০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ছবিটা দেবীর অনুপ্রেরণায় তৈরী করা : জয়া

জয়া আহসান - সংগৃহীত

আগামী শুক্রবার অর্থাৎ ১৯ অক্টোবর দেশব্যাপী ২৯টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে জয়া আহসান প্রযোজিত প্রথম ছবি ‘দেবী’। এরই মধ্যে দেশব্যাপী এটা নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে কারণ এর সাথে যুক্ত রয়েছে কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের নাম। জয়ার কাছে প্রশ্ন করেছিলাম কিভাবে জনপ্রিয় এই লেখকের উপন্যাস অবলম্বনে ছবি বানানোর চিন্তা মাথায় এলো? বেশ সরল ভাষায় জয়া বললেন, হুমায়ূন আহমেদ স্যারের লেখা পড়ার সময় দৃশ্যগুলো চোখে ভাসে। ‘দেবী’কে ছবি বানানোর আগে উপন্যাসের দৃশ্যগুলো আমার চোখে ভাসতো। আরেকটা কথা বলে রাখি, বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের ‘আরণ্যক’ছোট বেলা থেকেই আমার অনেক প্রিয় ছিল। বুঝে হোক না বুঝে হোক এই উপন্যাসটি আমি অনেকবার পরেছি। তখন বারবার মতো হতো, এতোদিন ধরে কাজ করিছ, এতো চরিত্রের প্রস্তাব পাই। ‘দেবী’, ‘আরণ্যক’এগুলো নিয়ে কেউ ছবি করছে না কেন। জয়া বলেন, তাছাড়া ‘দেবী’ উপন্যাস পড়ার সময় থেকেই আমি রানু চরিত্রের প্রেমে পড়েছিলাম। যখন দেখলাম কেউ এটা নিয়ে ছবি করছে না তখন আমি নিজেই চেষ্টা শুরু করলাম।

ছবিতে বানাতে গিয়ে অনেক নতুন অভিজ্ঞতা পেয়েছেন প্রযোজক জয়া আহসান। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র মিসির আলীতে কে অভিনয় করবেন সেটা নিয়ে ছিল সংশয়। বাংলাদেশ ও কলকাতার অনেক অভিনেতাই এই চরিত্রে নিজেকে সাজাতে চেয়েছেন। কিন্তু জয়ার মনে হয়েছে এর জন্য বাংলাদেশের চঞ্চল চৌধুরীই সবচেয়ে বেশি পারফেক্ট। কিন্তু চঞ্চল প্রথমেই এই ছবিটা করতে রাজী হননি। এ প্রসঙ্গে চঞ্চল বলেন, ‘যখন আমাকে প্রস্তাবটা দেওয়া হয়েছিল তখন সারাদেশে ‘আয়নাবাজি’ নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল। তাছাড়া আমি হুমায়ূন স্যারের অনেক বড় ভক্ত। তারপরেও মনে দিধা সঙ্কোচ কাজ করছিল। কারণ এতো পরিচিত একটি চরিত্র, বহু পঠিত। সবাই মনে মিসির আলীকে ধারণ করে। এই অবস্থায় এটা অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ।’

আর এই চ্যালেঞ্জ নিতে গিয়ে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে চঞ্চল চৌধুরীকে। উপন্যাসের মিসির আলীর মতো চুল বানাতে ৬ ঘন্টা পর্যন্ত মেকাপ নিতে হয়েছে তাকে। হাসতে হাসতে চঞ্চল বলেন, জয়া পরিকল্পিতভাবে আমার চুলগুলো নষ্ট করতে চেয়েছিল।

কেন চঞ্চলের বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্র? প্রশ্নের উত্তরে জয়া বলেন, ‘আমি আমার মিসির আলীকে এভাবেই দেখতে চেয়েছি। প্রথমে সাহস পাচ্ছিলাম না চঞ্চলকে কিভাবে বলবো তার চুলগুলো সাদা করতে। শেষ পর্যন্ত চরিত্রটাকে ফুটিয়ে তুলতে বলতে বাধ্য হয়েছি।’ এবার চঞ্চল বলেন, এই প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে একদিন ভয়াবহ বিপদে পরেছিলাম। চুলে সাথে আমার দাড়িগুলোর সাদা কালো করতে গিয়ে সাদা নেল পালিশ লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেগুলো তুলে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে অনেক কষ্ঠ হয়েছিল।

এর আগে বাংলাদেশ আরো তিনজন মিসির আলী চরিত্রে অভিনয় করেছেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন, আবুল খায়ের, আবুল হায়াত, ও আসিস খন্দকার। এদের একজন পরলোকগত। চঞ্চল চৌধুরীর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল মিসির আলী চরিত্রে অভিনয় করা আগে তাদের কালো সাথে যোগাযোগ করা হয়েছিল কিনা? তিনি বলেন, ‘ আমার একবার আবুল হায়াত ভাইয়ের সাথে দেখা হয়েছিল তখন বলেছিলাম মিসির আলী চরিত্রে কাজ করিছি। তবে আমি পূর্বের কোন মিসির আলীকেই ইউটিউবে দেখার চেষ্টা করিনি। কারণ আমরা চেষ্টা করিছি দেবী’র মিসির আলীকে ফুটিয়ে তুলতে।

এই চরিত্রে অভিনয় করার ইচ্ছে ছিল সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের। জয়া কী তাকে নিয়ে কাজ করার কোন পরিকল্পনা করেছিলেন? ‘সত্যি কথা বলতে কী আমি প্রথমেই আসাদুজ্জামান নূরের কথা চিন্তা করেছিলাম। কিন্তু উনি এখন যে পরিমান ব্যাস্ত মানুষ, তাকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়ারই সাহস পাইনি।’ ছবিটির পরিচালক অনম বিশ্বাসের প্রশংসা করে জয়া বলেন, ব্যাক্তিগতভাবে অনম অনেক লাজুক প্রকৃতির। তবে কাজের বেলায় তিনি অনেক ট্যালেন্ড। বড় পর্দায় দর্শক মিসির আলীকে দেখলেই দর্শক সেটা বুঝতে পারবেন। মিসির আলীর ইন্ট্রোডিউসিং পার্টটা হুমায়ূন আহমেদ স্যারের বইয়ে লেখা ছিল না। তবে অনম যেভাবে উপস্থাপন করেছে দর্শক ভাববেন এটা হুমায়ূন স্যারেরই লেখা।

ছবির প্রধান দুটি চরিত্র রানু আর মিসির আলী। যে চরিত্র দুটিতে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান আর চঞ্চল চৌধুরী। প্রশ্ন ছিল অভিনয় করতে গিয়ে কী কেউ ইর্ষা করেছেন? প্রথমে উত্তর দিলেন জয়া, বললেন, আমার মধ্যে কোন দিনও এটা কাজ করে না। একটা আছে না, আমার ছবি বলে বেশ অভিনয় করে ফাটিয়ে দিব। সেরকমও না। অন্য আট-দশটা ছবির মতোই অভিনয় করেছি। তবে মিসির আলীকে নিয়ে অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল আমার মনে হয় সে জায়গাটা আামি সফল।’ চঞ্চল বলেন, আমার কথাও জয়ার মতোই।

বাংলাদেশর অন্য যে কোন ছবির চেয়ে দেবীর প্রচারণায় অভিনবত লক্ষ্য করা গেছে। এর কারণ প্রসঙ্গে জয়া বলেন, একটা সুন্দর জিনিস বানানোর পর সেটা দর্শকদের কাছে উপস্থাপন করাটা অনেক জরুরী। তাছাড়া এটা সরকারি অনুদানের টাকায় বানানো হয়েছে। সরকারি টাকা মানে জনগণের টাকা। তাই জনগণের কাছে ছবিটা পৌছে দেওয়াটা ও একটা ব্যাপার। তাছাড়া যারা ‘দেবী’উপন্যাসটা পরেনি তাদেরকে এ সম্পর্কে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। প্রশ্ন হচ্ছে, উপন্যাসের সাথে ছবির মিল মূলত কতখানি? জয়া বলেন, একটা কথা বলে রাখি, সেটা হলো, এই ছবিটা দেবী উপন্যাসের অনুপ্রেরণায় করা হয়ছে। সুতরাং হুবুহু মিল খুজে পাওয়ার কোন কারণ নাই। যেমন, নারেকের গাছের পাতার উপর ভূত বসে আসে। ওটা বর্তমান সময়ের সাথে যায় না। ওখানে বর্তমান সময়কে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। সবশেষে তিনি বলেন, আমি আশা করবো সবাই হলে গিয়ে ছবিটা দেখবেন। কারণ হলে গিয়ে দেখলে আমি ভবিষতে আরো ছবি বানাতে উদ্ভদ্ধ হবো।


আরো সংবাদ



premium cement
নয়া দিগন্তের শৈলকুপা সংবাদাতার ওপর দুর্বৃত্তদের হামলা ডিএমপির অভিযানে গ্রেফতার ৩৯ সুন্দরবনে জ্বলছে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫ ইউনিট শায়েস্তাগঞ্জে সাবেক সেনা সদস্য ট্রাকচাপায় নিহত ইসরাইল-গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনা নিয়ে কায়রোতে জোরদার প্রচেষ্টা ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৫ ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারী আটক গাজীপুরে তুলার গুদামে আগুন স্টপেজের দাবিতে ফরিদপুরে প্রথম দিনই ট্রেনের গতিরোধ সন্দেশখালির ধর্ষণের অভিযোগ সাজানো, বিজেপি নেতার ভিডিওতে তোলপাড় খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় বজ্রপাতে মা-ছেলের মৃত্যু গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় পূর্ব আফ্রিকায় মানবিক সঙ্কটের অবনতির হুমকি স্বরূপ

সকল