২২ মে ২০২৪, ০৮ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৩ জিলকদ ১৪৪৫
`


হারিয়ে যাচ্ছে সেই কদমফুল

-

সারা দিন রিমঝিম বৃষ্টি। আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা। গুড়ুম গুড়ুম মেঘের বোল। ঘর হতে বের হতে হয় বৃষ্টিকে সঙ্গী করে। ছোট্টবেলায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে রান্নাঘর থেকে কাচারি ঘর আবার কাচারি ঘর থেকে শোবার ঘরে যাওয়ার সেই স্মৃতিগুলো এবেলা খুব মনে পড়ে। আমরা বাঙালি জাতি বড্ড আরামপ্রিয়। গ্রামবাংলার প্রতিটি ঘরে এই বৃষ্টি দিনে নানারকম খাবারের ধুম পড়ে। সবচেয়ে বেশি খাওয়া হয় ভাজাপোড়া। কাঁঠালের আঁটি, বুট, গম, তিল, চাল আরো কত রকমের ভাজাপোড়া। এছাড়া পিঠে, নাড়ু, পায়েশ তো আছেই। গাঁয়ের বধূরা খুব তৃপ্তিসহকারে এসবের আয়োজন করে থাকেন। আম আঁটির ভেঁপু বাজানো, লুডু, তাস, যদু মধু, গানের কলি, পাঁচগুটি আরো কত শত খেলার আসর বসে ঘরের মেঝেতে। আবার কেউ কেউ কাঁথা মুড়ি দিয়ে টিনের চালের শব্দ শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ে। অন্য দিকে বুড়ো-বুড়িরা নাতি-পুতিদের নিয়ে পুরনো দিনের গল্পের আসর জমায়। এই টিপটিপ বৃষ্টি একসময় রূপ নেয় বর্ষায়। কদম ফুলের স্নিগ্ধ ঘ্রাণে মুগ্ধতার পরশ বুলিয়ে দেয়। দখিনা বাতাসে কদমগাছের সবুজ কচি পাতার আড়ালে ফুটে থাকা হাজারো কদমফুলের সুগন্ধ প্রাণটা জুড়িয়ে দেয়। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা কদমফুল ছিঁড়ে খেলা করে। এ ফুলের পরাগ খুলে আঁকে প্রিয়জনের নাম বা নামের প্রথম অর। কদমফুলের পাপড়ি খুলে পল্লীর ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা মার্বেল খেলে। আবার অনেকে এই বল দিয়ে লাটিম ঘোরায়।
এই কদমফুলই যেন নিয়ে আসে বর্ষা। প্রকৃতি সাজে বিচিত্র সাজে। মনের আকাশটাও মেঘমাধুর্যে সিক্ত হয়ে ওঠে। অপরূপ সুন্দরের অধিকারী এই সাদা হলদে মিশ্রিত কদমফুল। কদমফুলের সারি সারি গাছ মানুষের হৃদয়কে নাড়া দেয়। সেই কদমগাছ আজ হারিয়ে গেছে। আষাঢ়ের বৃষ্টিধোয়া বাতাসে কদম ফুলের সুবাস বিলায় না। আজ গাঁয়ের কাঁচা-ধুলা পথে হাঁটলে প্রকৃতির সাজ তেমন চোখে পড়ে না। বৃষ্টির টিপটিপ ফোঁটা প্রিয়জন হারানোর কথা মনে করিয়ে দেয় না। আজ পল্লী গাঁয়ে কদমগাছ আগের মতো দৃষ্টিতে পড়ে না। প্রকৃতির ভাঁজ খুলে নরম গন্ধে দুলে না সবুজ পাতার ফাঁকে সুবাসিত কদমফুল। জৈষ্ঠ্যের শেষে আষাঢ়ের শুরুতেই তো কদমফুল ফুটে। কদমফুলের ম ম ঘ্রাণে মোহিত করে গাঁয়ের আঁকাবাঁকা পথঘাট ও সহজ-সরল মানুষ। বর্ষার অনুভূতি ও অপরূপ সৌন্দর্যের স্রষ্টা এই কদমফুল। বাড়ির আঙিনায়, রাস্তায় দুপাশে ও পুকুরপাড়ে কদমগাছ ছিল চোখে পড়ার মতো। আগে আষাঢ়ের কদমগাছ ফুলে ফুলে ভরে থাকত। অনেকেই কদমফুল ছিঁড়ে প্রিয়জনকে উপহার দিত। বাড়ির আঙিনায় এখন ফল ও ফুলের গাছ লাগানো হয়। তাই তো আজ বৃষ্টি আছে বর্ষাও আছে শুধু হারিয়ে গেছে সেই কদমফুল।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

 


আরো সংবাদ



premium cement
রাইসির মৃত্যুতে গাজা নিয়ে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র গোপন আলোচনা স্থগিত! হায়দরাবাদকে অপেক্ষায় রেখে ফাইনালে কলকাতা দৌলতখানে মনজুরুল আলম, বোরহানউদ্দিনে জাফর উল্লাহ চেয়ারম্যান নির্বাচিত কুমারখালীতে মান্নান খান, রাসেল, মৌসুমী বিজয়ী আলমডাঙ্গায় মঞ্জিলুর রহমান সদরে নঈম জোয়ার্দ্দার জয়ী ভোলায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন মোহাম্মদ ইউনুছ ঝালকাঠি সদরে খান আরিফ, নলছিটিতে সেলিম খান জয়ী দেওয়ানগঞ্জে ভাইস চেয়ারম্যান হলেন তৃতীয় লিঙ্গের মুন্নি আক্তার, চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ রূপগঞ্জে হাবিব, আড়াইহাজারে স্বপন ও সোনারগাঁয়ে কালাম চেয়ারম্যান নির্বাচিত বাংলাদেশকে লজ্জায় ডুবাল যুক্তরাষ্ট্র চাপের মুখে বাংলাদেশ

সকল