২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সময় বয়ে যায়

-

সময় বহতা নদীর মতো। সময় বদলায়, জীবন ফুরায়। ক্ষণে ক্ষণে পাল্টে যায় জীবনের সব আলেখ্য। ওই তো কিছু দিন আগের কথা, পিঠে স্কুলব্যাগ ঝুলিয়ে বসে বসে গ্রামের নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো পাড়ি দিয়ে প্রাইমারিতে যাওয়া।
কিন্তু সময়ের ব্যবধানে পাল্টে গেছে সব। সেই নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো আজ আর নেই, নেই গ্রামের সেই আঁকাবাঁকা পথ। এখন লম্বা ব্রিজ হয়েছে। হয়েছে প্রশস্ত রাস্তাঘাট। অনায়াসে মানুষ দিন-রাত যাতায়াত করছে। মুছে গেছে সেসব গ্রামের অমলিন স্মৃতি।
মাঝে মাঝে সেই স্কুল জীবনের কথা মনের দুয়ারে ভেসে ওঠে। কত কত সাথীর সাথে সেই ছোটকালে এক সাথে পড়া হয়েছে! ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে স্কুল মাঠে খেলেছিও কত ধরনের খেলা! আমি ছিলাম একটু নীরব প্রকৃতির। স্কুলে খেলতাম কম, এক কোণে বসে বসে নীরবে খেলা দেখতাম।
আমাদের স্কুলের সামনে একটি বড় কাঁঠালগাছ ছিল। যেটা কিছু দিন আগে কাটা হয়েছে। সেই গাছের ছায়ার নিচে ছাত্রছাত্রীরা খেলার আসর জমাত। মেয়েরা দড়িলাফ, কুতকুত, ইচিংবিচিং, বউ-চি আরো নানা ধরনের খেলা খেলত। ঠিক তার পাশেই ছেলেরা খেলত গোল্লাছুট, লাটিম, মোরগয্দ্ধু ইত্যাদি।
এখনো আমার মনে আছে, একদিন আমি আমার স্বভাবজাত তবিয়ত ভেঙে মোরগ লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করেছিলাম। ‘মোরগয্দ্ধু’ তখনকার সময়ে এক ধরনের খেলা ছিল, যা এক পা জমি থেকে উঠিয়ে হাত দিয়ে ধরে অন্য হাত ঘাড়ে রেখে বাহু দিয়ে পরস্পরে লড়াই করা হতো। এটি তখনকার সময়ে অত্যন্ত মজার একটি খেলা ছিল।
সকাল হলে ছাত্রছাত্রীরা দল বেঁধে স্কুলে আসত। আবার যখন ছুটির টুনটুন আওয়াজ কানে বাজত, তড়িঘড়ি করে সবাই বইখাতা গুছিয়ে রওনা হতো বাড়ির দিকে।
আমি পাশের বাড়ির সেলিম ও রুমি তিনজন একসাথে স্কুলে যেতাম। আবার ছুটি হলে এই তিনজনেই ফিরতাম। পথে কত ধরনের যে খোশগল্প হতো তার কোনো ইয়ত্তা নেই। কোনো দিন যদি ছুটির সময় ঝুমবৃষ্টিও নামত, তবুও কালবিলম্ব করতাম না। বই-খাতাগুলো গায়ের শাট খুলে পেঁচিয়ে ভিজে নুডোবুডো হয়ে বাড়ি ফিরতাম। একেবারে ভিজে চুপচুপে হয়ে যেত আমাদের শরীর।
টেবিলে বই-খাতাগুলো রেখেই এক দৌড়ে নেমে পড়তাম খেলায়। ব্যস্তÍ হয়ে পড়তাম আমরা। কখনো পুতুল কখনো খেইলপাতারি আবার কখনো বা কানামাছি খেলায়।
ওই দিনের রুমি আর সেলিম আজ অনেক বড় হয়েছে। মাঝখান থেকে চলে এসেছি আমি মাদরাসার পবিত্র চাতালে। এখন আমার দিবারাত্রি কাটে কুরআন অধ্যয়নে। সেলিম পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে সংসারের হাল ধরেছে। আর রুমির আগামীকাল বিয়ে। এই তো জীবন এবং জীবনের বৈচিত্র্যময়তা। কখন যেন ফুরিয়ে যায় জীবনের বাতি, নেমে আসে অমানিশার কালো আঁধার।
রুমি, সুখময় হোক তোমার যুগল জীবন। ভালোবাসা আর পরম মমতায় ভরে উঠুক তোমাদের নবজীবন। ভালোবাসার সামনে বিলীন হয়ে যাক যত রাগ, অভিমান, খুনসুটি আর আগত হাজারো অপ্রীতিকর, অপ্রত্যাশিত, অসন্তোষজনক ঘটনা। জয় হোক ভালোবাসার। সুন্দর ও গোছালো হোক তোমাদের সাংসারিক জীবন।


আরো সংবাদ



premium cement
লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী যুবক নিহত এখনো শেষ হয়নি বিতর্কিত আউটের রেশ, ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ মুশফিকের ‘ফ্রি ভিসার গল্প’ আর শূন্য হাতে ফেরা লাখো শ্রমিক নোয়াখালীতে প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায় দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের আশুলিয়ায় বাঁশবাগান থেকে নারী পোশাক শ্রমিকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার মিয়ানমারের কর্মকর্তারা ফেরত গেলেন, কিন্তু রোহিঙ্গা সঙ্কট কি আরো জটিল হচ্ছে দিনাজপুরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষ, চালক-হেলপার নিহত মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ সখীপুরে বৃষ্টির জন্য অঝোরে কাঁদলেন মুসল্লিরা দক্ষিণ ভারতে কেন কাজ করেনি বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি

সকল