নিরস্ত্র মুসলমানদের গুলি করে হত্যায় জড়িত দুই সৈনিকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ এনেছে থাইল্যান্ড পুলিশ। বুধবার এই অভিযোগ (চার্জ) প্রকাশ হওয়ার পর এই ঘটনাকে ‘নজিরবিহীন’ বলে অভিহিত করেছে দেশটির পুলিশ। এই ধরনের খুনের হত্যার ন্যায়বিচার পাওয়াকে বিরল বলে অভিহিত করেছে একটি মানবাধিকার গোষ্ঠী।
দেশটির পুলিশ প্রধান জানান, গত ১৬ ডিসেম্বর ওই দুই সৈনিক থাইল্যান্ডর দক্ষিণাঞ্চলে নারাথিওয়াট প্রদেশের একটি পাহাড়ে তিনজন মুসলমানকে গুলি করে হত্যা করে। পাহাড়ী বনাঞ্চল থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার বিষয়ে ‘দুঃখ প্রকাশ’ করে তারা অবশ্য বলেছে, পরিচয়ের ভুলেই এই ঘটনা ঘটেছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশটিতে এ ধরনের ঘটনার খুব কমই তদন্ত করা হয়। গোলাগুলির পরে সোমবার ওই দুই সেনা তাদের ব্যারাকে ফিরে গেছেন।
ভারী অস্ত্রে সজ্জিত সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি দক্ষিণ সীমান্তবর্তী অঞ্চলকে অচল করে দেয়। এরা বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির চেকপয়েন্টগুলিতে ঝটিকা আক্রমণ করে এবং সন্দেহভাজনদের সন্ধানে কঠোর অভিযান পরিচালনা করে।
কিছুদিন আগেই সেনা সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় নির্যাতনে এক মুসলিমের কোমায় চলে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। প্রায় মাসখানেক পর তিনি মারাও যান। এ নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যে সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনা হলো।
থাই সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল নরিন বোসামান জানিয়েছেন, তাদের (দুই সৈনিক) খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছিল, তবে তারা তদন্ত চলাকালে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। তিনি ন্যায়বিচারের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘আমরা তথ্যের জন্য উভয়পক্ষের শুনানি করবো। যাতে করে উভয়ের দিকে সুবিচার করা যায়, সকলেই ন্যায়বিচার পায়।’
বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রটিতে ১৫ বছর ধরে থাইল্যান্ডের দক্ষিণে মালয় ও মুসলিম যোদ্ধাদের মধ্যে উত্তেজনাকর সংঘাত চলছে। স্বায়ত্তশাসনের জন্য লড়াই করছে বিদ্রোহীরা। এতে ৭ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই উভয় ধর্মের বেসামরিক নাগরিক।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ অনুসারে, এখনো সেখানে পোড়ানো সম্পর্কে একটি চিহ্নের ব্যাপারে গ্রামবাসীরা সতর্ক করেছে কারণ চিহ্ন মুছে দিয়ে কর্তৃপক্ষ ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করতে পারে। এটিকে নজিরবিহীনভাবে দায়মুক্তির একটি ঘটনায় পরিণত করতে পারে।
এ ঘটনায় হিউম্যান রাইট ওয়াচের থাই গবেষক সুনাই ফাসুক বলেছেন, ‘এখন বিচারের ক্ষীণ আশা বেঁচে আছে, কিন্তু এখনো অনেক পথ বাকি। এমনকি কতজন সেনা খুনের সাথে জড়িত ছিল তাও আমরা এখনো জানি না।’ এ ঘটনায় আরো সৈনিক জড়িত কিনা বলে সন্দিহান তিনি।
সূত্র : বিবিসি ও আলজাজিরা
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা