১৭ মে ২০২৪, ০৩ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫
`


শাপলার বুকে

-

শাপলা। ফুলের রাজা। ফুল মানেই এক অন্যরকম ভালো লাগা, ভালোবাসা। ফুলের সব কটি রূপই আমাকে বিমোহিত করে। সে যেখানে যেভাবেই ফুটে উঠুক না কেন। যখন সরোবরে সবুজের ফাঁকে লাল সাদা শাপলা ফুটে, তার উচ্ছ্বসিত প্রাণবন্ত চাহনী আমায় মুগ্ধ করে। এ যেন মর্তে স্বর্গের রূপ। শরতের শুভ্র কাশফুল যখন দক্ষিণা পবনের সাথে অবাধ নৃত্যে দোলে, মনে হয় শুভ্র পরীরা নেমে এসেছে মৃত্তিকায়। নদীর দুই ধারে হেসে ওঠে কাশফুল। তার থেকে ঠিকরে পড়ে যেন শুভ্র দীপ্তির ঝলক।
বসন্তকালে যখন কৃষ্ণচূড়া ফোটে, তার রূপের পসরা দিয়ে দ্বীপ্তিময় মুগ্ধকর রঙে সাজিয়ে দেয় পৃথিবীকে। গাঁদা, পলাশ, সূর্যমুখী যেন রূপের ডালি সাজিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানায় ধরিত্রীকে।
আর শাপলা। তার যেন রূপের শেষ নেই। কত রঙে, কত ঢঙে তার আত্ম প্রকাশ। লাল সাদা শাপলা আমার নয়ন বরাবরই আকর্ষিত করে। ব্যথিত মনকে আনন্দিত করে। তরি থেকে নেমে শাপলাকে ছুঁয়ে দিতে মন চায়। আর শালুক তো এক আজীব ছিজ। শহরের মানুষ কত শখ করেই না তা সংগ্রহ করে থাকে।
গোলাপ মানেই ভালো লাগার অন্য নাম। আজন্ম এক মুগ্ধতা যা ক্ষণে ক্ষণে কেবলই বাড়ে। প্রত্যেকটি পাপড়ি যেন এক নতুন ভাবনা নিশ্চুপ ভালোবাসা শিখিয়ে দেয়। যার প্রতিটি রূপই অপরূপ। এমনকি তার শুকনো রূপটাও মায়া মায়া। যেগুলো নীরবে স্মৃতি বহন করে ডায়রির পাতায়।
সন্ধ্যার শেষে তার স্নিগ্ধ স্বভাব যেন মনে হয় অবগুণ্ঠনবতী। যা ওর রূপকে আরো বাড়িয়ে দেয়।
মনে হয় যেন নীল গগন থেকে একঝাঁক নক্ষত্র নেমে এসেছে সবুজের সায়রে। সৌন্দর্যের এক বিরল উপমা।
রাতে যখন দীঘিতে সরোবরে কমল পদ্ম ফুটে, সাথে চন্দ্রের প্রতিকৃতি নীল পুকুরে ভাসে। মনে হয় যেন কেউ ভালোলাগার আল্পনা এঁকে দিয়েছে। শুভ্রস্মিতসুধাময়ী রজনীগন্ধা যেন রাত্রীর রূপকে আরো মুগ্ধময়ী করে তোলে। তার গন্ধে যেন ভুলিয়ে দিতে চায় পৃথিবীর হাজারো কষ্ট।
ইচ্ছে করে সময়টিকে এখানেই থমকে দেই। আর বছরের পর বছর এই সৌন্দর্য অবলোকন করি। এই ছোট ছোট সুন্দরগুলো আমাদেরকে পৃথিবীতে বাঁচতে শেখায়, ভালোবাসতে শেখায়। বেঁচে থাকুক আমাদের সৌন্দর্যরা।


আরো সংবাদ



premium cement