১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলকদ ১৪৪৫
`


কুষ্টিয়ার উপকারাগার ৪০ বছরেও কয়েদির মুখ দেখেনি

-

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার উপকারাগার গত ৪০ বছরেও কয়েদির দেখা পায়নি। কারারক্ষীর স্থলে ছাগল আর পুরুষ কয়েদির স্থলে গরুর বসবাস। তবে কারগারটিকে কিশোর অপরাধ দমনে কিশোর শোধানাগার বা উন্নয়ন কেন্দ্রে রূপান্তিত করার গুঞ্জন থাকলেও কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি এখনো।
প্রায় ১২ দশমিক ২ একর জমির উপর আশির দশকে অত্যন্ত সুরম্য প্রাচীর বেষ্টিতে নির্মাণ করা হয় কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় উপকারাগারটি। দীর্ঘ দিন কারাগারটি অরক্ষিত অবস্থায় থাকলেও ২০১৮ সালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে বর্তমানে কারাগারটি নিয়ন্ত্রণ করে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়। সেখানে সমাজসেবা কার্যালয়ের একজন স্টাফ সপরিবারে বসবাস করেন। তবে স্থানীয়দের দাবিÑ কারাগারটি যথাযথ ব্যবহার করা হোক।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, প্রবেশপথে কারারক্ষী থাকার কথা থাকলেও রয়েছে দুইটি ছাগল। মূল ফটকে প্রবেশ করতেই বাম দিকে চোখে পড়বে মহিলা কয়েদির ওয়ার্ড; সেটিও ইট আর বাটমে ভরপুর। ভবনটির একটু সামনে গেলেই পুরুষ ওয়ার্ড। সেখানে রয়েছে কয়েকটি গরু আর গোবর। পাশেই রয়েছে মুরগি পালনের ছোট একটি কক্ষ। হাঁস, মুরগি, গরু আর ছাগল পালনের খামার হিসেবেই বর্তমানে কারাগারটি ব্যবহার করছে জেলা সমাজসেবা অফিসের একজন নাইট গার্ড। দীর্ঘ দিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দেয়াল থেকে খসে খসে পড়ছে ইট-সিমেন্ট। দরজা জানালার কাঠগুলো অনেক আগেই হারিয়ে গেছে। কারাগারের বাইরে অফিস স্টাফদের জন্য নির্মিত তিন কক্ষবিশিষ্ট কোয়ার্টারটি অনেক আগেই দখল করে নিয়েছে স্থানীয়রা।
জেলা সমাজসেবা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, আশির দশকে সারা দেশের ১৭টি জেলায় ২৩টি উপকারাগার নির্মাণ করেন তৎকালীন দেশের প্রেসিডেন্ট মরহুম হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তন্মধ্যে একটি হলো কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার অরক্ষিত এই উপকারাগারটি। কারাগারটি বর্তমানে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের খোকসা পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত। এই উপকারাগারটিতে রয়েছে একটি প্রবেশপথ, দু’টি কয়েদি রাখার হলরুম, দু’টি সাক্ষাৎকার কক্ষ, একটি স্টোর রুম, দুই কক্ষবিশিষ্ট একটি অফিস রুম আর তিন কক্ষবিশিষ্ট একটি কোয়ার্টার। রয়েছে বেশ কয়েকটি টয়লেটও।
জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক রোকসানা পারভীন বলেন, উপকারাগারটি নানা জটিলতায় আজো চালু হয়নি, তবে প্রতিকী মূল্যে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেল সুপার তায়েফ উদ্দিন মিয়া বলেন, কিশোর অপরাধ দমনে এই উপকারাগারটি কিশোর শোধনাগার বা উন্নয়ন কেন্দ্রে রূপান্তিত করে সমাজসেবা কার্যালয়ের অধীনে দেয়া হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement