২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
প্রবাসী ও গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তিরাও আসামি

সিলেটে জুবায়েরসহ জামায়াতের ৭৭ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ‘গায়েবী’ মামলা

-

সিলেট মহানগরীর কতোয়ালী থানায় জামায়াত শিবিরের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন একটি ‘গায়েবী মামলা’ দায়ের করা হয়েছে। মামলায় মহানগর জামায়াতের আমীর অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, নায়েবে আমীর হাফিজ আব্দুল হাই হারুন, সেক্রেটারি ফখরুল ইসলামসহ ৭৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও কাউন্সিরর প্রার্থিসহ বিদেশে অবস্থানরতরাও আছেন আসামির তালিকায়।

রোববার রাতে কতোয়ালী থানার এস আই শাহীন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং-৫৩ (২৫/১১/১৮)। কথিত এই মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে, গত রোববার রাতে নাকি নগরীর আলীয়া মাদরাসা ছাত্রাবাসের পাশে অভিযুক্তরা জড়ো হয়ে নাশকতার পরিকল্পনা করেন, যা দেশবিরোধী।

জানা গেছে, সিলেট মহানগর জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি সিরাজুল ইসলাম শাহীন, মহানগর ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি আনোয়ারুল ওয়াদুদ টিপু, ছদরুল আমিন, আব্দুস সামাদ রনি দীর্ঘদিন থেকে প্রবাসে অবস্থান করছেন। ওই মামলায় তাদেরও আসামি করা হয়েছে। এছাড়া, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর আব্দুল মুহিত জাবেদ, দীর্ঘদিন থেকে গুরুতর অসুস্থ সাবেক কাউন্সিলর আজিজুল হক মানিক, সাবেক কাউন্সিলর রাজিক মিয়াসহ বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধিকেও আসামি করা হয়েছে।

এদিকে, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগর আমীর অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, নায়েবে আমীর হাফিজ আব্দুল হাই হারুন ও মো: ফখরুল ইসলামসহ জামায়াত-শিবিরের ৭৭ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশ কর্তৃক গায়েবী মামলা দায়ের ও গ্রেফতারের নামে পুলিশী হয়রানীর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সিলেট মহানগর, জেলা উত্তর ও জেলা দক্ষিণ জামায়াত নেতৃবৃন্দ। অবিলম্বে গায়েবী মামলা প্রত্যাহার করে গ্রেফতারের নামে পুলিশী অভিযান বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা। একই সাথে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লেবেল প্লেইং ফিল্ড তৈরীর জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতিও জোর দাবি জানানো হয়।

নেতৃবৃন্দ বলেন, বিগত সিলেট সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলার পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী এক ব্যক্তিকে গত রোববার গভীর রাতে গ্রেফতার করা হয়। যার সাথে জামায়াতের সক্রিয় কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। ওই ব্যক্তির গ্রেফতারকে উপলক্ষ করে শতভাগ মিথ্যা একটি কল্পকাহিনী সাজিয়ে মহানগর জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দেরর বিরুদ্ধে গায়েবী মামলা দায়ের করা হয়। যে মামলার এজাহারের সাথে বাস্তবতার ন্যূনতম কোনো সম্পর্ক নেই। মূলত আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে একতরফা করার হীন উদ্দেশ্যে সরকার থেকে আদিষ্ট হয়ে কতিপয় অতিউৎসাহী পুলিশ কর্মকর্তা এ ধরনের মামলা দায়ের করছেন। যা জাতীয় নির্বাচনে লেবেল প্লেইং ফিল্ড তৈরীর জন্য প্রধান বাধা।

গতকাল সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য সিলেট মহানগর আমীর অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও সিলেট জেলা দক্ষিণের আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান এবং কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও সিলেট জেলা উত্তরের আমীর হাফিজ আনোয়ার হোসাইন খান উল্লিখিত মন্তব্য করেন।

বিবৃতিতে তারা আরো বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ময়দান থেকে বিরোধী প্রতিপক্ষকে সরিয়ে রাখতে সরকারের নির্দেশনায় বিরোধী মতের নেতা-কর্মীদের উপর হামলা-মামলা, গণগ্রেফতারের মহোৎসব চলছে। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক গ্রেফতার হয়রানী না করার নির্দেশনা সত্ত্বেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেফতার অভিযান ও গায়েবী মামলা দায়ের অব্যাহত রেখেছে। সিলেটের বিভিন্ন উপজেলা ও মহানগরীতে গ্রেফতারের নামে পুলিশী অভিযান চালানো হচ্ছে। নেতা-কর্মীরা বাসা-বাড়িতে থাকতে পারছে না। সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থীদের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ করার পরও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এর ফলে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে জনমনে ভীতির সঞ্চার হচ্ছে।

বিবৃতিতে অবিলম্বে গায়েবী মামলা প্রত্যাহার, গ্রেফতারের নামে পুলিশী হয়রানী বন্ধ এবং ষড়যন্ত্রমুলক মামলায় কারান্তরীণ সিলেট মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা সোহেল আহমদসহ সকল রাজবন্দীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানানো হয়।


আরো সংবাদ



premium cement