২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ভয়াবহ ঝুঁকিতে চুয়াডাঙ্গা সতর্কতা মানতে অনীহা

নিষেধাজ্ঞার ৪ দিন পরই সব কিছু আগের মতো
নিষেধাজ্ঞার চার দিন পেরোতেই চুয়াডাঙ্গা শহর আগের চেহারায় ফিরে গেছে : নয়া দিগন্ত -

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতায় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হলেও চুয়াডাঙ্গার বেশির ভাগ এলাকার চিত্রই ভিন্ন। করোনার কারণে শহরে সে রকম কোনো সচেতনতা লক্ষ করা যায়নি। বরং প্রায় স্বাভাবিকভাবেই চলাফেরা ও একে অপরের সাথে মেলামেশা করছেন এখানকার বাসিন্দারা। এমনিতেই সীমান্ত এলাকা হওয়ায় এখানে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি, তার ওপর এরকম অবাধ চলাফেরা ও মেলামেশার কারণে ভয়াবহ সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে চুয়াডাঙ্গা। শহরবাসী এক কথায় প্রশাসনের সব সচেতনতামূলক পরামর্শ ও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করছেন। করোনা প্রতিরোধে ঘোষিত ছুটির চার দিন পার হতে না হতেই শহর যেন স্বাভাবিক সময়ের চেহারায় ফিরে গেছে। বাজার ও দোকানপাটে একজন আরেকজনের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে কেনাকাটা করছেন। এক ক্রেতার হাতে অন্য ক্রেতার হাত লাগছে। হাতে গ্লাভস পরা ক্রেতা একেবারেই চোখে পড়ে না। কিছু ক্রেতা মাস্ক ব্যবহার করলেও মাস্ক ছাড়া ক্রেতার সংখ্যাই বেশি। আবার পাশাপাশি দাঁড়ানো কোনো একজন হাঁচি-কাশি দিলে পাশের লোকটি মুখটা একটু ঘুরিয়ে সরে যাচ্ছেন, ব্যস এটুকুই। গত দুই দিন সরেজমিন চুয়াডাঙ্গার বড়বাজারসহ বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। জনসাধারণের এমন অসচেতনতায় করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শহরের বড় বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রয়োজনীয় কাঁচাবাজার, চাল, ডাল ও মাছ-গোশত কিনতে নানা বয়সী নারী-পুরুষের ভিড়। এই ভিড় ঠেলে সবাই যে যার মতো কেনাকাটা করছেন। করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকারের পক্ষ থেকে একে অন্যের সাথে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হলেও তার ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি। বাজারে মাছ কিনতে আসা মুখে মাস্ক পরা সুমন পারভেজ নামে এক ক্রেতা বলেন, ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলি করে কেনাকাটা করতে হচ্ছে। বেশির ভাগ লোকই সচেতন নয়, মুখে মাস্কও নেই। যার ফলে প্রয়োজনে বাজারে এসে অস্বস্তিতে ভুগছি। বাজারে মজুরের কাজ করেন হাবিব দিনমজুর নামের এক ব্যক্তি। চালের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। তার মুখে মাস্ক কিংবা হাতে গ্লাভস নেই। ‘করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব চলছে, কেন মাস্ক পরেন না?’Ñ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি বস্তা টানি, মাস্ক পরলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। আল্লাহই আমাদেরকে ভাইরাস থেকে রক্ষা করবেন।’
মাছের বাজারেও একই অবস্থা। এখানেও ভিড় ঠেলাঠেলি করে লোকজনকে কেনাকাটা করতে দেখা গেছে। রাব্বি নামের একজন মাছ কিনছিলেন। মুখে মাস্ক পরেননি। এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভাইরাস থেকে সুরক্ষায় মাস্ক পরা ভালো। বাজারে আসার সময় মাস্ক সাথে আনতে ভুলে গিয়েছিলাম।’
বড় বাজার চৌরাস্তার মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, অসংখ্য নারী-পুরুষের ভিড়। বেশির ভাগের মুখেই মাস্ক নেই, গ্লাভস তো দূরের কথা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করে এক নারী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে মাস্ক পরা উচিত। কিন্তু রোজকার বাজারের টাকাই তো জোগাড় করা কষ্ট, সেখানে মাস্ক কিনমু কি দিয়া।’ আওয়াল নামের এক ব্যক্তি মাস্ক পরেছেন, হাতে রয়েছে গ্লাভস। তিনি বলেন, আমাদের দেশের লোকজন এখনো করোনাভাইরাসকে গায়ে মাখছেন না। এই ভাইরাস যে কতটা ভয়াবহ সেটা আমলে নিচ্ছেন না অনেকেই। আমাদের বেশির ভাগ লোকই ইতালি, স্পেনে করোনাভাইরাসে ভয়াল থাবার কথা জানে বলে মনে হয় না। জানলে এতটা অসচেতন হতে পারত না। এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে জনসচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে মানুষকে সচেতন করার কাজ প্রতিনিয়তই করা হচ্ছে। মাইকিং থেকে শুরু করে লিফলেট বিতরণসহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা কাজ করছেন। এখন প্রত্যেককেই সচেতন হতে হবে। যে দেশগুলো এটা মানেনি তাদের অবস্থা খুব একটা ভালো না। তাই প্রত্যেককে সচেতন হতে হবে, সামাজিক দূরত্ব বাজার রেখে চলতে হবে। তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে যার যার ঘরে থাকাই ভালো। অপ্রয়োজনে বাইরে না বেরিয়ে নিরাপদে ঘরে থাকা এখন সময়ের দাবি।


আরো সংবাদ



premium cement
ঈশ্বরদীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪২.৪ ডিগ্রি তাপমাত্রার রেকর্ড ‘মুক্ত সাংবাদিকতা চরম সঙ্কটে’ ‘রাফা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরাইলি সেনারা’ ৪৬তম বিএসএস প্রিলি পরীক্ষা : শুরুতেই স্বপ্নভঙ্গ ৮১ শিক্ষার্থীর মরুর উষ্ণতায় ক্ষতির মুখে কৃষি ছেলেদের কারণে বিপাকে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে ফ্রান্স, ব্রাজিল ও প্যারাগুয়ে সফরে যাচ্ছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ড সফরকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক বললেন প্রধানমন্ত্রী লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী যুবক নিহত এখনো শেষ হয়নি বিতর্কিত আউটের রেশ, ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ মুশফিকের

সকল