১৭ মে ২০২৪, ০৩ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫
`


সড়কের অঘোষিত যুদ্ধে আর কত বলি

-

কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী দিয়া ও করিম। গত ২৯ জুলাই রোববার বরাবরের মতো ক্লাস শেষে বাসায় ফেরার উদ্দেশে সহপাঠীসহ বাসের জন্য রাস্তার পাশে অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু ড্রাইভারের বেপরোয়া মনোভাব ও বিকৃত মস্তিষ্কের কারণে নিমিষেই বলি হলো তাদের দু’টি তাজা প্রাণ। এটি রুদ্ধ করে দিলো দু’টি তারুণ্যেভরা সম্ভাবনাময় যৌবনের।
সদা হাসিখুশি, প্রাণোচ্ছল বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ছাত্র আজাদ হোসেন। বাবা-মায়ের একমাত্র অবলম্বন হওয়ায় পরিবারের হাল ধরতে পার্ট টাইমজবসহ অক্লান্ত পরিশ্রম করতেন। গত ২ মে সড়কপথের অঘোষিত যুদ্ধে অকালেই জীবনের ইতি টানতে হয় তাকে।
তিতুমীর কলেজ ছাত্র রাজীব। মা-বাবাহীন ছেলেটি খালার আশ্রয়ে আশ্রিত। ছোট দুই ভাইবোনের ভরণপোষণ মেটাতে পড়াশোনার পাশাপাশি দিন-রাত এক করে জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। সড়কের করালগ্রাস ইতোমধ্যে তার পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু গত কিছু দিন আগে দুই বাসের চাপায় বীভৎসভাবে হাত হারিয়ে অবশেষে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে হয়।
দিয়া, করিম, আজাদ কিংবা রাজীব কয়েকটি খণ্ড চিত্রমাত্র। প্রতিদিন খবরের পাতায়, টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রাখলেই এমন অসংখ্য আজাদ, রাজীবের নির্মম মৃত্যুর সাক্ষী হওয়া যায়।
সড়ক পথের এমন মৃত্যুর মিছিল দিন দিন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। প্রতিদিনই এমন অপ্রত্যাশিত মৃত্যুর কবলে অনেক মা হচ্ছেন সন্তানহারা, স্ত্রী হচ্ছেন স্বামীহারা, সন্তান হচ্ছেন পিতাহারা। আবার অনেকেই বরণ করে নিচ্ছেন পঙ্গুত্ব। এতে করে অক্ষম হওয়ার মাধ্যমে হয়ে উঠছেন পরিবার, সমাজ ও দেশের বোঝা। সড়কে এমন দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর মিছিল থামছে না কেন?
সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে দেখলাম, গত পাঁচ মাসে সড়কে ঝরেছে এক হাজার ৯৯৫টি প্রাণ। এতে করে বিশ্বে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৩তম এবং প্রাণহানিতে এশিয়ায় সপ্তম। বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতি বছর গড়ে ১২ হাজার প্রাণনাশ ও ৩৫ হাজার মানুষ মারাত্মকভাবে আহত হচ্ছে।
বুয়েটের আরেক পরিসংখ্যান মতে, সড়কে দুর্ঘটনার ৯০ শতাংশই হয়ে থাকে চালকের বেপরোয়া গতি ও মনোভাবের কারণে। চালকদের বেপরোয়া মনোভাব, অদক্ষ ও অপ্রশিক্ষিত চালক, বিরামহীনভাবে দীর্ঘ সময় ধরে গাড়ি চালানো, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, বেহাল রাস্তাঘাট, অদক্ষদের লাইসেন্স প্রদান, ট্রাফিক পুলিশদের উদাসীনতা ও জনসচেতনতার অভাবে এমন মৃত্যুর মিছিল যেন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় রূপ নিচ্ছে।
সবশেষে সবার সমন্বিত কার্যকরী উদ্যোগ ও সচেতন মানসিকতা অনেকাংশেই পারে এমন মৃত্যুর দীর্ঘ লাইনকে ছোট করতে। আমাদের মনে রাখা উচিত, একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না। প্রত্যেকের নিরাপদ যাত্রার দিকে অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে অনেকগুলো প্রিয় মুখ। নিরাপদ হোক সড়কে পথচলা। সড়কে এমন অপ্রত্যাশিত মৃত্যুর মিছিল থেকে মুক্তি পাক বাংলাদেশ। হ
লেখক : শিক্ষার্থী, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়


আরো সংবাদ



premium cement
অন্যায়ভাবে আমাদের উচ্ছেদের চেষ্টা চলছে : মান্ডা-জিরানী খালপাড়বাসী র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকছে : যুক্তরাষ্ট্র কুষ্টিয়ায় পদ্মা নদীতে নিখোঁজ কিশোরের লাশ উদ্ধার বাংলাদেশকে একটি সেকুলার রাষ্ট্রে পরিণত করার পাঁয়তারা চলছে : হামিদুর রহমান আযাদ ইউক্রেনের শতাধিক ড্রোন প্রতিরোধের দাবি রাশিয়ার বাস্তবতা বিবেচনা করে পরিকল্পনা প্রণয়নের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর জীবননগরে পাখিভ্যানের ধাক্কায় বাইসাইকেলচালক নিহত আড়াইহাজারে তরুণীকে সঙ্ঘবদ্ধ ধর্ষণ সাতক্ষীরায় ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে ভ্যানচালক নিহত মোরেলগঞ্জে আগুনে পুড়ে ১২ দোকান ভস্মীভূত টেক্সাসে প্রবল বর্ষণে ৪ জনের মৃত্যু

সকল