ফুলি’ সিনেমাতে অভিনয়ের জন্যও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। নায়িকা হিসেবে ববিতা প্রায় দেড় শত সিনেমাতে অভিনয় করেছেন। যারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সুন্দরী, এক মুঠোভাত, অনন্ত প্রেম, বসুন্ধরা, সোহাগ, ফকির মজনুশাহ, ওয়াদা, লাঠিয়াল, কথা দিলাম, নিশান, এতিম, লাইলী মজনু, দূরদেশ, ফুলশয্যা, বীরাঙ্গণা সখিনা, মিন্টু আমার নাম, বেহুলা লক্ষিন্দর ইত্যাদি এই পর্যন্ত ববিতা সব মিলিয়ে প্রায় ২৯০টি সিনেমাতে অভিনয় করেছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা