২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

লাকসামে সম্পত্তির বিরোধে প্রতিপক্ষের টেটাবিদ্ধ হয়ে যুবক নিহত

লাকসামে সম্পত্তির বিরোধে প্রতিপক্ষের টেটাবিদ্ধ হয়ে যুবক নিহত - নয়া দিগন্ত

লাকসামে সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ঘুমন্ত অবস্থায় বাড়ীঘরে হামলা ভাংচুর লুটপাট ও টেটার আঘাতে একজন নিহত ও মহিলাসহ অন্তত ১০জন আহত হয়েছে। নিহত মোহাম্মদ হোসেন (৩৬) সে উপজেলার শ্রীয়াং গ্রামের ছাড়াবাড়ীর ইউনুসের ছেলে। বৃহস্পতিবার ভোরে ভূঁইয়া ছাড়া বাড়ীতে এঘটনা ঘটে। নিহত মোহাম্মদ হোসেনের চাচাতো ভাই সাইফুল বাদী হয়ে ২৬ জনের বিরুদ্ধে লাকসাম থানা একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৬ সালে ২৯ শতকসহ ৩ একর ৫৭ শতক সম্পত্তি নিয়ে উপজেলার মুদাফরগঞ্জ দক্ষিন ইউপির ৮নং ওয়ার্ড শ্রীয়াং গ্রামে আবু তাহের মরণ ও মনির হোসেন মনুর দুই পক্ষের সাথে সম্পত্তি বিরোধ চলে আসছে। এ সম্পত্তি ঘিরে ৪০/৪৫ বছর ধরে দুই পক্ষের মধ্যে ৪জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছে। এ ঘটনা নিয়ে উভয় পক্ষের মালাও একাধিক হয়েছে। উচ্চ আদালতে তাদের মামলা বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে। এ সম্পত্তি দখল নিয়ে কয়েক বছরে ধরে দুই গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষে আহত ও নিহত হয়েছে।

স্থানীয়রা আরো অভিযোগ করে বলেন, পূর্বে সুত্রতার জের ধরে বৃহস্পতিবার ভোরে অজ্ঞাত ৩৫/৪০জন ব্যক্তিরা মনির হোসেন মনুর বাড়ীসহ ৫টি বসতবাড়িতে থাকা লোকজন ঘুমান্ত অবস্থায় হামলাকারীরা টেটা, বল্লম, চাকুসহ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে তাদের বাড়ী ঘরে হামলা ভাংচর, লুটপাটসহ গাছপালা কেটে আতংক সৃষ্টি করে। এসময় মোহাম্মদ হোসেন ঘর থেকে বাহিরে আসলে তার বুকের মধ্যে টেটা বিদ্ধ করে হামলাকারীরা। তার আত্মচিৎকারে বাড়ীর স্বজনরা এগিয়ে আসলে তাদেরকে পিটিয়ে আহত করে ঘাতকরা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মোহাম্মদ হোসেনের মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা আহতদেরকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করেন। খবর পেয়ে লাকসাম থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে টেটা বিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

মামলার বাদী নিহত মোহাম্মদ হোসেনের চাচাতো ভাই সাইফুল জানান, নিহত সম্পত্তির জের ধরে আবু তাহের মনাদের সাথে দন্ধ চলে আসছে। আবু তাহের মনার পক্ষে রাশেদ ও সাইফুলসহ কয়েকজন লোক অর্তকৃত ভাবে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে আজ ভোরে আমাদের বাড়ীতে হামলা ভাংচুর করে আমার ভাইয়ের বুকের মধ্য নির্মম ভাবে টেটার আঘাতে হত্যা করে। তাই আমি বাদী হয়ে একই এলাকার শাহজানের ছেলে রাশেদ ও আজিজের ছেলে সাইফুলসহ ২৬জনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে লাকসাম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।

স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার শহিদ উল্লাহ চৌধুরী বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনা স্থলে যাই। তাদের এ সমস্যা দীর্ঘ দিনের। একাদিকবার বিভিন্ন উচ্চ মহলের লোকজন এ সমস্যা সমাধানে বসা হলেও তাদের বিরোধ সমাধান সম্ভব হয়নি। একাধিক হামলা মামলা ও হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। ঘুমন্ত অবস্থায় মানুষের উপর আজকের হামলা পূর্ব পরিকল্পিত এবং দুঃখ জনক।

লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিজাম উদ্দীন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে নিহত মোহাম্মদ হোসেনের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ওই এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement