বাড়ির আঙিনায় মাল্টা চাষে চমক দেখালেন মনির
- হুমায়ূন কবীর নাগরপুর (টাঙ্গাইল)
- ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০
এক সময়ের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম মনির বাড়ির আঙিনায় মাল্টা চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। ক্ষুদ্র ব্যবসার সুবাদে কৃষিবিদ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ছারেয়ার হোসাইনের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতায় তার এই সাফল্যের শুরু। মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করে সংসারের চাকা ঘোরাতে পড়ালেখা বাদ দিয়ে ব্যবসায় বসতে হয়েছে মনির হোসেনকে। জীবনের ঘানিটানা মনির ক্ষুদ্র ব্যবসার মাধ্যমে নতুন জীবন শুরু করলেও সম্প্রতি মাল্টা চাষে সাফল্য তার জীবনে নতুন স্বপ্নের বীজ বপন করেছে। প্রায় তিন বছর আগে পরিবারের সবার পুষ্টির চাহিদা মেটাতে বাড়ির আঙিনায় মাল্টা চাষ করেন। গত দুই বছর ধরে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে স্থানীয় বাজারে মাল্টা বিক্রি করে চলেছেন। খরচ অনুযায়ী এখন ব্যাপকভাবে লাভবান হচ্ছেন তিনি।
মনির নতুন উদ্যোক্তা তরুণ-তরুণীদের উদ্দ্যেশে বলেন, বেকার ঘরে বসে না থেকে ফল-ফুল ও সবজির বাগান করে বিপুল পরিমাণ আয় করা যায়। এ মাটিতে যেকোনো ধরনের ফসলাদি ফলানো সম্ভব, কিন্তু থাকতে হবে কঠোর প্রচেষ্টা। যেকোনো বয়সের নারী-পুরুষও এগিয়ে আসতে পারেন এ পেশায়। বাণিজ্যিকভাবে না হোক বাড়ির চাহিদা মেটানোর জন্যও দারুণ ভূমিকা রাখতে পারবে মাল্টা চাষ। এ ছাড়াও যদি কেউ নতুন উদ্যোক্তা হতে চান সে ক্ষেত্রে তিনি বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করবেন।
প্রায় ১০ শতাংশ বাড়ির আঙিনায় বারি-১ জাতের মাল্টা চাষ করেছেন মনির। ইতোমধ্যে বাড়ির আঙিনায় বিদেশী ফল মাল্টা চাষ করে সফল হয়েছেন তিনি। উপজেলায় এই প্রথম বসতবাড়িতে ছোট বাগান আকারে মাল্টার চাষ হওয়ায় প্রতিদিন তার বাগানটি দেখতে আসেন অনেকে। তার বাগানে ৩৫টি মাল্টা গাছ রয়েছে।
সম্প্রতি মাল্টার বাগান পরিদর্শনে গিয়ে কথা হয় ইরতা গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে মনিরুল ইসলাম মনিরের সাথে। এ বিষয়ে উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রুবেল আহম্মেদ বলেন, ওই চাষি মাল্টা চাষে আগ্রহী। তার বাড়ির আঙিনায় মাল্টা গাছ নিয়মিত দেখাশোনা করার পাশাপাশি শীত মৌসুমে পানির অভাবে গাছগুলো যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণের মাধ্যমে ডিপ-ইরিগেশনের সেচের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে। আশা করছি বাড়ির আঙিনায় মাল্টা চাষে সাফল্য দেখে দিন দিন উদ্যোক্তা বাড়বে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মতিন বিশ^াস বলেন, মনিরুল একজন মডেল চাষি। বাড়ির আঙিনায় মাল্টা চাষ করে তিনি তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। মাল্টা চাষ বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রায় সব মৌসুমী জলবায়ু মাল্টা চাষের জন্য উপযোগী ও ফলনের জন্য অনুকূল। অতিপুষ্টিকর ও ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফল মাল্টা। সাধারণত জুন থেকে জুলাই মাস মাল্টা গাছ রোপণের উপযুক্ত সময়। তবে পানি সেচের ব্যবস্থা থাকলে সারা বছর রোপণ করা যায়। যথাযথ পরিচর্যার মাধ্যমে প্রথম বছর প্রতি গাছ থেকে ২০-৫০টি, দ্বিতীয় বছর ১০০-১৫০টি ও তৃতীয় বছর তারও বেশি ফল সংগ্রহ করা যাবে। ধীরে ধীরে কৃষকরা এ ফল চাষে আগ্রহী হবেন বলে আশা করছি। নতুন উদ্যোক্তাদের চাষের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা