পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চীফ অফ আর্মি স্টাফ এবং সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া বলেছেন, উত্তেজনার পালে হাওয়া দিচ্ছে ভারত, যার কারণে পরবর্তীতে এই ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ আকর্ষিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কমান্ডারদের সাথে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে এসব কথা বলেন দেশটির সেনাপ্রধান।
অনুষ্ঠানে জেনারেল কামার জাভিদ বাজওয়া বলেন, ভারত অধিকৃত কাশ্মিরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অব্যাহত বর্বরতা ও নৃশংসতার কারণে সেখানে এই উত্তেজনা ও অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার স্বার্থেই ভারতকে বর্বরতা ও নৃশংসতা বন্ধ করতে হবে।
পাকিস্তান আইএসপিআর’র বিবৃতি অনুযায়ী সেনাপ্রধান বাজওয়া আরো বলেন,‘সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য নিরাপত্তাবাহিনী কিভাবে ও কোনে নীতিতে ব্যবহার করা হবে তা কেবল রাষ্ট্রের অধিকার।’
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের সাথে সাম্প্রতিক উত্তেজনার সময় সামরিকবাহিনীর সদস্যদের পারফরম্যান্স ও মনোবলের প্রশংসা করেন পাকিস্তান সেনাপ্রধান। পাশাপাশি প্রয়োজনের সময় সমগ্র জাতির নিকট থেকে সমর্থন পাওয়ায় মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। সীমান্তে যেকোনো হুমকি মোকাবেলায় সদা প্রস্তুত থাকতেও সেনাসদস্যদের প্রতি নির্দেশ দেন তিনি।
জেনারেল বাজওয়া বলেন,‘পাকিস্তান সমস্ত প্রতিকূলতাকে পিছনে ফেলে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের পথে হাঁটছে। কেউ কোনো হুমকিতেই আমাদেরকে এই পথ থেকে বিচ্যুত করতে পারবে না।’ ন্যাশনাল অ্যাকশান প্লান (এনএপি) বা জাতীয় কর্ম পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন করতেও সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
উল্লেখ্য, সন্ত্রাস ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে দমনাভিযান জোরদার করতে ২০১৪ সালের শেষের দিকে জাতীয় কর্ম পরিকল্পনা (এনএপি) প্রণয়ন করে পাকিস্তান সরকার। সূত্র : দ্য নিউজ।
আরো পড়ুন : হামলার দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে জানে পাকিস্তান : ভারতীয় পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী
দ্য নিউজ, (০৬ মার্চ ২০১৯)
ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, হামলা বা আক্রমণের শিকার হলে পাল্টা হামলায় দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে জানে পাকিস্তান। পাকিস্তানের প্রতি ভারতের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসী মনোভাবের কারণে আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের পুলওয়ামায় ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনীর ওপর আত্মঘাতী বোমা হামলার পর হামলা-পাল্টা হামলাসহ সৃষ্ট উত্তেজনার বিষয়ে সোমবার তিনি এসব কথা বলেন।
ভারতীয় পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং আরো বলেন, (ভারতের) যেকোনো ধরনের হামলা বা আক্রমণ ব্যর্থ করে দিতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে কোনো দ্বিধা করবে না পাকিস্তান।
তিনি বলেন,‘ভারত ও পাকিস্তান-উভয় দেশেরই পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। তাই ব্যপকভাবে ধ্বংসাত্মক এই অস্ত্র ব্যবহার করার মধ্যে কোনো দেশেরই স্বার্থ থাকতে পারে না। এটা ঠিক যে, পাকিস্তান বরাবরই বলে এসেছে যে, তারা একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র এবং তাদের পরমাণু অস্ত্র নিরাপদ আছে।’
উল্লেখ্য, গত ২৭ ফেব্রুয়ারী পাকিস্তানের আকাশসীমায় প্রবেশ করার পর পাকিস্তানী বিমানবাহিনীর হামলায় দুটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় বিধ্বস্ত ভারতীয় যুদ্ধবিমানের দুইজন পাইলট নিহত হয় এবং উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান নামে এক পাইলটকে জীবিত আটক করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। পরে ভারতকে শান্তির বার্তা হিসেবে গত শুক্রবার আটককৃত ভারতীয় পাইলটকে মুক্তি দেয় পাকিস্তান সরকার। বিশ্বনেতারা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের এই সিদ্ধান্তের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনিস্টিটিউট (এসআইপিআরআই) এর তথ্য অনুযায়ী, পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা ও শক্তির দিক দিয়ে পাকিস্তান ভারতের থেকে অনেক অনেক এগিয়ে রয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা