১৬ মে ২০২৪, ০২ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫
`


সুদানে অস্থিরতা বেড়েই চলছে, এবার অসহযোগ আন্দোলনের ডাক

-

সুদানে অন্তর্বর্তীকালীন সামরিক পরিষদের (টিএমসি) বিরুদ্ধে গণ-অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী প্রধান বিরোধী গ্রুপগুলো। সামরিক বাহিনীর দমনাভিযানে বহু লোক নিহত হওয়ার পর দেশব্যাপী এই অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়া হয়।

রোববার থেকে আন্দোলন শুরু করার ও বেসামরিক সরকার গঠিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে তারা। জবাবে সামরিক পরিষদ গণগ্রেফতার চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে সুদানিজ প্রফেশনালস অ্যাসোসিয়েশন (এসপিএ)। তারা বলেছে, সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ডাকা ওই অসহযোগ আন্দোলনকে সামনে রেখে ব্যাংক, বিমানবন্দর ও বিদ্যুৎ বিভাগের বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কর্মকর্তা ও কর্মজীবীদেরও হুমকি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ- এমন দাবি করেছে এসপিএ। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি সামরিক কাউন্সিল।

গতকাল রোববার রাজধানীতে বেশির ভাগ অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। শহরের ট্রাফিক লাইটগুলো জ্বলছিল। খার্তুম থেকে বিবিসির সাংবাদিক ক্যাথেরিন বারুহাঙ্গা জানান, রাজধানী খার্তুমের বেশির ভাগ এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে গুলি বিনিময়ের রিপোর্ট পাওয়া গেছে। বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেয়া নেতারা লোকজনকে বাড়িতে অবস্থান করার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, কোনো কাজে যোগ দেবেন না। এটা হলো গণ-অসহযোগ। তাদের যুক্তি সেনাবাহিনী যে নৃশংসতার সাথে দমনপীড়ন চালাচ্ছে তাতে সাধারণ বিক্ষোভ চালানো আর সম্ভব নয়। ফলে এসপিএ এক বিবৃতিতে বলেছে, রোববার থেকে শুরু হচ্ছে গণ-অসহযোগ। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে যদি বেসামরিক প্রশাসনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের ঘোষণা দেয়া হয় শুধু তাহলেই এই অসহযোগ আন্দোলন বন্ধ হবে।

অসহযোগ আন্দোলন হলো শান্তিপূর্ণ একটি কর্মসূচি। এটি হলো বিশ্বে সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র, যা শেষ অবলম্বন হিসেবে ব্যবহার করা যায়। তাদের এ কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো এমন একটি কার্যকর অচলাবস্থা সৃষ্টি করা, যার অধীনে সামরিক কাউন্সিল দেশ চালাতে ব্যর্থ হয়।
মধ্যস্থতার উদ্যোগে জড়িত তিন বিরোধীদলীয় নেতাকে গ্রেফতার করার পর আইন অমান্য আন্দোলনের এ ঘোষণা আসে। ওই নেতারা ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে শান্তি আলোচনা ফের শুরু করার চেষ্টা করেছিলেন। ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমদের সাথে সাক্ষাৎ করার কিছুক্ষণ পরই শুক্রবার বিরোধীদলীয় রাজনীতিক মোহাম্মদ ইসমাতকে গ্রেফতার করা হয়। এর পরদিন শনিবার ভোরে বিদ্রোহী এসপিএএম-এন গোষ্ঠীর এক নেতা ইসমাইল জালাব ও তার মুখপাত্র মুবারক আরদলকে গ্রেফতার করা হয়।

তাদের কোথায় রাখা হয়েছে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই গ্রেফতার অভিযান এটাই প্রমাণ করে যে, সামরিক বাহিনী মধ্যস্থতা প্রক্রিয়াকে গুরুত্বের সাথে নিচ্ছে না। তা ছাড়া বুধবার খার্তুমে নিজের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে এসপিএলএম-এনের উপপ্রধান ইয়াসির আরমানকে। ওমর আল বশিরের পতনের পর তিনি নির্বাসন থেকে দেশে ফিরেছিলেন।
আসমত ও জালাব দু’জনেই ছিলেন অ্যালায়েন্স ফর ফ্রিডম অ্যান্ড চেঞ্জের শীর্ষস্থানীয় দুই নেতা। বিরোধী নেতা, প্রতিবাদী জনতা ও বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর কাছে অ্যালায়েন্স ফর ফ্রিডম অ্যান্ড চেঞ্জ হলো একটি আমব্রেলা সংগঠন।

সুদানের অন্তর্বর্তী সামরিক কাউন্সিল (টিএমসি) আলোচনার প্রস্তাব দিলেও রক্তপাতের পর তাদের আর বিশ্বাস করা যায় না, এমন মন্তব্য করে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন আন্দোলনের নেতারা।

এপ্রিলে ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন সুদানের দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশির। তার পর থেকেই দেশটি টিএমসির নিয়ন্ত্রণে আছে। সামরিক এই কাউন্সিল বেসামরিক শাসন প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু বেসামরিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবিতে রাজধানী খার্তুমে অবস্থান ধর্মঘট চালিয়ে আসছিল দেশটির গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকারীরা। গত সোমবার আধাসামরিক বাহিনী আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিতে অভিযান চালায় এবং একপর্যায়ে গুলিবর্ষণ করে। এতে শতাধিক লোক নিহত হয় বলে দাবি করেছে বিরোধীদলীয় আন্দোলনকারীরা।


আরো সংবাদ



premium cement
মালয়েশিয়ার হুমকি : হামাস নেতাদের সাথে আনোয়ারের ছবি ফেরাল ফেসবুক বিশ্বকাপ খেলতে মধ্যরাতে দেশ ছেড়েছেন শান্ত-সাকিবরা যশোরে কলেজছাত্র হত্যা মামলা : একজনের মৃত্যুদণ্ড মাছের রাজ্যে মাছের আকাল জেলে পল্লীতে হাহাকার জিপিএ-৫ পেয়েও বিষাদে ভুগছে শারমিন! সৌদিতে থাকা রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট নবায়ন নিয়ে ‘উভয় সঙ্কটে’ বাংলাদেশ ঢাকায় কেন এ তাপদাহ, সমাধান কোন পথে দাঙ্গা-হাঙ্গামায় ইন্টারনেট বন্ধের নিরিখে ফের শীর্ষে ভারত দুবাইয়ে ধনকুবেরদের গোপন সম্পদের নথি ফাঁস পুরস্কারে বিতর্ক, ছিনিয়ে নেয়া হবে মেসির ৮ ব্যালন দ্য’র একটি? বিদ্রোহীদের রুখতে রোহিঙ্গাদের ধরে ভর্তি করাচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী

সকল