২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আহা স্বপ্ন

-

আনমনে বসে আছে রূপা। হঠাৎ ফোন বেজে উঠল। মিলির ফোন। ফোন ধরতেই মিলি বকবক শুরু করল, ‘কিছুই জানাইলি না। বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে অথচ আমাদেরকে বললি না। এত নিষ্ঠুর হয়ে গেলি? আমি তোর পর হয়ে গেলাম?’
মিলি একের পর এক কথা বলেই যাচ্ছে। মিলির স্বভাবটাই এমন। রূপার খুব ঘনিষ্ঠ বান্ধবী মিলি। হঠাৎ করে বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ায় কাউকেই কিছু বলা হয়নি। গতকাল ছেলে পক্ষ দেখতে আসে। দেখতে এসেই যে পছন্দ হয়ে যাবে আবার বিয়ের দিন তারিখ ঠিক হয়ে যাবে তা রূপার জানা ছিল না। অনেক কষ্টে মিলিকে কোনো মতে বোঝানো গেল।
‘দুলাভাই কী করে?’ মিলি জানতে চায়।
রূপা হাসতে হাসতে বলে,
‘মাছের আড়তদার।’
‘কী যা বলছিস?’
‘কেন? তুই না বলতি আমাকে মাছের আড়তদার দেখে বিয়ে দিবি?’
‘আরে যা, ওটাতো মজা করে বলতাম। তুই মাছ খুব পছন্দ করতি তাই বলতাম। দুষ্টুমি ছাড়, দুলাভাই কী করে?’
‘ব্যাংকে চাকরি করে।’
‘এখন তো আমাদেরকে ভুলে যাবি। ভালো জামাই পেয়ে গেছোস।’
‘তোরে মরলেও ভুলুম না। শোন, শুক্রবারে দাওয়াত দিতে বের হবো। তুই আমার সাথে থাকবি।’
‘ওকে ম্যাডাম।’
রূপা মনে মনে খুব খুশি। ছেলেটা দেখতে খুব সুন্দর। কথাবার্তাও খুব ভালো লেগেছে। দেখতে একদম রাজপুত্রের মতো। হয়তো তার স্বপ্নের রাজপুত্র। রূপা নিজে নিজে হাসে। কখনো লুকিয়ে কখনো বা আনমনে হাসে। ভাবীরা তার হাসি দেখে মজাও করে। লজ্জায় সে লুটোপুটি খায়।
মিলি চলে এসেছে। পরিচিত বান্ধবী ও আত্মীয়স্বজনদের দাওয়াত দিতে বের হবে। রিকশায় বসে দুই বান্ধবীর খুনসুটি চলছে। হঠাৎ একটা সিএনজি এসে রিকশায় ধাক্কা দেয়। রিকশা রাস্তার ওপরে উল্টে যায়। রূপা কয়েক হাত দূরে ছিটকে পড়ে যায়। তার ওপর পড়ে মিলি। মিলি একটু ব্যথা পায়। সে উঠে দাঁড়ায়। রূপা আর উঠে দাঁড়ায় না। তার কপাল বেয়ে ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরুচ্ছে। মিলি রূপা রূপা বলে চিৎকার করতে লাগল। তার চিৎকারে হাহাকার করে আকাশ বাতাস। হাসপাতালে নেয়া হলো রূপাকে দীর্ঘ সময় পর সেন্স ফিরল তার। প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছে কোমরে, হাতে। বেদনায় কাতর হয়ে পড়ে রইল হাসপাতালের বেডে। বুকে তার ঝড়Ñ কী হবে তার পরিণতি! আহা স্বপ্ন! আহা জীবন!

 


আরো সংবাদ



premium cement