০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


রঙচটা বিকেলের সুর

-

জীবন ধূম্রজাল। জীবনের বহুমাত্রিকতা বুঝে ওঠা দায়। সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নায় জীবন বিচিত্র। জীবনের কূটার্থ বুঝতে জীবনকে গভীরভাবে ভাবতে হয়। অন্যের জীবনাচার দেখতে হয়, অনুভব করতে হয় নিজের ভেবে।
আমাদের জীবনের পরিসর খুবই ছোট। কিছু পরিবর্তন, উত্থান-পতন, ঝক্কি-ঝামেলার পর একদিন আমরা মরে যাই। তবুও এই ক্ষুদ্র প্রমোদাগারে আমরা কত বর্ণিল আয়োজনে মাতি, কত রঙিন স্বপ্ন বুনি, কত অভিলাষ-অভিমান, কত মান-অপমান, কত অপ্রীতিকর জঞ্জালে ডুবি! যেন কোনো সীমা নেই, কোনো অন্ত নেই।
শুধু জীবনের চাহিদায় আমরা এক মস্ত পৃথিবীকে চুষে চুষে খাচ্ছি। শুধু তো পৃথিবী নয়- মহাকাশ-মহাশূন্য, গ্রহ-উপগ্রহ আমাদের জিহ্বার লেহনরসে জর্জরিত হয়ে মহান স্রষ্টার দ্বারে পানাহ চাইছে।

আমরা জমিনের বুকচিরে পৃথিবীর কলজে চিবিয়ে রীতিমতো উল্লাস করছি। ধ্বংসাত্মক পঙ্গপালের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ছি প্রকৃতির পুরো অঙ্গে। পৃথিবীর কান্না, জমিনের মরণচিৎকার আর প্রকৃতির বীভৎস খুন যেন বয়ে যাচ্ছে বুড়িগঙ্গার বিদঘুটে পেটের তল দিয়ে। না হলে সেদিন বিকেলে বুড়িগঙ্গার সাথে সমূহ সংলাপের ফাঁকে সে তার উথাল-পাতাল যে ঝড় আমায় দেখাল, তাতে ভেসে ছিল এসব লেখা। বাতাসেরা আমার কানে কানে বলে যাচ্ছিল এসব কথা। ওই উঁচু আকাশ আর আশ্চর্য মেঘদল অন্যদিকে মুখ করে ছিল। শুধু সূর্যটা হাসছিল। এই পড়ন্ত বিকেলে তার কড়া তাপদাহ যেন গলিয়ে ফেলবে আমায়- হতে পারে তার সেই অভিপ্রায় ছিল। কিন্তু আমাদের জীবন চাহিদার সম্মুখে বোধ হয় টিকতে পারেনি সেও। পশ্চিমের আকাশে ভর করে ভুবনকে লাল করে ধরণীকে কী এক গোপন বার্তা দিয়ে সে ক্রমেই হারিয়ে গেল।
মূলত এভাবেই আমরা দিন দিন জীবনলড়াইয়ে টিকে থাকার নামে নিজেদের অনিশ্চিত ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছি। পৃথিবী তুমি ভালো থেকো।


আরো সংবাদ



premium cement