২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

লালমোহনে বিলুপ্তির পথে শিমুল গাছ

লালমোহনে বিলুপ্তির পথে শিমুল গাছ - ছবি : নয়া দিগন্ত

ভোলার লালমোহনে বিলুপ্ত হতে চলেছে প্রকৃতির সৌন্দর্যবর্ধনকারী শিমুল (তুলা গাছ) গাছ। বসন্ত এলেই প্রকৃতিপ্রেমীদের আকৃষ্ট করে থাকে শিমুল ফুল। অন্যান্য গাছের তুলনায় শিমুল গাছ অনেক উঁচু হওয়ায় বহু দূর থেকে এ গাছটির মনোরম দৃশ্য চোখে পড়ে। কবির কল্পনা জগতকেও আলোড়িত করে এ গাছের সৌন্দর্য। গাছটি কেবল সৌন্দর্যই বিলায় না, শিমুল গাছে রয়েছে নানা উপকারিতা ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব।

প্রাকৃতিকভাবে তুলা আহরণের অন্যতম অবলম্বন শিমুল গাছ। এ গাছের সব অংশেরই রয়েছে ভেষজগুণ।
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা এখনো নানা রোগের চিকিৎসায় এ গাছের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করে। গাছগাছালির উপকারিতা নামক বইতে জানা যায়, শিমুল গাছের বৈজ্ঞানিক নাম ‘বোমবাক্স সাইবা লিন’। এটা বোমবাকাসিয়াক পরিবারের উদ্ভিদ। বীজ ও কান্ডের মাধ্যমে এর বংশবিস্তার হয়। রোপণের ৬-৭ বছরের মধ্যে শিমুল গাছে ফুল ফোটে। গাছটি ৮০ থেকে ১০০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়।

নানা ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে শিমুল গাছ দেড় শ’ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। শীতের শেষে পাতা ঝরে পড়ে। বসন্তের শুরুতেই গাছে ফুল ফোটে। আর এ ফুল থেকেই হয় ফল। চৈত্র মাসের শেষের দিকে ফল পুষ্ট হয়। বৈশাখ মাসের দিকে ফলগুলো পেকে শুকিয়ে গিয়ে বাতাসে আপনা আপনিই ফল ফেটে প্রাকৃতিকভাবে বাতাসের সাথে উড়ে উড়ে দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়া বীজ থেকেই এর জন্ম হয়। অন্যান্য গাছের মতো এ গাছ কেউ শখ করে লাগায় না। প্রাকৃতিকভাবেই এ গাছ বেড়ে ওঠে।

এ গাছের প্রায় সব অংশই কাজে লাগে। এর ছাল, পাতা ও ফুল গবাদি পশুর খুব প্রিয় খাদ্য। বালিশ, লেপ ও তোষক তৈরিতে শিমুল তুলার জুড়ি নেই। অথচ বর্তমান সময়ে মানুষ এ গাছকে তুচ্ছ মনে করে কারণে অকারণে কেটে ফেলছে। অতীতে ব্যাপক হারে নির্মাণকাজ, টুথপিকসহ নানা ধরনের প্যাকিং বাক্স তৈরি ও ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় রোপণ করা হয়নি। ফলে আজ বিলুপ্তির পথে।

লালমোহন উপজেলার রমাগঞ্জের পূর্বচরউমেদ গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি আব্দুল মালেক ও আব্দুর রহমান জানান, আগে গ্রামে গ্রামে অনেক শিমুল গাছ ছিল। এ শিমুল ঔষধি গাছ হিসেবেও পরিচিত। গ্রামাঞ্চলের মানুষ বিষফোঁড়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে এ গাছের মূল ব্যবহার করত। চতলা এলাকার তেগাছিয়া গ্রামের আব্দুল আলী জানান, একটি বড় ধরণের গাছ থেকে তুলা বিক্রি করে ১০-১৫ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। আগের তুলনায় এখন শিমুলের তুলার দাম অনেক বেড়ে গেছে। এখন এ গাছ নিধন হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

উপজেলার সচেতন মহল মনে করেন, প্রতিবছর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আওতায় অন্যান্য গাছের সাথে শিমুল গাছের চারাও রোপণ করতে হবে। এ গাছ রক্ষায় এখনই ব্যবস্থা না নিলে এক সময় উপকারী গাছের তালিকা থেকে এ গাছটি হারিয়ে যাবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হয়তো জানতেও পারবে না বাংলাদেশে শিমুল নামের কোন গাছ ছিল। এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলায় কর্মরত বনবিভাগের এফ জি মো: তাজুল ইসলাম নয়া দিগন্তকে বলেন, শিমুল গাছ পরিবেশের সৌন্দর্যবর্ধনকারী এবং উপকারী এ গাছ রক্ষা করা সকলের দায়িত্ব ও কর্তব্য।


আরো সংবাদ



premium cement
গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলি হামলায় নিহত ১৫ মুজিবনগরে ২ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, আহত ১৩ বাগেরহাটের রামপালে ট্রাকের চাপায় নিহত ৩ ফিলিস্তিনের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব বিশ্ববিদ্যালয় বিক্ষোভে উত্তাল পূর্ব আফ্রিকায় প্রবল বৃষ্টি ও বন্যা, কমপক্ষে ১৫৫ জনের প্রাণহানি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে প্রশ্নবিদ্ধ তথ্য প্রচারের নিন্দা ডিআরইউর ভয়াবহ দুর্ঘটনা, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন উগ্র ইসরাইলি মন্ত্রী শেরে বাংলার সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন হাত কাটা বন্দীর নেতানিয়াহুর সমালোচনা ইসরাইলের আলটিমেটাম, যা বলল হামাস রাশিয়ার প্রতি চীনের সমর্থনের বিরুদ্ধে ব্লিংকেনের হুঁশিয়ারি

সকল