২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পুলিশের বর্ণনায় মুহিবুল্লাহ হত্যা মিশন

- ছবি : সংগৃহীত

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের শীর্ষনেতা ও আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় কিলিং স্কোয়াডের পাঁচজন অস্ত্রধারী মাত্র দু’মিনিটেই তাদের হত্যা মিশন শেষ করে পালিয়ে যান। এ হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন ১৯ জন। তাদের মধ্যে শুটার আজিজুসহ চারজনকে এ পর্যন্ত গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, আটকদের জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানা গেছে। এই হত্যা পূর্ব পরিকল্পিত ছিল বলেও পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন আটক রোহিঙ্গারা।

শনিবার দুপুরে উখিয়ায় মুহিবুল্লাহর হত্যার কিলিং স্কোয়াডের সদস্য আজিজুল হককে গ্রেফতারের পর প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন ১৪ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এসপি নাঈমুল হক।

আজিজুল হক ছাড়াও কুতুপালং ক্যাম্প-১-এর ডি ৮ ব্লকের আব্দুল মাবুদের ছেলে মোহাম্মদ রশিদ প্রকাশ, মুরশিদ আমিন, একই ক্যাম্পের বি ব্লকের ফজল হকের ছেলে মোহাম্মদ আনাছ ও নুর ইসলামের ছেলে নুর মোহাম্মদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদে আজিজুলের স্বীকারোক্তির কথা উল্লেখ করে এসপি নাঈমুল হক বলেন, মুহিবুল্লাহ হত্যার দু’দিন আগে মরগজ পাহাড়ে কিলিং মিশনের জন্য বৈঠক করে দুর্বৃত্তরা। সেখান থেকে পাঁচজনকে অস্ত্রসহ মোট ১৯ জনকে নির্দেশ দেয়া হয় মিশন শেষ করার জন্য।

তিনি বলেন, দিনে দিনে রোহিঙ্গাদের নেতা হিসেবে পরিচিত হচ্ছিলেন মুহিবুল্লাহ। তাকে যেকোনো মূল্যে ঠেকাতে চেয়েছিল তার প্রতিপক্ষ। তাই ২৯ সেপ্টেম্বর মুহিবুল্লাহকে বাসা থেকে তার অফিসে প্রত্যাবাসন বিষয়ে কথা আছে বলে ডেকে নেয় গ্রেফতার মুরশিদ। তারপর বাকিদের সঙ্কেত দিয়ে দেন তিনি।

তিনি আরো জানান, তাদের মধ্যে আজিজুল হক প্রথমে একটি, তার পরের জন দু’টিসহ মোট চারটি গুলি করা হয় মুহিবুল্লাহকে। তারপর মুহিবুল্লাহর বাড়ির পেছন দিয়ে পালিয়ে যান স্কোয়াডের পাঁচ সদস্য।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প-১ ইস্ট-ওয়েস্ট (ডি ব্লকে) নিজ অফিসে অবস্থান করছিলেন মুহিবুল্লাহ। এ সময় বন্দুকধারীরা গুলি করে তাকে হত্যা করেন। এখন পর্যন্ত এ হত্যা মামলায় নয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে মোহাম্মদ ইলিয়াছ নামে একজন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আদালতে।

মূলত রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহর উত্থান হয় ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা আগমনের বর্ষপূর্তিতে। ওইদিন তিনি লাখো রোহিঙ্গার সমাবেশ ঘটিয়ে নিজেকে আলোচনায় নিয়ে আসেন।

এরপর তিনি উখিয়া-টেকনাফের ৩২ রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের একচ্ছত্র আধিপত্য নিয়েছিলেন। রোহিঙ্গাদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে দক্ষ হওয়ায় ধীরে ধীরে বাংলাদেশে অবস্থানরত শরণার্থীদের প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠেন মুহিবুল্লাহ।


আরো সংবাদ



premium cement